শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

পেগাসাসের শিকার হয়েও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সউদী সাংবাদিক

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ আগস্ট, ২০২১, ৩:৫৪ পিএম

ঘটনাটা গত বছরের। জুনের কোনও এক রাতে স্বামীর সঙ্গে খেতে বসেছিলেন ঘাদা ওয়েসিস। আদতে লেবাননের বাসিন্দা ওই তরুণী সউদী আরবের একটি প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমের মহিলা সাংবাদিক। এক সহকর্মী ফোন করে তাঁকে তখনই টুইটার দেখতে বলেন। চমকে ওঠেন ঘাদা। তার ফোনে তোলা কিছু ব্যক্তিগত ছবি ফাঁস হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ছবি তো হু হু করে শেয়ার হয়েইছে, সেই সঙ্গে তার চরিত্র নিয়ে যাবতীয় কুরুচিকর মন্তব্যও।

পশ্চিমী দুনিয়ায় মেয়েদের খোলামেলা ছবি শেয়ার হওয়া খুব স্বাভাবিক নজরে দেখা হলেও সউদী আরবের মতো অতিরক্ষণশীল কোনও দেশের মহিলার ছবি এ ভাবে ছড়িয়ে পড়ায় তীব্র আক্রমণের মুখে পড়তে হয় ঘাদাকে। তার কথায়, ‘আমি একজন স্বাধীন, উদারপন্থী মানুষ। তাই পুরুষতান্ত্রিক সমাজ আমায় আক্রমণ করতে দু’বার ভাবে না। আমার লেখা নিয়ে সমালোচনা হয়, সেটা এক কথা। কিন্তু এ ভাবে আমার ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি শেয়ার হয়ে যাওয়ায় আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। মনে হয়েছিল যে কেউ চাইলে আমার শোওয়ার ঘর বা শৌচাগারে ঢুকে পড়তে পারে!’

যে ছবি একমাত্র তার ফোনে ছিল, কখনও কোনও সামাজিক মাধ্যমে তিনি সেই ছবি শেয়ারই করেননি, সেই ছবি গোটা দুনিয়া কী করে দেখে ফেলল, তা ভেবে প্রথমে বিস্মিত হয়েছিলেন ঘাদা। পরে বুঝতে পারেন হ্যাক করা হয়েছে তার মোবাইল ফোন। আরও পরে জানতে পারেন, আরও অনেক সাংবাদিকের মতোই তার ফোনেও আড়িপাতা হয়েছে পেগাসাস স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে।

ঘাদা অবশ্য একা নন। সরকার বা প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ করা মধ্য এশিয়ার একাধিক মহিলা সাংবাদিক বা মানবাধিকার কর্মীকেই এই ধরনের হেনস্থার মুখোমুখি হতে হয়েছে গত কয়েক বছরে। তারা তখন প্রতিবাদ করলেও কেউ শোনেননি তাদের কথা। উল্টো ঘাদার মতো একনিষ্ঠ সাংবাদিককে যৌনকর্মী বলতেও পিছপা হয়নি তার দেশের পুরুষতান্ত্রিক সমাজ। এখন ইসরাইলি সংস্থার তৈরি এই স্পাইওয়্যারের কথা জানাজানি হওয়ার পরে মন খুলে কথা বলার সাহস পাচ্ছেন ঘাদার মতো মহিলারা।

বরাবরই সউদী সরকারের সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন ঘাদা। তার ধারণা, সেই জন্যই সউদী সরকারের বিরাগভাজন হন তিনি। সউদী আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনও মন্তব্যই করতে চায়নি। তবে আমেরিকার ফ্লরিডার এক আদালতে সউদী যুবরাজ, সংযুক্ত আরব আমিরাতের শাসক মহম্মদ বিন জায়েদ ও ফ্লোরিডার দুই টুইটার ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে গত ডিসেম্বরেই মামলা করেছিলেন ঘাদা। অভিযোগ, তার ফোনে আড়ি পেতে তাকে হেনস্থা করা হয়েছে। আমেরিকার ডিজিটাল ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘাদার ফোনে পেগাসাস ব্যবহার হয়েছিল। সূত্র : এবিপি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন