বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিধিনিষেধ বাড়বে কি না সিদ্ধান্ত আজ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ আগস্ট, ২০২১, ১২:০১ এএম

সারা দেশে চলমান বিধিনিষেধ আগামী ৫ আগস্ট মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিথিল করার সম্ভাবনা রয়েছে। এই অবস্থায় সরকারিভাবে কঠোর বিধিনিষেধের (লকডাউন) মেয়াদ আরো সাত দিন বাড়বে না শিথিল হবে তা আজ অন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় চ‚ড়ান্ত করা হবে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
কঠোর বিধিনিষেধ বা লকডাউন আগামী বৃহস্পতিবার শেষ হচ্ছে। তার আগে সরকারের সিদ্ধান্তে গত রোববার থেকে রফতানিমুখী শিল্পকারখানা খুলে গেছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের যে শর্ত ছিল, অর্থাৎ গ্রামে থাকা শ্রমিকদের এখনই ডেকে আনা যাবে না, সেটা ব্যবসায়ীদের অনেকে মানেননি। রীতিমতো খবর দিয়ে শ্রমিকদের কর্মস্থলে আনা হয়েছে। গত শনিবার সারা দিন কর্মস্থলমুখী জন¯্রােত ও বিশৃঙ্খলা দেখে রাতে গণপরিবহনে ছাড় দেওয়া হয়। এ ঘটনা করোনা সংক্রমণ আরো বাড়বে বলে শঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
আজ মঙ্গলবার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে বেলা ১১টায় অনলাইনে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত বিষয়ে সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ সংক্রান্ত চিঠি গতকাল সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, রোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু বৃদ্ধির জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় দায়ী নয় মন্তব্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব হলো স্বাস্থ্যসেবা দেয়া, যেটা আমরা হাসপাতালে দিচ্ছি। আমাদের দায়িত্ব টিকা দেয়া, আমরা টিকা দেয়ার চেষ্টা করছি। কেউ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আসলে আমাদের দায়িত্ব তাকে সেবা দেয়া, চিকিৎসা দেয়া। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সভায় ১২ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, ১৬ জন সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, পুলিশ মহাপরিদর্শকসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, আইইডিসিআর পরিচালক অংশগ্রহণ করবেন।
গত ১ জুলাই থেকে কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়। এরপর ঈদুল আজহার সময় কোরবানির পশু বেচাকেনা এবং মানুষের চলাফেরার সুযোগ দিয়ে আট দিন বিরতির পর গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়। তা আগামী ৫ আগস্ট মধ্যরাতে শেষ হবে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় কঠোর বিধিনিষেধ আরো ১০ দিন বৃদ্ধিরও সুপারিশ করেন স্বাস্থ্য অধিদফতর। এরই মধ্যে ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে গত ১ আগস্ট থেকে রফতানিমুখী শিল্প-কলকারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানা গেছে, চলমান বিধিনিষেধ শেষে নতুন বিধিনিষেধের সময় সরকারি-বেসরকারি অফিস সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া হতে পারে। এছাড়াও আর লঞ্চসহ গণপরিবহন সীমিত পরিসরে চালু করা করা হবে। রফতানিমুখী শিল্পকলকারখানা চালু রাখা হবে। এসবই চ‚ড়ান্ত করা হবে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে যাওয়ায় গত কয়েক মাস ধরে বিধিনিষেধ আরোপ করে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার। মাঝে ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে আট দিনের জন্য শিথিল করা হয়েছিল বিধিনিষেধ। এরপর আবার গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে আগামী বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) মধ্যরাত পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েছে সরকার। বিধিনিষেধে সব ধরনের গণপরিবহন, সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ রয়েছে। খাদ্যপণ্য উৎপাদন-প্রক্রিয়াকরণ, চামড়া পরিবহন-সংরক্ষণ ও ওষুধ খাত ছাড়া বন্ধ রয়েছে সব ধরনের শিল্পকারখানা। তবে গত ১ আগস্ট থেকে রফতানিমুখী শিল্পকারখানা খুলে দেয়া হলেও তবে এখনো দোকান ও শপিংমল বন্ধ রয়েছে।
বিধিনিষেধ জারির পরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি। প্রতিদিনই দু-শতাধিক মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন, আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হচ্ছেন ১০ হাজারের বেশি। এর মধ্যে বিধিনিষেধ আরো ১০ দিন বাড়ানোর সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। অপরদিকে গণপরিবহন চালু এবং দোকান-শপিংমল, হোটেল- রেস্তোরাঁ খুলে দেয়ার দাবিও জোরালো হচ্ছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে যাওয়ায় গত কয়েক মাস ধরে বিধিনিষেধ আরোপ করে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার। মাঝে ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে আট দিনের জন্য শিথিল করা হয়েছিল বিধিনিষেধ। এরপর আবার গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে আগামী ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েছে সরকার।
বিধিনিষেধে সব ধরনের গণপরিবহন, সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ আছে। খাদ্যপণ্য উৎপাদন-প্রক্রিয়াকরণ, চামড়া পরিবহন-সংরক্ষণ ও ওষুধ খাত ছাড়া বন্ধ রয়েছে সব ধরনের শিল্প-কারখানা। তবে গত ১ আগস্ট থেকে রফতানিমুখী শিল্পকারখানা খুলে দেয়া হলেও বন্ধ রয়েছে দোকান ও শপিংমল।
গত ৩০ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম বলেন, যেভাবে সংক্রমণ বাড়ছে, আমরা কীভাবে এই সংক্রমণ সামাল দেব? রোগীদের কোথায় জায়গা দেব? সংক্রমণ যদি এভাবে বাড়তে থাকে তাহলে কি পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হবে? অবস্থা খুবই খারাপ হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। এসব বিবেচনাতেই আমরা বিধিনিষেধ আরো ১০ দিন বাড়ানোর সুপারিশ করছি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সুপারিশের বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গত ৩১ জুলাই সাংবাদিকদের জানান, বিধিনিষিধ বাড়ানোর বিষয়টি অবশ্যই আমাদের মাথায় আছে। ৩ বা ৪ তারিখে এ বিষয়টি পরিষ্কার করে দেব। তিনি বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনা করে সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে বিভিন্ন প্রস্তাব আছে, সেগুলো বিবেচনা করে কিভাবে করলে এ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, সেটি আমাদের মূল লক্ষ্য। আমাদের কাজকর্মগুলো, যেগুলো একেবারেই অপরিহার্য, সেগুলো চালানো। সেটি কী করলে ভালো হবে, সেজন্য আরেকটু সময় আমাদের লাগবে।
গত ১ জুলাই থেকে এক সপ্তাহের জন্য সরকার সারা দেশে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে। দেওয়া হয় ২১টি নির্দেশনা। এই সময়ে জরুরি সেবা ছাড়া অন্যসব অফিস-আদালত বন্ধ, যান্ত্রিক যানবাহনে যাত্রী বহনও নিষিদ্ধ। বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবির পাশাপাশি ‘আর্মি ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ বিধানের আওতায় মাঠে ছিলো সশস্ত্র বাহিনী। জনসাধারণকে অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছিল। রাস্তায় বেরিয়ে যৌক্তিক ব্যাখ্যা দিতে না পারলে করা হয়েছে গ্রেফতার-জরিমানা। এই বিধিনিষেধের পরও পরিস্থিতির দৃশ্যমান কোনো উন্নতি হয়নি, বরং আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যায় নতুন রেকর্ড হয়েছে এর মধ্যে। এ সময় চলমান বিধিনিষেধ আরো এক সপ্তাহ বাড়ানোর পক্ষে সুপারিশ করে কোভিড সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।
অপর এক চিটিতে বলা হয়, এ সময়ে পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্রে গমন ও জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান (যেমন: বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান, জন্মদিন, পিকনিক এবং রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান) পরিহার করতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন