সাগরপারের কৃষি জমি লবণাক্ত পানির কবল থেকে রক্ষা, বর্ষা মওসুমে সুষ্ঠুভাবে পানি নিস্কাশন ও সামুদ্রিক জলোচ্ছ¡াসের কবল থেকে জান-মাল রক্ষার জন্য নির্মাণ করা বেড়িবাঁধের সøুইজ গেটগুলো এখন আর এলাকার কৃষকদের কাজে আসছে না।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ষাটের দশকের প্রথম দিকে ৯টি পোল্ডারে ৩৩০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। ওই দশকের মাঝামাঝি সময়ে ৪৯টি ড্রেনেজ এবং ৫৩টি ফ্লাশিং সøুইজ নির্মাণ করা হয়। প্রত্যেকটি সøুইজ সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য একজন করে সøুইজ খালাসি নিয়োগ দেয়া হয়। এলাকার কৃষকদের সুবিধার জন্য তারা পানি উঠা-নামা করাতো। প্রয়োজনে গেট বন্ধ রাখতো। আবার প্রয়োজন হলে খুলে দিতো। ৬৯’র পর থেকে নতুন করে খালাসী নিয়োগ বন্ধ করে দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। অপরদিকে নিয়োগকৃত খালাসী অবসরে যাবার পর আর কোনো খালাসীর নিয়োগ দেয়নি। ফলে সøুইজগুলো হয়ে যায় অরক্ষিত। এ সুযোগে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল দখল করে নেয় সøুইজগুলো। এমনকি চুরি করে নিয়ে যায় সøুইজের কাঠ, লোহা, দরজা। নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নীজকাটা গ্রামের ৮ ব্যান্ডের সøুইজের চাকামইয়া ইউনিয়নের কাঠালপাড়ার ৪ ব্যান্ডের সøুইজ গেট সম্পূর্ণ খোলা রয়েছে। ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই খালের দু’পাড়ে রয়েছে চাকামইয়া, কড়ইবাড়িয়া ও আড়পাঙ্গাশিয়া এই তিনটি ইউনিয়নের মানুষে দুর্ভোগের সীমা নেই। সম্প্রতি সরকারি খালের দখল নিয়ে মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের মধুখালী গ্রামে দু’পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৩২ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে আটজনকে গুরুতর অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছে। উপজেলা কৃষি অফিসার এআর এম সাইফুল্লাহ বলেন, সøুইজ গেট নিয়ন্ত্রণ কমিটির সাথে কৃষি বিভাগকে জড়িয়ে রাখলে আমরা প্রান্তিক কৃষকদের উপকার করতে পারতাম। এ সøুইজ কারা নিয়ন্ত্রণ করে তা আমরা কিছুই জানি না। এ ব্যাপারে কলাপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডি শওকত হোসেন মেহরাজ জানান, এ উপজেলার সকল সøুইজ গেট কমিটির প্রধান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সদস্য সচিব পানি উন্নয়ন বোর্ড। এদের সাথে স্থানীয় কৃষক ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে নয় সদস্য বিশিষ্ট সøুইজ গেট নিয়ন্ত্রণ কমিটি রয়েছে। আমরা সরজমিনে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহম্মদ শহিদুল হক জানান, সরকারি খালের অবৈধ বাঁধ অপসারণ উপজেলা প্রশাসনের রুটিন ওয়ার্ক। ইতোমধ্যে ধানখালী ইউনিয়নের খাল থেকে ১৬টি অবৈধ বাঁধ কেটে দিয়ে পানিবদ্ধতা নিরসন করা হয়েছে। উপজেলার অন্য ইউনিয়নের খালগুলো থেকে সকল অবৈধ বাঁধ অপসারণ করে সরকারি খাল দখলমুক্ত করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন