বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বিজেপিকে হারাতে সবাইকে এক হতে হবে

সোনিয়া-রাহুলের সঙ্গে বৈঠকের পর বললেন মমতা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ জুলাই, ২০২১, ১২:০১ এএম

বিজেপিকে হারানোর জন্য বিরোধী ঐক্য যে অত্যন্ত প্রয়োজন, তা আবারও জোর দিয়ে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল বুধবার কংগ্রেসের সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি দাবি করলেন, ‘বিজেপিকে হারানোর জন্য সবাইকে এক হতে হবে। আমি একা কেউ নই।’
গতকাল ১০ জনপথে সোনিয়ার সঙ্গে দেখা করেন মমতা। সেখানে ছিলেন রাহুল গান্ধীও। তাদের মধ্যে প্রায় ৪০ মিনিটের বৈঠক হয়। বৈঠকের পর মমতা বলেন, ‘এক কাপ চায়ের জন্য সোনিয়াজি ডেকেছিলেন। রাহুলজিও ছিলেন। সার্বিকভাবে আমরা রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি’। এদিন সকালেই সংসদে বিরোধী দলগুলো একটি জরুরি বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেস হাজির না থাকলেও সোনিয়া-রাহুলের সঙ্গে বৈঠকে পেগাসাস ‘হ্যাক’, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান মমতা। তিনি বলেন, ‘পেগাসাস, করোনাভাইরাস, বিরোধী ঐক্য নিয়ে আলোচনা করেছি। ভালো বৈঠক হয়েছে। ইতিবাচক বৈঠক হয়েছে। আমার আশা যে, ভবিষ্যতে ইতিবাচক ফলাফল মিলবে।’

সম্ভাব্য বিরোধী জোটের ‘মুখ’ কে হবেন, তা নিয়েও উদার অবস্থান নেন মমতা। ১০ জনপথের বাইরে বিরোধী ঐক্যের উপর জোর দিয়ে মমতা বলেন, ‘একা আমি কিচ্ছু নই। বিজেপিকে হারানোর জন্য সবাই একসঙ্গে আসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমি থোড়াই লিডার, আমি তো ক্যাডার, আমি স্ট্রিট ফাইটার।’
সেই মন্তব্যের কিছুক্ষণ আগে সাংবাদিকদের সঙ্গেও আলোচনায় একই সুরে মমতা বলেছিলেন, ‘আমি রাজনৈতিক জ্যোতিষী নই। এটা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে। অন্য কেউ নেতৃত্ব দিলেও আমার কোনও অসুবিধা নেই।’
রাজনৈতিক মহলের দাবি, নিজেকে বিরোধী জোটের ‘মুখ’ হিসেবে দাবি না করে মমতা আসলে বার্তা দিতে চাইলেন যে, যেভাবেই হোক বিজেপিকে হটাতে চান তিনি। সেটাই তার একমাত্র লক্ষ্য। সেজন্য বিরোধী জোটের ‘মুখ’ না হলেও তার কোনও আপত্তি নেই। তবে ২০২১ সালে বিজেপিকে রুখে দেওয়ার পর তাঁকে যে অবহেলা করা যাবে না, তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা।

মোদিকে দেখে হিন্দি, শাহের জন্য গুজরাতি ভালো হয়েছে : মমতা
এমনিতে রাজনৈতিকভাবে নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহের সঙ্গে তার সম্পর্ক আদায়-কাঁচকলায়। সোমবার দিল্লিতে এসেছেন সেই মোদি-শাহ জুটিকেই প্যাঁচে ফেলার জন্য। তারইমধ্যে হালকা মেজাজে তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, মোদিকে দেখে তার হিন্দি বলার ধরন ভালো হয়েছে। শাহকে দেখে গুজরাতিও ভালো বলতে পারছেন।

এদিন সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনার মমতা বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদিকে দেখে হিন্দি ভালো হয়েছে। আর অমিত শাহকে দেখে গুজরাতি ভালো হয়ে গিয়েছে - কেম ছো, কেম ছো (কেমন আছেন)।
বিধানসভা ভোটের আগে বাংলায় সভা করতে গিয়ে মোদি এবং শাহ বাংলায় যে কথা বলতেন, তা নিয়ে হামেশাই কটাক্ষ করতেন মমতা। শুধু রাজনৈতিক সভা নয়, বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিভিন্ন প্রশাসনিক অনুষ্ঠানেও একইভাবে বাংলা বলতেন মোদি। কখনও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার দু’লাইন বাংলায় শোনাতেন, কখনও আবার হিন্দিতে তর্জমা করে মনোমোহন বসুর কবিতা পাঠ করতেন। তাতে ‘ভুল’ উচ্চারণের রেশ ধরে ‘বহিরাগত’ তোপও দাগতেন মমতা।

গত বছর ডিসেম্বরে তেমনভাবেই নাম না করে মোদিকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, তিনি একাধিক ভাষায় কথা বলতে পারেন। কিন্তু সেজন্য তাকে ‘পাবলিসিটি’ করতে হয় না। মমতা বলেছিলেন, ‘বাংলাকে তো টার্গেট করবে। বাংলার ইলেকশন আসছে না। শুনুন, আমি গুজরাতি ভাষায় কথা বলতে পারি। আর আমি গুজরাতি ভাষা লিখে নেব আমার ভাষায়। আমি সেটা পড়ে বক্তৃতা দেব। আমি ভিয়েতনামের ভাষা জানি। হ্যাঁ, আমি যখন ভিয়েতনামে গিয়েছিলাম। তখন আমি ভিয়েতনামের ভাষা শিখেছিলাম। আর রাশিয়ার ভাষা কিছু জানি। কারণ আমি রাশিয়ায় গিয়েছি। আমি শিখেছি একটু। আমি নাগামিজ জানি। কারণ আমি নাগাল্যান্ডে অনেকদিন কাজ করেছি। আমি মণিপুরী ল্যাঙ্গুয়েজ (ভাষা) জানি, অসমিয়া ল্যাঙ্গুয়েজ (ভাষা) জানি, আমি ওড়িয়া ল্যাঙ্গুয়েজ (ভাষা) জানি, আমি পঞ্জাবি ল্যাঙ্গুয়েজ (ভাষা), আমি মারাঠি ল্যাঙ্গুয়েজ (ভাষা) জানি, আমি বাংলা জানি। আমি হিন্দি জানি, আমি উর্দু জানি, আমি গোর্খা জানি, আমি নেপালি জানি, তাই বলে এটা নিয়ে আমি কখনও গর্ব করি না। বরং আমি গর্ব করি, যদি তাঁদের কথা আমি একটু কথা বলতে পারি।’ সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন