গর্ভবতী নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা টিকা দিতে সরকারকে লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হয়েছে। ‘ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন’র পক্ষে ব্যারিস্টার হামায়ুন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার এ নোটিশ দেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালযের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক এবং আইইডিসিআর’র পরিচালককে নোটিশের ‘প্রাপক’ করা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৩৫ লাখ নারী গর্ভবতী হন। অর্থাৎ ৩৫ লাখ গর্ভবতী নারী আরও ৩৫ লাখ মানুষের অস্তিত্ব বহন করে। কিন্তু করোনা মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে হাজার হাজার অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং শিশু মারা যাচ্ছে। সঠিকভাবে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের করোনার টিকা ব্যবস্থা করা গেলে অনেক হতাহত কমিয়ে আনা সম্ভব।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে অন্তঃসত্ত্বাদের করোনা ভ্যাকসিন দেয়া যাবে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গর্ভবতীদের ফাইজার এবং মর্ডানার কোভিড ভ্যাকসিন দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ওইসব দেশের গর্ভবতী নারীরা করোনার ভ্যাকসিন গ্রহণ করছেন। কিন্তু তাদের ক্ষেত্রে তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। গবেষণা অনুযায়ী অন্তঃসত্ত্বা নারীরা করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় অধিক ঝুঁকির মধ্যে থাকে এবং কোনো কারণে আক্রান্ত হলে তাদের এবং শিশুর জীবন বিপদাপন্ন হয়ে পড়ে।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, সরকারের নির্ধারিত করোনা ভ্যাকসিন রেজিস্ট্রেশন সুরক্ষা অ্যাপে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিবন্ধন করার জন্য গর্ভবতী নারীদের জন্য কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। অথচ তাদের চেয়েও কম ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গর্ভবতীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা টিকা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। এই অধিকার গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান স্বীকৃত একটি মৌলিক অধিকার। তাদেরকে অগ্রাধিকার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করা একটি নিপীড়নমূলক, বৈষম্যমূলক এবং তাদের জীবনধারণের মৌলিক অধিকার পরিপন্থি। গর্ভবতী নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়ার জন্য সুরক্ষা অ্যাপে সুযোগ করে দেয়া সরকারের দায়িত্ব। নোটিশ প্রাপ্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গর্ভবতী নারীদের করোনা টিকা প্রদান শুরু করা না হলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হবে মর্মে হুঁশিয়ারি দেয়া হয় রিটে।