শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মুহাররম একটি নাম একটি ইতিহাস

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুনশী | প্রকাশের সময় : ১১ আগস্ট, ২০২১, ১২:০৪ এএম

ইসলামী বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস মহররম। এ শব্দটি নাম বাচক বিশেষ্য নয়, বরং গুণ বাচক বিশেষণ। পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) এর নবুওয়াত ও রিসালাত লাভের পূর্বে প্রাচীন আরবে বছরের প্রথম দুই মাস ছিল প্রথম সফর ও দ্বিতীয় সফর। তৎকালীন কাব্যসাহিত্যে মহররম ও সফর নামের স্থলে দ্বিবাচনিক শব্দ ‘সাফারাইন’ এর ব্যবহার এ কথাই প্রমাণ করে।

ইতিহাস পাঠে জানা যায় যে, প্রাচীন আরব বছরের প্রথম অর্ধবছরে তিনটি মাস ছিল এবং এই তিন মাসের প্রত্যেকটিতে দুটি করে মাস ছিল। যেহেতু বছরের প্রথম মাস- দ্ইু সফরের পরে, দুই রবি ও দুই জুমাদা ছিল এবং দুই সফরের প্রথমটি অলঙ্খনীয় পবিত্র মাসগুলোর (আশহুরে হুরুম) অন্যতম ছিল বলে এর গুণ বাচক নাম দেয়া হয়েছিল ‘মহররম’। কালক্রমে এই গুণ বাচক আখ্যাটিই প্রথম মাসের নাম হয়ে গেছে এবং মহররম মাস থেকেই আরবী ইসলামী বছরের গণনা শুরু হয়েছে। আল কোরআনে ৯নং সূরা তাওবাহ এর ৩৬ ও ৩৭নং আয়াতে এ বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।

মহররম মাসের ৩০ দিনের মধ্যে প্রথম তারিখটি বছরের প্রারম্ভ বলে সুবিখ্যাত। তাছাড়া নিম্নলিখিত তারিখগুলোও বিশেষভাবে ইতিহাসে খ্যাতি লাভ করেছে। যথা : (ক) এ মাসের ৯ ও ১০ তারিখে সিয়াম পালন করার নির্দেশ হাদীস শরীফে আছে। এই দিনে রাসূলুল্লাহ (সা.) রোজা রেখেছেন। (খ) এ মাসে ১০ তারিখে ঐতিহাসিক কারবালা বার্ষিকী পালিত হয়। এই তারিখে সাইয়্যেদে শাবাবে আহলে জান্নাত ইমাম হুসাইন বিন আলী (রা.) বিন আবু তালিব কারবালা প্রান্তরে খলিফা ইয়াজীদ বিন মুয়াবিয়া (রা.) এর বিরুদ্ধে য্দ্ধু করে শাহাদাতবরণ করেন। (গ) এই মাসের ১৭ তারিখ আবরাহা বাদশার হস্তি বাহিনী কাবাঘর ধ্বংস করতে আক্রমণ চালিয়ে ছিল এবং আবাবিল পাখির কঙ্কর নিক্ষেপের ফলে সমূলে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। এ ছাড়াও অগণিত ঘটনা মহররম মাসে ঘটেছে। কালের খাতায় ইতিহাসের পাতায় সে সকল ঘটনা প্রভাত সূর্য্যরে মতো সমুজ্জল হয়ে রয়েছে।

বস্তুত : অলঙ্ঘনীয় পবিত্র মাস মহররম এর মর্যাদা ও সম্মানের কথা আল কোরআনের ২নং সূরা বাকারাহ এর ১৯৪ ও ২১৭নং আয়াতে বিবৃত হয়েছে। তাছাড়া আল কোরআনের ৫নং সূরা মায়িদাহ এর ২নং ও ৫৭নং আয়াতে এই মাসের সম্মান এবং মর্যাদার প্রতি সুস্পষ্ট ইঙ্গিত প্রদান করা হয়েছে। সুতরাং সকল মোমিন মুসলমাদের উচিত এ মাসের সম্মান ও মর্যাদাকে উচ্চকিত করার লক্ষে ইবাদত-বন্দেগি ও রিয়াজত-মোজাহাদায় আত্মনিয়োগ করা। আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত আমাদের জন্য তৌফিক এনায়েত করুন- এটাই আজকের একান্ত প্রত্যাশা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন