শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

গর্ভবতী এবং স্তন্যদাত্রী মায়েরাও এখন টিকা নিতে পারবে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ আগস্ট, ২০২১, ১০:০৫ পিএম

বাংলাদেশে অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং স্তন্যদাত্রী মায়েদের কোভিড-১৯ এর টিকা গ্রহণে কোন বাধা নেই এবং তাদেরকে টিকা দেয়া যেতে পারে বলে সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় টিকা পরামর্শক কমিটি। উক্ত কমিটির সদস্য ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, "আমরা মতামত দিয়েছি যে তাদেরকে টিকা দেয়া যেতে পারে।"

তিনি বলেন, গর্ভবতী মায়েদের চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসকদের জাতীয় ফোরাম অবসটেট্রিক্যাল এন্ড গায়নিকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ-ওজিএসবি বেশ কিছুদিন আগেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে গর্ভবতী মা এবং যারা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান তাদের টিকার আওতায় আনার আবেদন করে। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই এ বিষয়ে আলোচনায় বসে জাতীয় টিকা পরামর্শক কমিটি।

মি. আহমেদ বলেন, টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে যেসব বিষয় মাথায় রাখা হয় তার মধ্যে একটি হচ্ছে ঝুঁকি এবং আরেকটি হচ্ছে সুফল। এক্ষেত্রে ঝুঁকির তুলনায় সুফল বেশি বলে তারা মনে করছেন।

তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গর্ভবতী মায়েরা টিকা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে টিকার বিরূপ প্রতিক্রিয়াও মূল্যায়ন করা হয়েছে।

তার মতে, গর্ভবতী নারীদের টিকা দেয়ার যে ঝুঁকি তা অন্যদের তুলনায় বেশি নয়। আর এজন্যই তাদেরকে টিকা দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

মি. আহমেদ আরো বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গর্ভবতী এবং বুকের দুধ পান করাচ্ছেন এমন নারীদের টিকা দেয়া হচ্ছে।

যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা সংস্থা-এনএইচএস এর ওয়েবসাইটেও গর্ভবতী নারী ও দুধপান করানো মায়েদের টিকা নিতে উৎসাহিত করা হয়েছে।

সেখানে বলা হয়েছে যে, যে কারো বয়স যদি ১৮ বছরের বেশি হয় এবং তিনি যদি গর্ভবতী হন কিংবা গর্ভধারণ করবেন বলে আশা করছেন, শিশুকে বুকের দুধ পান করাচ্ছেন কিংবা গর্ভধারণের চেষ্টা করছেন- এমন হলে তারা করোনাভাইরাসের টিকা নিতে পারবেন।

গর্ভবতী মায়েরা গর্ভধারণের যে কোনো সময় কোভিড-১৯ প্রতিরোধে টিকা নিতে পারবেন। এতে মা ও সন্তানের কোনো ক্ষতি হবে না বলে মন্তব্য করেন অবস্ট্রাক্টিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. সামীনা চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘বিশ্বময় গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভবতী মায়েদের টিকা নেওয়ায় কোনো সমস্যা হয় না বরং লাভ হয়, তাদের ঝুঁকি কমে। যে মা শিশুকে দুধ খাওয়ান, তিনি টিকা নিলে শিশুর করোনা ঝুঁকি কমে।

ওজিএসবির সভাপতি অধ্যাপক ফেরদৌসী বেগম বলেন, গর্ভবতী ও প্রসূতি নারীদের কোভিড-১৯ সংক্রমণ এবং এর ফলে মারাত্মক অসুস্থতার ঝুঁকি অনেক বেশি। কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত নারীদের মধ্যে অপরিণত শিশু জন্ম দেওয়ার হার বেশি। যদিও গর্ভবতী নারীর ওপর টিকার প্রভাবের তথ্য সীমিত। তার পরও দেখা গেছে, টিকা দেওয়ার ফলে গর্ভস্থ শিশু ও নবজাতকের কোনো বিরূপ প্রভাব দেখা যায়নি।

এছাড়া কেউ যদি এরই মধ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার প্রথম ডোজ নিয়ে থাকে তাহলে তাকে দ্বিতীয় ডোজও একই টিকা দেয়া উচিত বলে জানানো হয়।

এতে উল্লেখ করা হয়, টিকা গ্রহণের কারণে মা বা শিশু কেউই কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি নেই। যেসব মায়েরা শিশুদের বুকের দুধ পান করাচ্ছেন তাদের বয়স ৪০ বছরের বেশি হলে যেকোন টিকা নেয়া যেতে পারে।

আর বয়স ৪০ বছর না হলে এবং অন্য কোন স্বাস্থ্য সমস্যা না থাকলে ফাইজার/বায়োএনটেক কিংবা মডার্নার টিকাকে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলা হয়েছে।

এই ওয়েবসাইটে আরো বলা হয়েছে যে, কোভিড-১৯ এর টিকার কারণে গর্ভধারণে সমস্যা তৈরি হওয়ার কোনো প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। টিকা গ্রহণের পর গর্ভধারণ থেকে বিরত হওয়ার দরকার নেই বলেও জানাচ্ছে যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা সংস্থা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন