শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

৩৮ ঘণ্টা পর ফের বন্ধ সব নৌযান

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২ আগস্ট, ২০২১, ২:২১ পিএম

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষণা করে সরকার। তবে রোববার (১ আগস্ট) রপ্তানিমুখী সব পোশাক কারখানা খুলে দেওয়ায় কাজে যোগ দিতে শুক্রবার রাত থেকেই হাজার হাজার শ্রমিক ও সংশ্লিষ্টরা ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় যাত্রা শুরু করেন।

তাদের নিরাপদে কর্মস্থলে ফেরার সুযোগ দিতে সরকার শনিবার রাত থেকে রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয়। ভিড় থাকায় পরে রোববার ১২টায় লঞ্চ বন্ধ না করে চালু রাখার ঘোষণা দেয় সরকার।
৩৮ ঘণ্টা চালু থাকার পর সোমবার (২ আগস্ট) সকাল ১০টায় লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এখনো পর্যন্ত সরকারি যে ঘোষণা রয়েছে, তাতে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে।
আজ সোমবার রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ঘুরে দেখা যায়, ভোর ৫টা থেকে ৬টা পর্যন্ত কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের চাপ থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সে চাপ কমতে থাকে। ভোরে যাত্রীদের ভিড়ে পন্টুনে মানা হয়নি স্বাস্থ্যবিধি। সেখানে মাস্ক ছাড়াই যাত্রীদের যাতায়াত করতে দেখা গেছে। লঞ্চ টার্মিনালে হকাররা ঝালমুড়ি, আম, আপেল, খেজুরসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে একজনের কাছ থেকে আরেকজনের কাছে গিয়ে বিক্রি করছেন। তাদের কারও মুখে নেই মাস্ক। হাত পরিষ্কার না করেই খাচ্ছেন কেউ কেউ। ফলে সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা হচ্ছে না কোথাও। তবে সব যাত্রী নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যাওয়ায় সকাল ৭টার পরে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল একে বারে জনশূন্য হয়ে পড়ে। টার্মিনালে সারি সারি লঞ্চ, কিন্তু কোনো যাত্রী নেই। নেই কোনো হাঁক ডাক। এরপর সকাল ১০টায় লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

ইলিশা থেকে ঢাকায় আসা রাকিব হাসান বলেন, গার্মেন্টসে চাকরি করি। ১ তারিখ থেকে খুলেছে, যেতে পারিনি। আজ যাব। অনেক কষ্টে ঢাকায় এসেছি। লঞ্চ না চললে আসতে পারতাম না। তখন হয়তো চাকরিটা থাকতো না। এজন্য সরকারকে ধন্যবাদ।

একই স্থান থেকে এসেছেন আরেক পোশাক শ্রমিক আয়শা আক্তার। তিনি জানান, অনেক কষ্টে লঞ্চে উঠেছেন। লঞ্চে পা ফেলার জায়গা ছিল না। কোনো রকমে এক কোণায় বসে এসেছেন। হঠাৎ করে গার্মেন্টস খোলায় এত ভিড়। আমাদের যদি আগে বলে দিতো, তাহলে ঢাকা ছেড়ে যেতাম না। আমাদের বলেছে ৫ তারিখের পড়ে খোলা হবে। মালিকরা শুধু আমাদের নিয়ে খেলা করে।

বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, দেড় দিন লঞ্চ চলার পর সোমবার সকাল ১০টা থেকে ফের বন্ধ হয়ে গেছে নৌযান। গত দেড় দিনে আমরা আশানুরূপ যাত্রী পাইনি। সরকার ধাপে ধাপে অনুমিত দেওয়ায় এ সুবিধা কেউ নিতে পারেনি। আমাদের যদি শুক্রবার দিন একবারে বলে দিতো যে রোববার সকাল পর্যন্ত লঞ্চ চলবে, তাহলে আমরা প্রচার করে দিতে পারতাম। কিন্তু সেটা না হওয়ায় পাটুরিয়া-শিমুলিয়া ঘাটে যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। আমরা আজ থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সরকারের নির্দেশ মতো লঞ্চ বন্ধ রাখবো।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের ট্রাফিক বিভাগ জানায়, দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হলো নৌপথ। শনিবার রাত সাড়ে ১২টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন রুটে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে ছেড়ে গেছে মাত্র ১০টি লঞ্চ। এর মধ্যে পাঁচটি লঞ্চে কোনো যাত্রী ছিল না। এসময়ে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে এসেছে প্রায় ৩৭টি লঞ্চ। দক্ষিণাঞ্চলে লঞ্চগুলো সাধারণত ভোর ৫ থেকে ৬টার মধ্যে চলে আসে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন