বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

দুর্যোগে আমাদের বিশ্বাস ও করণীয়-১

মাওলানা শিব্বীর আহমদ | প্রকাশের সময় : ৫ আগস্ট, ২০২১, ১২:০০ এএম

জীবনে চলার পথে আমরা যেসব বিপদ ও সঙ্কটের মুখোমুখি হই সেগুলো একজন ব্যক্তি বা একটি পরিবার কেন্দ্রিক যেমন হতে পারে, তাতে আক্রান্ত হতে পারে একটি পুরো সমাজ, একটি দেশ কিংবা আরো বিস্তৃত অঞ্চল। এ সঙ্কট আবার মানুষসৃষ্ট কোনো কারণে যেমন হতে পারে, মানুষের ইচ্ছাকৃত কোনো অপরাধ এর পেছনে দায়ী হতে পারে, আবার বাহ্যত এমন কোনো কারণ নাও থাকতে পারে। এমন কোনো বিপদ যখন সমাজে ছড়িয়ে পড়ে তখন সেটাকে আমরা ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ’ বলে চিহ্নিত করে থাকি। বিপদ যে আকারেই আসুক, বিপদ বিপদই। বিপদের ভুক্তভোগী যে, সে-ই বোঝে এর ভয়াবহতা।

বিপদ যেমনই হোক, ছোট হোক বা বড়, মানবসৃষ্ট কোনো কারণ এর পেছনে দায়ী থাকুক আর নাই থাকুক, সবরকম বিপদে আমাদের একই কথা সবকিছু আল্লাহর পক্ষ থেকেই হয়। আল্লাহ বিশ্বাসী মুমিন যারা, তাদের বিশ্বাস এটিই : আল্লাহ তোমাকে কোনো বিপদ দিলে তিনি ব্যতীত তা দূর করার কেউ নেই। আর তিনি যদি তোমার কোনো কল্যাণ চান তবে তাঁর অনুগ্রহ রদ করারও কেউ নেই। স্বীয় বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা তিনি মঙ্গল দান করেন। তিনিই মহাক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা ইউনুস : ১০৭)।

আমাদের জীবনে ভালো-মন্দ যা কিছুই ঘটে এর কোনোটাই নিজ শক্তিতে হতে পারে না। সবকিছুর পেছনেই রয়েছে পরম করুণাময় মহাশক্তিধর রাব্বুল আলামীন আল্লাহ তাআলার হুকুম। এটা আমাদের বিশ্বাস। এ বিশ্বাস আমাদের ঈমানের অংশ। রাসূলুল্লাহ (সা.) ঈমানের পরিচয় দিয়েছেন এভাবে : তুমি আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাকুল, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রাসূলগণ এবং পরকালের প্রতি ঈমান আনবে এবং ঈমান আনবে তাকদীরের ভালোমন্দের ওপরও। (সহীহ মুসলিম : ৮)।

তাকদীরের ওপর ঈমানের বিষয়টি আরেক হাদীসে আরো বিস্তারিত বলা হয়েছে : কোনো বান্দা ততক্ষণ মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ সে তাকদীরের ভালো-মন্দের ওপর ঈমান না আনে। তাকে এ বিশ্বাস করতে হবে (ভালোমন্দ) যা কিছুই তার ভাগ্যে জুটেছে, তা ছুটে যাওয়ার মতো ছিল না আর যা ছুটে গেছে তা পাওয়ারও ছিল না। (জামে তিরমিযী : ২১৪৪)।

হাদীসের মর্ম তো দ্ব্যর্থহীন যে কোনো বিপদে আমরা পড়ি কিংবা যে কোনো কল্যাণ আমরা লাভ করি, তা আল্লাহ আমাদের ভাগ্যে লিখে রেখেছেন বলেই হয়। যে বিপদের কথা আমাদের জন্যে লিখে রাখা হয়েছে, আমরা তা কিছুতেই এড়িয়ে যেতে পারি না। একইভাবে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে কল্যাণকর যা কিছুর ফয়সালা আমাদের জন্যে করা হয়েছে, তাও আমাদের থেকে ছুটে যেতে পারে না কিছুতেই। আর যা আমাদের জন্যে আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত নয়, শত চেষ্টায়ও তা আমরা পেতে পারি না। যে বিপদ আমাদের ভাগ্যে লেখা নেই, তাতে আক্রান্ত হব না আমরা কখনোই। একজন মুমিন হিসেবে এ বিশ্বাস আমাদেরকে ধারণ করতেই হবে।
তাই বলে আবার দুনিয়ার উপকরণকে এড়িয়ে চলার কোনো সুযোগও নেই। দুনিয়াকে বলা হয় ‘দারুল আসবাব’ অর্থাৎ উপকরণের জগৎ। আমাদের জীবিকা, আমাদের নিরাপত্তা, আমাদের চিকিৎসা ও সুস্থতা, আমাদের আরাম-আয়েশ, আমাদের সফলতা-ব্যর্থতা সবকিছুতেই আমরা উপকরণ গ্রহণ করে থাকি এবং এটাই স্বাভাবিকতা। এটা ইসলামেরও শিক্ষা।

তাকদীরের ফয়সালা যেহেতু অদৃশ্য, তাই এর ওপর নির্ভর করে বসে থাকার সুযোগ নেই। দুনিয়ার স্বাভাবিকতা হিসেবে উপকরণ গ্রহণ করতে হবে। এরপর এর সফলতা-ব্যর্থতা ছেড়ে দিতে হবে আল্লাহর হাতে। বাস্তবে ঘটেও তাই। অনেকসময় দেখা যায়, শত চেষ্টার পরও আমরা কোনো কোনো ক্ষেত্রে সফল হতে পারি না, আবার কখনো দেখা যায়, সামান্য কিছু চাইতেই বিশাল কিছু পাওয়া যায়। আসলে এ সবই তাকদীর।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
মুহাম্মদ হুসাইন ৬ আগস্ট, ২০২১, ৯:১৮ এএম says : 0
আলহামদুলিল্লাহ
Total Reply(0)
মুহাম্মদ হুসাইন ৬ আগস্ট, ২০২১, ৯:১৯ এএম says : 0
আলহামদুলিল্লাহ
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন