বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ড. গাজী সালেহ উদ্দিন আর নেই। শুক্রবার রাত ৮টায় রাজধানীর শিকদার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহে রাজেউন)। করোনা আক্রান্ত হয়ে তিনি গত তিনদিন সেখানে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। তার বয়স হয়েছিলো ৭৭ বছর। মৃত্যুকালে তিনি ১ ছেলে, ১ মেয়ে নাতি নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
গাজী সালেহ উদ্দিনের পুত্র সালেহীন তানভীর গাজী রাতে পিতার মৃত্যুর সংবাদ জানান। বাবার ফেসবুকে তিনি লিখেন-‘স্রোতের বিপরীতে চলতে পারা দুর্দান্ত মনোবলের এক সাহসী বীরের প্রস্থান ’। তার ইন্তেকালে চট্টগ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
গত ৩০ জুলাই তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকার ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে যাওয়ায় তাকে গত ৩১ জুলাই থেকে অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে হয়। গত ২১ জুলাই থেকে তিনি করোনার উপসর্গে ভুগছিলেন বলে জানিয়েছেন সালেহিন তানভীর গাজী। পরে করোনার নমুনা পরীক্ষায় তিনি করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন।
এর আগে ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তিনি অনেক লোকজনের সংস্পর্শে এসেছিলেন। এর পরদিন থেকেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ফলে সিআরবির ওই সমাবেশ থেকে তিনি সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন বলে ধারণা করছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরও তিনি সিআরবির হাসপাতাল নিয়ে নিজের মত করে এলোমেলোভাবে বিভিন্ন কথা বলছেন। ফেসবুকেও তিনি তার প্রতিবাদ অব্যাহত রাখেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ড. গাজী সালেহ উদ্দিন চট্টগ্রামের গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে সাহসী ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সমাজে নৈতিক অবক্ষয়সহ নানা বিষয়ে তিনি তার মতামত ব্যক্ত করতেন। অনৈতিকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসাবে তিনি নগরীর ঝাউতলায় সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের জন্য নৈতিক স্কুল চালু করেন। দৈনিক ইনকিলাবসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে তিনি নিয়মিত কলাম লিখতেন।
দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডীন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব, বাংলাদেশ সমাজবিজ্ঞান সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। চবির সমাজতত্ত্ব বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত এ শিক্ষক মুক্তিযুদ্ধের গবেষক। তার বেশ কয়েকটি গবেষণা গ্রস্থ প্রকাশিত হয়েছে। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন