মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

গল্পটা আনন্দের না অপেক্ষার

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০২১, ১২:২২ এএম

করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবা ও ডেঙ্গুর চোখ রাঙানিতে আঁধারে দেশের মানুষ। এই আঁধারের ভীড়ে মিরপুরের ‘হোম অব ক্রিকেট’ থেকে একটু আলোর ঝলকানি। তাতে খুশিতে ভাসছে দেশ। এমনিতে শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ম্যাচ মানেই ‘বিয়ে বাড়ি’র উৎসব! আলো ঝলমলে রঙ আর গ্যালারির উপচে পড়া দর্শক। কিন্তু করোনার এই দুঃসময়ে এবার যে এর কিছুই নেই। তারপরও বাংলাদেশ ঠিকই উড়ল। রঙের রোশনাই আর দর্শকের গগণবিদারি চিৎকার না থাকলেও ফের আনন্দের গল্প ঠিকই লিখল বাংলাদেশ। ক্রিকেটের মোড়ল ‘বিগ থ্রি’র অন্যতম অস্ট্রেলিয়ার দর্প ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে দ্বিতীয়বার চূর্ণ করল টাইগাররা। তারুণ্যের জয়ধ্বনিতে দ্বিতীয় ম্যাচেও জয় তুলে নিলো বাংলাদেশ।
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জিতেই লেখা হয়েছে ইতিহাস। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে প্রথম জয় বলে কথা। প্রথম টি-টোয়েন্টি যেখানে শেষ করেছিল, সেখান থেকেই যেন শুরু দ্বিতীয়টি। আর আজ পাঁচ ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটিতে জিতলেই তো সিরিজ লাল-সবুজের। এরচেয়ে ভাল স্ক্রিপ্ট বোধহয় লেখা অসম্ভব। আসলে আগের লাইনের ‘বোধহয়’ শব্দটি ফেলে দিলে হয়তো আরও ভালো হতো। তাইহোক। শব্দটি বাদ দিয়েই নাহয় পড়–ন।
২০১৭ সালের কথা। এই মিরপুরেই অজিদের প্রথবারের মতো টেস্টে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। লাল বলের ক্রিকেটে বাংলাদেশের সেই ঐতিহাসিক জয়কে অস্ট্রেলিয়া কিভাবে দেখেছে? সেকথা আমাদের সবারই জানা। টাইগারদের পারফরমেন্স দেখে সে সফরের পারফরম্যান্স প্রধান প্যাট হাওয়ার্ড মন্তব্য করেছিলেন, বাংলাদেশ দলের অধিকাংশই অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় ক্রিকেট খেলারই যোগ্য না!
তখনকার অস্ট্রেলিয়া আর এখনকার অস্ট্রেলিয়া যেন একই সূত্রে গাঁথা। এবার আগের মতো কটাক্ষ না করলেও কোন সমীহ জাগানিয়া বক্তব্য আসেনি তাদের পক্ষ থেকে। তাদের স্থানীয় গণমাধ্যম দ্য সিডনি মর্নিং হেরাল্ডে প্রকাশিত প্রতিবেদন এই জয়কে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটীয় বুদ্ধিমত্তার ব্যর্থতা হিসেবে দেখছে।
প্রথম দুই ম্যাচ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ব্যাটে-বলে বাংলাদেশ যেখানে পরিচয় দিয়েছে ধারাবাহিতকার। সেখানে সফরকারিরা এখন পর্যন্ত নিজেদের খোলস থেকেই বের করতে পারেনি। প্রথম ম্যাচে রানের দেখা পেয়েছেন সাকিব আল হাসান, মোহাম্মদ নাইম ও আফিফ হোসেন। বলহাতে ৪ উইকেট নিয়ে একাই অজিদের কাঁপিয়ে দিয়েছেন নাসুম আহমেদ। এছাড়া শরিফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, মেহেদী হাসান ও সাকিবরা। দ্বিতীয় ম্যাচেও ব্যাটে-বলে অবদান সাকিব-মেহেদীর। এছাড়াও রানের দেখা পেয়েছেন আফিফ-নুরুল হাসানরা। নিজেকে নতুন করে মেলে ধরেছেন পেসার মুস্তাফিজ, শরিফুলরা।
অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার রানের চাকা ঘুরছে এক মিচেল মার্শের ব্যাটে। দু’টি ম্যাচেই তিনি করেছেন ৪৫ রান। মিচেল স্টার্ক, জস হ্যাজেইলউডরা চেষ্টা করে গেছেন। কিন্তু এই কন্ডিশনে যাদের ভূমিকা হওয়ার কথা সবচেয়ে বেশি। সেই স্পিনাররা নিজেদের মেলে ধরতে পারলেন কই? এতে যেই ফল হওয়ার তাই হল। এক দিকে জয়ের উৎসবে মাতোয়ারা লাল-সবুজেরা, অন্যদিকে পরাজয়ের গ্লানিতে আচ্ছন্ন হলুদ জার্সিধারীরা।
এ সিরিজের আগে টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি দেখায় ৪-০ ব্যবধানে পিছিয়ে ছিল মাহমুদউল্লাহর দল। কাজেই একটা জয় পেলেই তা হতো ইতিহাস। প্রথম ম্যাচেই সেই ইতিহাসের সাক্ষী হয়েছে গোটা দুনিয়া। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের পর আরেক ইতিহাস। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে যেকোন ফরম্যাটে টানা ২য় জয়। এখন দু’দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে বাংলাদেশ ২, অস্ট্রেলিয়া ৪। সেই একচেটিয়া আধিপত্যের অবসান ঘটল অজিদের। এবার আরেক ইতিহাসের দ্বারপ্রান্তে টাইগাররা। ৫ ম্যাচের সিরিজে তৃতীয় ম্যাচে জিতলেই ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। মানে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতবে ১৬ কোটি জনসংখ্যার ক্রিকেটপাগল দেশটি। তাই তৃতীয় ম্যাচে জয় বাংলাদেশের জন্য আনন্দের গল্প লেখার। আর জয় না আসলে তা হবে অপেক্ষার। কারন এরপরেও ম্যাচ বাকি থাকবে দু’টি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
md delwar hossain ৬ আগস্ট, ২০২১, ১২:১১ পিএম says : 0
goodluck
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন