বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার নৃশংস হত্যাকান্ডের আগেই জিয়াউর রহমানকে চিনতে এবং তার উচ্চাভিলাসী মনোভাব সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন। আর এ কারণেই, জেনারেল সফিউল্লাহকে দ্বিতীয় দফায় সেনা বাহিনীর প্রধান করায় ক্ষিপ্ত হয়ে জিয়া পদত্যাগ করতে চাইলে বঙ্গবন্ধু তৎকালীন প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী নুরুল ইসলাম চৌধুরীকে তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করতে বলেছিলেন।
প্রয়াত নুরুল ইসলাম চৌধুরী ১৯৯৪ সালের ২৬ মার্চ দৈনিক আজাদী পত্রিকার ‘নৃশংস পনেরই আগস্টের পূর্বাপর’ শীর্ষক এক নিবন্ধে এই তথ্য প্রকাশ করেন। নুরুল ইসলাম চৌধুরী লেখেন ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের নৃশংস ঘটনার কয়েকদিন আগে জেনারেল সফিউল্লাহকে দ্বিতীয় দফায় সেনা বাহিনীর প্রধান করায় ক্ষিপ্ত হয়ে জিয়াউর রহমান তার সঙ্গে দেখা করে সেনাবাহিনী থেকে পদত্যাগ করার কথা জানান। নুরুল ইসলাম এই ঘটনা বঙ্গবন্ধুর কাছে জানালে তিনি জিয়াকে একজন উচ্চাভিলাষী ও ধৈর্যহীন ব্যক্তি বলে উল্লেখ করেন এবং জিয়ার পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করতে বলেন। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে ১৯৭৫ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে তার পদত্যাগ পত্র গৃহীত হত।
জিয়াউর রহমানের ক্ষিপ্ততা সম্পর্কে নিবন্ধে আরো বলা হয়, বাকশালের সদস্যপদ না পেয়ে এবং জেনারেল সফিউল্লাহকে সেনা বাহিনীর প্রধান করায় জিয়া ক্রমেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রীর কাছে নানা অসন্তোষের কথা জানান। নুরুল ইসলাম চৌধুরী তার নিবন্ধে বলেন, ‘স্বাধীনতা লাভের পরে খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য হিসাবে নাখালপাড়া সংসদ সদস্য হোষ্টেলে ১৯৭২ সালে আমাকে প্রায় ৭/৮ মাস থাকতে হয়। তখন জেনারেল জিয়া আমার হেষ্টেলে চা পানের মাধ্যমে অনেক আলোচনাই করতেন। জিয়া দুঃখ করতেন তার কার্যকলাপের সঠিক মূল্যায়ন হয়নি। জিয়া নাকি জনাব সফিউল্লাহর ব্যাচমেট হিসেবে উপরের দিকে ছিলেন এবং এই আইনত সেনাবাহিনী প্রধানের বাহিনীর পদটি তার পাওয়া উচিত ছিল।’
নিবন্ধে নুরুল ইসলাম চৌধুরী আরো বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করে জিয়ার পদত্যাগের ইচ্ছা ব্যক্ত করলাম। বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত রাগান্বিত হয়ে আমাকে বললেন, তুমি এখনই তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে আমার কাছে পাঠিয়ে দাও। তুমি জানো না জিয়া অত্যন্ত উচ্চাভিলাসী। ও আরও অনেককে দিয়ে বাকশালের সদস্য হবার জন্য আমার কাছে সুপারিশ করেছে। সে ধৈর্য ধরতে জানে না। আমি বর্তমানে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানদেরই সদস্য করেছি। পরে তাকেও হয়তো করবো।
পহেলা আগস্ট পালিত: শোকাবহ আগস্টের প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং আলোর মিছিল করেছে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
গত শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটির সামনে সংগঠন দুটির নেতা-কর্মীরা প্রজ্বলিত মোমবাতি হাতে জড়ো হন। পরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তারা।
আলোর মিছিলে নেতৃত্ব দেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ ও সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমান বাবু। এ সময় সহ-সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাসান জুয়েল, গ্রন্থনা সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম বিপুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন, সাধারণ সম্পাদক তারিক সাইদসহ কেন্দ্রীয় ও নগরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন সংগঠনের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। এ সময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
খাদ্যসামগ্রী বিতরণ যুবলীগের: জাতির পিতার ৪৬তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে শেখ হাসিনার নির্দেশনায় গরীব-দুঃখী মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল। গতকাল রাজধানীর মুগদা মাদ্রাসা মসজিদ রোডে ‘ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণ’র উদ্যাগে প্রায় পাঁচশত গরীব দুঃখী অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইনউদ্দিন রানা ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা’র পরিচালনা উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মামুনুর রশীদ, মোয়াজ্জেম হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক সুব্রত পাল, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, উপ-আইটি সম্পাদক এনআই আহমেদ সৈকতসহ ঢাকা মহানগর দক্ষিন ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের নেতৃবৃন্দ। খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচির আয়োজন করেন মুগদা থানা ৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন সাইজু।
এছাড়া একুশে টেলিভিশন লিমিটেড কার্যালয়ে শোকাবহ আগস্ট উপলক্ষে স্বেচ্ছা রক্তদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথির ছিলেন, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, একুশে টেলিভিশন লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পীযুষ বন্দোপাধ্যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডাক্তার মোহাম্মদ শারফুদ্দীন আহমেদ, ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশনের প্রধান অধ্যাপক মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আসাদুল ইসলাম, জিটিভির বার্তা প্রধান সৈয়দ ইশতিয়া রেজা, ইটিভির পরিচালক রবিউল হাসান অভি এবং কে এম শহীদুল্লাহ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন