মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

দ্বিতীয় ম্যাচেও অস্ট্রেলিয়াকে হারালো বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ আগস্ট, ২০২১, ৯:৩৫ পিএম | আপডেট : ১১:৩২ পিএম, ৪ আগস্ট, ২০২১

পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচেও শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে হারালো বাংলাদেশ। কোথাও এক ফোঁটা খামতি নেই। সবদিকে সবকিছু পরিপাটি করে সাজানো। ইতিহাস, ঐতিহাসিক, চাঁদের হাট, সাজানো-গোছানোর মতো শব্দগুলোর নিয়মিত আনাগোনা চলছে এদিক ওদিক। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের আকাশটাও পরিস্কার। এই লকডাউনে অফিস-স্কুল বন্ধ থাকায় সবার নজর টিভি স্ক্রিণের দিকে। ইউটিউবে চোখ বুলালেও লাইভ খেলা দেখার লোকের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। সবাই অপেক্ষায় ছিলেন ঘরোয়া উৎসবের। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টানা দ্বিতীয় দেখে অবশ্য সমর্থকেরা তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে পারেননি। কেবলই দুঃস্বপ্ন হতে যাওয়া ম্যাচটিতে জিতে অস্বস্তিই মোচন করেছেন তারা। অথচ জয়টা হতে পারতো আরও অনেক সহজে, স্বাচ্ছন্দে। তবে দিনশেষে তবুও স্বস্তি জয় এসেছে। ৫ ম্যাচ সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল টাইগাররা।

বুধবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আগে ব্যাট করতে করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১২১ রান তোলে ম্যাথু ওয়েডের দল। টি-টোয়েন্টিতে প্রথমে ব্যাটিং করে পুরো ওভার খেলে এটাই অস্ট্রেলিয়ার সর্বনিম্ন সংগ্রহ। এর আগে ২০১০ সালে পার্থে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে করা ৮ উইকেটে ১৩৩ রান ছিল তাদের সর্বনিম্ন স্কোর। সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যেতে লক্ষ্য ছিল ১২০ বলে ১২২ রানের। সাদা বলের ক্রিকেটে চোখ বন্ধ করে খেললেও তাড়া করা যায় এ রান। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে হলেতো আর কিছু বলার অপেক্ষাই রাখে না। এইতো সবশেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচে ১৯৪ রানের লক্ষ্যটা কি সুন্দর করেই তাড়া করল এ দলটিই। অথচ গতকাল বলে বলে রান তাড়া করতেই ঘাম ছুটে গেল বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের। গতকাল ৫ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে টাইগাররা।


ছোট লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ম্যাচের মতোই বাজেভাবে আউট হয়েছেন সৌম্য সরকার। রানের খাতা খোলার আগেই ফিরে গেছেন তিনি। সঙ্গীকে হারিয়ে নাঈম শেখও বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না। জশ হ্যাজেলউডের বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন বাঁহাতি ওপেনার। দুই ওপেনার বিদায় নিলে চাপ তৈরি হয়েছিল। তবে অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের চেপে ধরার সুযোগ দেননি সাকিব আল হাসান ও শেখ মেহেদী হাসান। তাদের ব্যাটে ভর করে লক্ষ্যের পথে এগিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশ। তবে সাকিবের বিদায়ে আবারও ধাক্কা স্বাগতিক শিবিরে। এরপর পারলেন না মাহমুদউল্লাহও। রানের খাতা খোলার আগেই প্যাভিলিয়নে ফিরে গেছেন স্বাগতিক অধিনায়ক। এরপর রিভিউ নিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন আফিফ হোসেন। তবে উইকেট হারানো আটকাতে পারেনি বাংলাদেশ। ক্রিজ ছেড়ে শট খেলতে গিয়ে স্টাম্পিং হয়েছেন শেখ মেহেদী হাসান।


ভাগ্যও বলতে হবে মেহেদীর! বেশ কয়েকবার বেঁচে গিয়েছেন নো ম্যানস ল্যান্ডে বল পড়ায়। ব্যাটিং পজিশনে প্রমোশন পেয়ে চার নম্বরে নেমে এই ব্যাটসম্যান মোটামুটি ক্রিজে মানিয়ে নিয়েছিলেন নিজেকে। তবে অপ্রয়োজনীয় শট খেলতে গিয়ে আউট হয়ে গেছেন। ২৩ রানে তার বিদায়ে স্বাগতিকদের স্কোর ছিল ১৩ ওভারে ৫ উইকেটে ৮২ রান। তখনও গতে পারতো বিপদ। কিন্তু নুরুল হাসান (২১*) ও আফিফের (৩৩*) ব্যাটে ভর করে ৮ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় টাইগাররা। সফরকারিদের হয়ে মিচেল স্টার্ক, জস হ্যাজেইলউড, অ্যাস্টন অ্যাগার, অ্যাডাম জাম্পা ও অ্যান্ড্রু টাই একটি করে উইকেট নিয়েছেন।


এরআগে টস জিতে ব্যাটিং করতে নামা অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা ভালো হয়নি। গতকালও স্পিনাররা শুরু থেকেই চাপে রেখেছিলেন অজিদের। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট তুলে নিয়ে সফরকারীদের বড় বিপদে ফেলেন দুই পেসার মুস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে দুর্দান্ত পারফর্ম করে র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি করেছিলেন মুস্তাফিজ ও সাকিব। গতকাল সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচেও রাখলেন তার স্বাক্ষর। গত ম্যাচের মতোই শুরু শেখ মেহেদী হাসানের। তার হাত ধরেই এলো বাংলাদেশের প্রথম সাফল্য। আবারও এই স্পিনারের বলে আউট হয়েছেন অ্যালেক্স ক্যারি।


ক্যারিকে (১১) শুরুতে ফেরান শেখ মেহেদি হাসান। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে বোলিংয়ে এসে অপর ওপেনার জস ফিলিপসকে (১০) বোল্ড করেছেন মুস্তাফিজ। এরপরে শক্ত একটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছেন মিচেল মার্শ ও মোয়সেস হেনরিক্স। তৃতীয় উইকেটে দুজনের জুটি ছিল ৫৭ রানের।


প্রথম ম্যাচের মতো উইকেট ধরে রেখে রানের চাকা সচল রাখতে চেয়েছেন মার্শ। অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। শরিফুল ইসলামের সুইং মিস করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৪২ বলে ৫টি চারে ৪৫ রান করেছেন। হেনরিক্স হাত খুলতে চাইতেই সাকিব আল হাসানের বলে বোল্ড ২৫ বলে ৩০ রান করে।
এই দুজন ফেরার পর বাকিরা সেভাবে প্রতিরোধই গড়তে পারেননি। এরপর বলার মতো রান করতে পেরেছেন কেবল মিচেল স্টার্ক (১০ বলে ১৩*)। ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১২১ রানে থেমেছে অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশের পক্ষে মুস্তাফিজ নিয়েছেন তিন উইকেট। শরিফুল নিয়েছেন দুই্ উইকেট। একটি করে উইকেট নিয়েছেন সাকিব ও মেহেদি।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন