লকডাউনের কঠোর বিধি নিষেধ নেই, নেই কোন অভিযান। চিরচেনা পরিবেশে-প্রতিবেশে এখন পুরোদমে ব্যস্ত সিলেট নগরী। খুলেছে দোকানপাট, চলছে গণপরিবহন। কর্মব্যস্ততায় ক্ষণিকেই যেন মুছে গেছে লকডাউনের সব চাপ। আজ বুধবার (১১ আগস্ট) সকালে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে ব্যাপক প্রাইভেট কার, সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে। এদিকে নগরের আম্বরখানা, লামাবাজার, জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার ঘুরে যানজট দেখা গেছে। এছাড়া প্রতিটি সড়কের মোড়েই দেখা গেছে মানুষের জটলা। তবে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না সাধারণ মানুষ। এদিকে সকালে সিলেটের জিন্দাবাজার, নয়াসড়ক, কুমারপাড়া এলাকা ঘুরে ব্যবসায়ীদের দোকানপাট খোলার প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে। আরও দেখা যায় অনেকে দোকানে সাফ-সাফাইয় ও ধোয়া মোছার কাজ করছে। কেউ কেউ আবার দোকান খুলে ভেতরে করছে গোছগাছ। তবে দোকানপাট ও শপিংমল খোলার অনুমতি পেয়ে তাদের মুখে হাসি ফুটেছে। সকাল থেকেই সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় পরিবহন শ্রমিকদের হাক ডাক শুরু হয়েছে। এছাড়া সকাল থেকেই যাত্রীরা আসা শুরু করেছে এই ব্যস্ততম বাস টার্মিনালে। প্রাণ ফিরে পেয়েছে সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল। চলছে দূরপাল্লা ও স্বল্প দূরত্বের পরিবহণও। সেই সাথে মোড়ে মোড়ে দেখা গেছে যানজট। সকালে সিলেটের এই বাস টার্মিনাল ঘুরে কাউন্টারগুলোতে এমন কর্মচাঞ্চল্যের তৎপরতা দেখা গেছে। এদিকে, লকডাউন শিথিল হওয়াতে খুশির কথা জানিয়েছেন পরিবহন খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের সৌদিয়া পরিবহনের চালক আজির উদ্দিন বলেন, লকডাউনে মাথায় হাত উঠেছিল, বাচ্চাদের মুখে খাবার দিতে হিমশীম খেয়েছি। গাড়ি চলবে, অনেকটা চিন্তামুক্ত হলাম। সকালে সিলেট থেকে আমাদের পরিবহন ছেড়ে গেছে। সরকার বিধিনিষেধ তুলে দেওয়ায় আমরা খুশি। এদিকে, ফের ট্রেন চলাচল শুরু করেছে সিলেট। শতভাগ যাত্রী নিয়ে সিলেট থেকে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে ট্রেন। তবে বিধিনিষেধ শেষে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট কাউন্টারগুলোতে তেমন ভিড় দেখা যায়নি। কিন্তু স্টেশনে শারীরিক দূরত্ব মানার চেয়ে বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। ট্রেন ছাড়ার আগে প্রতিটি যাত্রীর হাত স্যানটাইজ করা হচ্ছে। মাপা হচ্ছে শরীরের তাপমাত্রা।
সিলেট রেলস্টেশনের ম্যানেজার খলিলুর রহমান বলেন, ‘ট্রেন চলাচল শুরু থেকে অন্য সময়ের মতো এবারও স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী আনা-নেওয়া করছি আমরা। প্রতিটি যাত্রীকে হেক্সিসল দেওয়া হচ্ছে। যাত্রীদের তাপমাত্রা মেপে ভেতরে ঢোকানো হচ্ছে। আমাদের এখানে কোন স্ট্যান্ড টিকিট দেওয়া হচ্ছে না।’ বিধিনিষেধ শিথিল কার্যকরে আজ সকাল থেকে সব ধরনের গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়েছে। এছাড়া নির্দেশনা অনুযায়ী শপিংমল, মার্কেট ও দোকানপাট সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে খোলা রাখা যাবে। শিল্প-কারখানা চালু থাকবে। খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁয় অর্ধেক আসন খালি রেখে সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন