মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

কঠোর বিধিনিষেধ অনেকটাই শিথিল

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ জুলাই, ২০২১, ৯:৪৪ এএম

লকডাউনের ষষ্ঠ দিনে রাজধানীতে বেড়েছে ব্যক্তিগত যান চলাচল। বুধবার ঢাকাসহ সারা দেশের সড়ক-মহাসড়ক এবং অলিগলিতে মানুষের অবাধ চলাচল ছিল। ব্যক্তিগত গাড়ি, অফিসের গাড়ি, মোটরবাইক, রিকশা ও ভ্যানগাড়িতে চড়ে মানুষ চলাচল করেছে। অলিগলিতে দোকানপাট খোলা দেখা গেছে। এসব দোকানপাটে ক্রেতাদের ভিড়ও ছিল।

চেকপোস্টগুলোতেও তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। গাড়ির কাগজপত্র ও উপযুক্ত কারণ দেখাতে ব্যর্থ হলে দেয়া হচ্ছে মামলা। ব্যাংকসহ জরুরি সেবাখাতে নিয়োজিত অনেক প্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় চাকরি বাঁচাতে কর্মস্থলে ছুটছেন অনেকেই। কিন্তু, অনেক প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব গাড়ির ব্যবস্থা না থাকায় তারা পড়েছেন ভোগান্তিতে। হেঁটে কিংবা রিকশায় অফিসে যাচ্ছেন তারা।

সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে মানুষের অবাধ চলাচল দেখা গেছে। কেরানীগঞ্জের কলাতিয়া, আটিবাজার, ঘাটারচর, ওয়াশপুর এলাকার মানুষ ঢাকা প্রবেশ করে বছিলা ব্রিজ হয়ে। ব্রিজের বছিলা অংশে একটি চেকপোস্ট রয়েছে। সেখানে পুলিশের কঠোর নজরদারি ছিল। পুলিশের আগ্রহ ছিল মোটরসাইকেল এবং গাড়ির দিকে। মোটরসাইকেলে দু’জন যাত্রী দেখলেই আটকে দেওয়ার পাশাপাশি মামলা দেওয়া হয়। একই চিত্র ছিল প্রাইভেট গাড়ির ক্ষেত্রে।
যানবহন বেশি থাকায় গাবতলী-বাবুবাজার বেড়িবাঁধ সড়কের মোহাম্মদপুর চৌরাস্তায় ট্রাফিক সিগনালের প্রয়োজন হয়। এই সড়কে রিকশা ও ভ্যানগাড়িতে করে অনেক মানুষ রায়ের বাজার, হাজারীবাগ, কামরাঙ্গীরচর এবং লালবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় চলাচল করেছে। পুরান ঢাকার আজিমপুর, বকশিবাজার, লালবাগ চৌরাস্তা, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা, ফুলবাড়ীয়াসহ আশপাশের সড়কে গাড়ি, রিকশা, মোটরবাইক নিয়ে মানুষ চলাচল করেছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) জরুরি সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সেখানে ছোটখাটো নানা প্রয়োজনে মানুষ আসা-যাওয়া করছে। একই চিত্র ছিল রাজধানীর উত্তরা, মিরপুর, পুরান ঢাকা, বাড্ডা, গুলশান, বনানী, বারিধারা, কুড়িল, প্রগতি সরণি, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কাওরান বাজার, মতিঝিল, গুলিস্তানসহ অন্যান্য এলাকায়।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, যাত্রাবাড়ী মোড়, যাত্রাবাড়ী ও কদমতলী থানা এলাকার অলিগলি, পাড়া-মহল্লায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়াই মানুষ রিকশা, প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন যানবাহনে চলাচল করছে। যাত্রাবাড়ী মোড়, দোলাইরপাড়, শ্যামপুর, বড়ইতলা, বিক্রমপুর প্লাজা, জনতাবাগ, দনিয়া, বর্ণমালা স্কুল রোডসহ বিভিন্ন স্থানে দোকানপাট খোলা দেখা গেছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী ও সাইনবোর্ড থেকে পিক-আপ, অ্যাম্বুলেন্স ও প্রাইভেটকারে দূরপাল্লার যাত্রীদের ডেকে ডেকে উঠানো হয়। পুলিশের চেকপোস্টগুলোকে ফাঁকি দিয়েই যানগুলো গন্তব্যে চলে যায়। তবে চালকদের বক্তব্য পুলিশকে ম্যানেজ করেই তারা সড়কে যাত্রীদের আনা নেওয়া করছেন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শনিরআখড়া, রায়েরবাগ, মাতুয়াইল সাইনবোর্ড, ডেমরা ও যাত্রাবাড়ী জোনে ট্রাফিক পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি চালায়। এদিন সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ছেড়ে যেতে দেখা যায়নি।

পুরান ঢাকার কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রধান সড়কগুলোতে ব্যক্তিগত গাড়ি ও মানুষের চলাচল বেড়েছে। নবাবপুর, মিটফোর্ড, নয়াবাজার, সদরঘাট, বংশালসহ বিভিন্ন এলাকায় দোকানের সাটার নামিয়ে বেচাকেনা করতে দেখা গেছে। অলিগলিতে জমজমাট আড্ডা ও খেলাধুলা করছে বাসিন্দারা। রিকশা চলছে দেদার। অনেককেই স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। ঘর থেকে বের হওয়ার কারণ হিসাবে অনেকে ঠুনকো অজুহাত উপস্থাপন করছেন।

মিরপুর ১, ২, ১০ এবং কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল, ৬০ ফুট, বড়বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অবাধে ঘুরছে মানুষ। অনেকের মুখে মাস্ক নেই। জটলা বেঁধে গল্পগুজব করে সময় পার করছেন তারা। মিরপুর ৬০ ফুট সড়কটির উভয় পাশের বেশ কয়েকটি দোকানপাট সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত খোলা থাকে। এর মধ্যে মোটরসাইকেল ওয়াশ গ্যারেজ, ফাস্টফুড, শোরুম ও স্টেশনারির দোকান রয়েছে। গলির মুখে বিভিন্ন বয়সিদের আড্ডা দিতে দেখা গেছে। পুলিশ ধরলে তারা নানা অজুহাত দেখিয়ে ছাড়া পান।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ১ থেকে ৭ জুলাই কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। পরে তা বাড়িয়ে ১৪ জুলাই পর্যন্ত করা হয়। পবিত্র ঈদুল আজহার কারণে ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। ওই সময়ই বলে দেওয়া হয় ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত কঠোর লকডাউন পালন করা হবে। কঠোর লকডাইনের পঞ্চম দিন ছিল মঙ্গলবার। ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত বিধিনিষেধ বহাল থাকবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (9)
Sd Freedom King ২৮ জুলাই, ২০২১, ১২:১৬ পিএম says : 0
যেহেতু বিধিনিষেধ মানছে না,,,সেহেতু সব খুলে দিয়ায় ভাল,,,ঈদের আগে বিধিনিষেধ শিথিল ছিল মৃত্য ও কমে নি আগের সেই লেবেল এই ছিল,,লকডাউনের সময় সয় বাড়ে ও না কমেও না,,,সংক্রমণ আগের মতই ছিল ঈদের আগের মতো ,,,এখনো তাই,,,তাই সব কিছু সাভাবিক করে দিলে যারা দিন আনে দিন খাই তারা বেচে জাই,,
Total Reply(0)
Rajiur Rahman ২৮ জুলাই, ২০২১, ১২:১৬ পিএম says : 0
কিসের লকডাউন যেখানে কিস্তি আদায়ের জন্য মাঠকর্মীরা মাঠে লুটে পড়ছে। সরকার বলছে ঘরে থাকো ngo ওয়ালারা বলছে কিস্তি দাও।
Total Reply(0)
MD Masud Rana ২৮ জুলাই, ২০২১, ১২:১৭ পিএম says : 0
আগে মানুষ কে খাওয়া দিন,তার পরে বিদ্যু বিল, নেয়া বন্ধ করুন দেখবেন মানুষ সব কিছু মানবে, সুনবে, আমরা এই সব মানিনা
Total Reply(0)
Nishi Nishi ২৮ জুলাই, ২০২১, ১২:১৮ পিএম says : 0
মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর নিকট আকুল আবেদন সৌদি এম্বাসি খুলে দেওয়া হউক তা না হলে হাজারো প্রবাসির স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে।
Total Reply(0)
Shobuj Mahmud ২৮ জুলাই, ২০২১, ১২:২১ পিএম says : 0
ঢাকা শহর পার্সোনাল প্রাইভেটকার হাজার হাজার লাখ লাখ প্রাইভেটকার চলছে তাদের কোনো মামলা নাই তাদেরকে জিজ্ঞাসা করে না তাদের কোনো আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও ধরো না এটা কিসের লকডাউন
Total Reply(0)
MD faizan ২৮ জুলাই, ২০২১, ৩:১০ পিএম says : 0
Ei lockdown er kono manay Hoy na,Amra ei lockdown Mani na,ghora khabar na thakla public lockdown uraya dbay, government er ata buja uchit
Total Reply(0)
Monirul islam ২৮ জুলাই, ২০২১, ৫:০৭ পিএম says : 0
আমরা যদি আমাদের ভাল না বুঝি তাহলে কেউ কিছু করতে পারি বেনা।
Total Reply(0)
motasim billah ২৯ জুলাই, ২০২১, ৮:০০ এএম says : 0
খুব দুঃখ লাগে ???? যে সব গন মাধ্যমেই বলা হয় করুনায় এতো জন আক্রমণ হয়েছে। কিন্তু কোন গন মাধ্যম কি কয়টি পরিবার বিপদে আছে বা না খেয়ে আছে তাকি খবর নিয়েছে?
Total Reply(0)
Mohsin Hassan ২৯ জুলাই, ২০২১, ১:১৭ পিএম says : 0
সর্বপ্রথম vaccine নিশ্চিত করতে হবে সবার জন্য এরপর ১৪৪ ধারা জারি করে কঠোর ভাবে পালন করতে হবে সবাই জাতে খাদ্যের অভাবে না ভুগে তা নিশ্চিত করতে হবে তাহলেই কেবল এই মহামারী থেকে মুক্তি লাভ করতে পারবে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন