আগামী ১০ আগস্ট থেকে উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদের করোনা ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ৫৫ ঊর্ধ বছরের ও শরণার্থীদের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে বলে জানা গেছে।
১০ আগস্ট টিকা দেয়ার দিন ধার্য্য করা হলেও প্রবল বর্ষণ, লকডাউনজনিত পরিস্থিতি কিংবা অন্য কোন কারণে হয়তোবা এ দিনক্ষণ পেছাতেও পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে এমন আবাসও রয়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য চীনের তৈরি সিনোফার্মার ভ্যাকসিন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ। ৫৫ বছর ঊর্ধ বয়সী ৪৮ হাজার শরণার্থীকে ৩৪টি ক্যাম্পের অভ্যন্তরে ৫৮টি টিকা কেন্দ্রে করোনার ভ্যাকসিন দেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এজন্য ক্যাম্পগুলোতে প্রয়োজনীয় নার্স, টেকনেশিয়ান, স্বাস্থ্যকর্মীসহ অন্যান্যদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। অন্যান্য সকল প্রস্তুতিও সম্পন্ন করা হয়েছে।
জানা গেছে, রোহিঙ্গাদের জন্য প্রাথমিকভাবে এক লাখ ডোজ টিকা কক্সবাজারে আনা হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে বয়সসীমা পর্যায়ক্রমে কমিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্র। আগামী অক্টোবরের মধ্যে প্রথম ডোজ ভ্যাকসিনের আওতায় আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে সুত্রটি জানিয়েছে। সুত্র মতে প্রথম ভ্যাকসিন পাওয়া সকল রোহিঙ্গাদের ডিসেম্বরের মধ্যে ২য় ডোজের পূর্ণাঙ্গ ভ্যাকসিনের আওতায় আনা হবে। সব ঠিকঠাক থাকলে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) শাহ রেজওয়ান হায়াত, কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান, উখিয়ার ইউএনও নিজাম উদ্দিন আহমদ, আরআরআরসি অফিসের স্বাস্থ্য সমন্বয়কারী ডা. তোহা ভূঁইয়া, জাতিসংঘের সংস্থা ডব্লিওএইচএ এর প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট ভিআইপিরা আগামী ১০ আগস্ট রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্যাকসিন কার্যক্রম উদ্বোধন করতে পারেন।
গত ১৬ মাসে কক্সবাজার জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা ১৯০ জনের মধ্যে ২৮ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী। তারমধ্যে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ২৬ জন এবং টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুরু থেকে গত ৩১ জুলাই পর্যন্ত ২ হাজার ৫৩৫ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে করোনা রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।
প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী মাত্র ৬৫ হাজার বর্গ একর পাহাড়ি এলাকায় গাদাগাদি করে বসবাস করলেও কক্সবাজারসহ সারাদেশের তুলনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প সমুহে করোনা সংক্রামণ হয়েছে অপেক্ষাকৃত কম। ক্যাম্পগুলোতে সময়মতো করোনা সংক্রামণ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে রোহিঙ্গাদের বাধ্য করায় ক্যাম্প সমুহে করোনা সংক্রমণ অপেক্ষাকৃত কম হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন