শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

তিন শহরে তীব্র লড়াই, হেরাতে জাতিসংঘের দফতরে তালেবান হামলায় নিহত ১

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ আগস্ট, ২০২১, ৪:০১ পিএম

আফগানিস্তানের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে হামলা চালিয়েছে তালেবান। শহরগুলো হলো হেরাত, লস্করগাহ ও কান্দাহার। আফগানিস্তানের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলীয় এই তিন শহর ঘিরে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তালেবানের লড়াই জোরদার হচ্ছে। হেরাত প্রদেশে জাতিসংঘের দফতরে ক্ষেপণাস্ত্র হানায় নিহত হয়েছেন এক নিরাপত্তা কর্মী।

তালেবানের দাবি, এই হামলা তাদের কাজ নয়। হামলার ঘণ্টাকয়েক আগেই হেরাতে ঢুকে পড়েছিল তালেবান। আফগান বাহিনীর সঙ্গে এখনও তাদের প্রবল লড়াই চলছে। খবর, সেখানে ক্রমশ শক্তি হারাচ্ছে আফগান সেনাবাহিনী। হামলার পরে জাতিসংঘের জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে ‘সরকার-বিরোধী শক্তি হেরাতে জাতিসংঘের ‘ইউনাইটেড নেশনস অ্যাসিস্ট্যান্স মিশন ইন আফগানিস্তান’-এর প্রাদেশিক সদর দফতরে হামলা চালিয়েছে। আমরা এই হামলার প্রবল নিন্দা করছি। এক জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা আমরা এখনও পুরোপুরি জানতে পারিনি।’

হামলার নিন্দা করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস-ও। আফগানিস্তানে জাতিসংঘের বিশেষ দূত ডেবোরা লিয়নস ঘটনাটিকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ আখ্যা দিয়ে জানিয়েছেন, কী ভাবে জাতিসংঘের দফতরে ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়ল, তা জানতে তালেবান ও আফগান বাহিনী— উভয় পক্ষের সঙ্গেই কথা বলছেন তারা। তার কথায়, ‘হামলাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

গত কয়েক দিন ধরে ক্রমশ হেরাতের দিকে এগোচ্ছিল তালেবান বাহিনী। শনিবার প্রাদেশিক রাজধানী হেরাত সিটি-র দশ কিলোমিটার দূরে গুজারায় চলে আসে তারা। সেখানে এখনও প্রবল লড়াই চলছে। জাতিসংঘের দফতরে হামলার দায় তো নেয়ইনি তালেবান, উল্টো তাদের দাবি, তালেবানকে লক্ষ্য করে ছোড়া আফগান সেনাবাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্রই গিয়ে পড়েছে সেখানে। হামলার বেশ কয়েক ঘণ্টা পরে বিকালে, তালেবান মুখপাত্র কারি ইউসুফ আহমেদি একটি বিবৃতি জারি করে বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি, আমাদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রে জাতিসংঘের দফতরে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।’

বিবিসি বলছে, হেরাত, লস্করগাহ ও কান্দাহারের অংশবিশেষে প্রবেশ করেছে তালেবান। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর নাগাদ আফগানিস্তান থেকে প্রায় সব বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে ঘোষণা আসার পরই তালেবান দেশটির সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা ও বিভিন্ন এলাকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠায় অভিযান জোরদার করে। ইতিমধ্যে তালেবান বিশেষ করে আফগানিস্তানের গ্রামীণ এলাকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। তারা এখন গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো দখলের চেষ্টা করছে। যে শহরগুলোয় তালেবান যোদ্ধারা প্রবেশ করেছে, সেগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত। দেশটির সরকারি বাহিনী এই শহরগুলোর নিয়ন্ত্রণ কতটা সময় ধরে রাখতে পারবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। এ ছাড়া যুদ্ধের কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোয় মানবিক বিপর্যয় দেখা দেয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিবিসির বিশ্লেষণে বলা হয়, তালেবানের বর্তমান লক্ষ্য আফগান শহরগুলো দখল করা। তারা এখন যেসব শহর দখলের চেষ্টা করছে, তার মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলীয় হেলমান্দ প্রদেশের রাজধানী লস্করগাহের অবস্থা সবচেয়ে নাজুক। লস্করগাহে সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আফগান সেনাদের সঙ্গে তালেবানের লড়াই চলছিল। লড়াইয়ে প্রাণ হারানোর আশঙ্কায় বাড়িঘর ছাড়ছিলেন স্থানীয় অনেক বাসিন্দা। কান্দাহারের এক সাংসদ বলেছেন, তালেবানের হাতে এই শহরের পতনের গুরুতর ঝুঁকি আছে। শহরের হাজারো অধিবাসী ইতিমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। শহরে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর হেরাতেও সংঘর্ষ জোরদার হয়েছে। শহরটির দক্ষিণাংশে তালেবান প্রবেশ করেছে। শহরের অন্তত পাঁচটি স্থানে লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে। সূত্র : ডন, বিবিসি।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Md Mizanur Rahman ১ আগস্ট, ২০২১, ৬:১০ পিএম says : 0
আল্লাহ সাহায্য করবেন সত্যের জয় হবে ইনশা আল্লাহ
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন