শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মোবাইলকোর্টে সাজাপ্রাপ্ত দুই শিশু পেল মুক্তি

বিচারপতিকে আইনজীবীর চিঠি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ আগস্ট, ২০২১, ১২:০০ এএম

ভ্রাম্যমাণ আদালত দ্বারা দন্ডিত দুই শিশুকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। নেত্রকোনা জেলা প্রশাসককে তাদের মুক্তির বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। দুই শিশুর মুক্তি চেয়ে এক আইনজীবীর চিঠি আমলে নিয়ে গতকাল বুধবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এই আদেশ দেন। তবে আদেশের আগেই আপিল শুনানি করে শিশু দু’টিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে বলে জানান সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার।

এর আগে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দন্ড পাওয়া দুই শিশুকে মুক্তি দিতে গতকাল সকালে হাইকোর্টের রিট বেঞ্চের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমকে ইমেইলে চিঠি দেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।

চিঠিতে তিনি লেখেন, ৪ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে দুই শিশুকে দন্ড’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে জানতে পারি, নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুলতানা রাজিয়া ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে দুই শিশুকে এক মাসের সাজা দিয়েছেন। এই রিপোর্ট পড়ে আমার কাছে মনে হয়েছে বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। শিশু আইনের অধীন মোবাইলকোর্টের কোনো এখতিয়ার নেই। ফলে, অত্র সাজা এখতিয়ার বহিভর্‚ত।

চিঠি পাঠানোর যৌক্তিকতা নিয়ে আইনজীবী বলেন, আমি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী। আমার মনে আছে, ফতোয়ার মামলায় পত্রিকার রিপোর্ট দরখাস্ত হিসেবে গৃহিত হয়েছিল। ছাত্রজীবনে পড়েছি, একটি টেলিফোন কল নাকি এফআইআর হিসেবে গণ্য হয়েছিল। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে প্রধান বিচারপতি বরাবর চিঠি পাঠিয়েছিলেন এক সন্তানহারা মা নীলাবতী বেহারা। সেই চিঠির ভিত্তিতে তিনি ক্ষতিপূরণও পেয়েছিলেন। স্বচক্ষে দেখেছি, পত্রিকার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অনেক স্বপ্রণোদিত রুল জারি হয়েছে। বিচারও হয়েছে। জেল থেকে পাঠানো চিঠিগুলো জেল আপিল হিসেবে বিবেচিত হয়। এসব উদাহরণ দেখে কিছুটা অতি উৎসাহী হয়ে এই পত্র লিখলাম। আশা করি, আমার এই পত্র বৃথা যাবে না। চিঠিতে বলা হয়, আমার নিবেদন এই যে, সুপ্রিম কোর্ট রুলসের ১১ক অধ্যায়ের বিধি ১০ মোতাবেক অত্র চিঠিটি সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আবেদন হিসেবে বিবেচনা করে সংযুক্ত প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে উল্লিখিত শিশুদের তাৎক্ষণিক মুক্তির আদেশ দিতে অথবা ক্ষেত্রমতে উপযুক্ত আদেশ প্রদানে আপনার একান্ত মর্জি হয়।

অ্যাডভোকেট শিশির মনির ইনকিলাবকে বলেন, মাননীয় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমকে ইমেইলে এ চিঠি পাঠিয়েছি। আমার জানামতে সরাসরি কোনো বিচারপতিকে চিঠি এটাই প্রথম। এদিকে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ব্যারিস্টার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, নেত্রকোনায় বাল্য বিবাহের সূত্র ধরে দুই শিশুকে সাজা দেয়ার বিষয়টি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের বেঞ্চের দৃষ্টিতে আনা হলে আদালত উক্ত দুই শিশুকে মুক্তি দেয়ার বিষয়ে নির্দেশ দিয়ে নেত্রকোনার ডিসিকে অবহিত করার জন্য আমাকে নির্দেশ দেন। আমি নেত্রকোনার ডিসিকে টেলিফোনে আদালতের আদেশের বিষয়টি অবগত করি। তিনি জানান ওই দুইজন শিশুকে ইতোমধ্যে আপিল শুনানি করে মুক্তি দেয়া হয়েছে। হাইকোর্টের আদেশের আগেই তাদের আপিল শুনানি করে মুক্তি দেয়া হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন