শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী জীবন

আজানের মাধ্যমে আমরা যে শিক্ষা পাই

মাওলানা শামসুল আরেফী | প্রকাশের সময় : ১৩ আগস্ট, ২০২১, ১২:০১ এএম

আজান শুনতে কার না ভালো লাগে। অনেক সময় এমনো তো হয়। আজানের অপূর্ব সুরের মূর্ছনায় আমাদের অন্তরে স্মরণ হয়ে যায়, সেই অনন্ত আসীম জীবনের কথা।যেইখানে আমারা অবস্থান করবো যুগের পর যুগ। যার কোনো অন্ত নেই।সই অসীম। অনন্তের পথে পারি জমাতে হবে আমাদেরকে এদুনিয়ার সকল পাঠ চুকিয়ে অযাচিত ভাবেই কোনো একদিন । আর আমরা আদিগন্তের কথা ভুলে গিয়ে বিভ্রম হয়ে ছুটোছুটি করছি।সেই আধিপত্যের মালিক আল্লাহ তায়ালার অবাধ্যতা করে।
আমরা রোজ পাঁচবার রবের সাক্ষাতে ধন্যহয়। স্বস্তি পাই আমাদের তনু মন। দুনিয়ার সকল দুঃখ যাতনা ভেদ করে আন্তরে আনায়ন করে স্বস্তি । মুয়াজ্জিন কী সুমধুর কন্ঠে আহ্বান করে। রবের দরবারে সাক্ষাতের কি এক অসম্ভব সুন্দর আহ্বান। যারপরনাই আল্লাহর স্মরণ হতেই অন্তরের মধ্যে কম্পন সৃষ্টি হয়।ধুকপুক করে সেই ছোট্ট হৃদপিন্ডটাও।
কারণ এটা যে দুনিয়ার কোনো রাজা মন্ত্রীর ডাক নই বরং এরচেয়েও আরো অনেক বড় মহান সত্ত্বার ডাক। যার হুকুমে বইয়ে চলে মেঘমালা এবং প্রবাহিত বাতাস এমনকি সমুদ্রের বিশাল উত্তাল ঢেউয়ের তরঙ্গমালা। এই ডাক যে সেই স্রষ্টার পক্ষ থেকে। সেই আজানের ধ্বনিগুলো নিরন্তর আমাদেরকে মনে রেখাপাত ঘটাই। আমাদেরকে মুয়াজ্জিন একথাও বলে দেয় যে, তোমরা রবের দিকে মনোনিবেশ করো।বিনয়ী ও নম্রতার সাথে জীবন রথের সিঁড়িতে আরোহণ করার প্রবল মনোবাসনা নিয়ে।
বাক্যগুলো কি নিদারুন। এই শব্দের ভেতরে লুকায়িত আছে সফলতার চাবি কাঠি।আজানের বাক্যাংশের মাধ্যমে একথার শিক্ষাও পেয়ে থাকি আমরা।ইহকালীন জীবনে কার আনুগত্যই করবো আর কার ইবাদতে নিজেকে মশগুল রাখবো সেই কথাও।কত চমৎকার শিক্ষা আমরা রোজ পাঁচবার পাই। মুয়াজ্জিন আমাদেরকে এ কথা বলে দেয় যে, নামাজের জন্য এসো এটাতেই সুখ এটাতেই দুনিয়া পরকালের যত প্রাপ্তি। তাই নামাজের মাধ্যমে যত চেয়ে নিতে পারো।
আজানের মাধ্যমে আমরা ইবাদত করার খোরাক পাই। আরো পাই আগ্রহ উদ্দীপনা ।নামাজের দিকে মনোনিবেশ করার একটি অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে আজান। রবের পক্ষ থেকে এই ডাক। এটা যে দুনিয়ার কোনো বানানো কথা নই। যা আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে স্বপ্নের মাধ্যমে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দান করা হয়েছে। ইসলামের প্রাথমিক যুগে মুসলমানদের সংখ্যা ছিলো একেবারে লঘু।হেতু নামাজের ঘোষণা দেয়ার প্রয়োজন ছিলো না। আর তখন সাহাবিরা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে উপস্থিতই থাকতেন। তাই ঘোষণা দেওয়ার প্রয়োজন তেমন একটা হতো না।
কিন্তু হিজরতের পর যখন মুসলমানদের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়তে লাগলো।তখন সবার জন্য একই সময়ে উপস্থিত হওয়াটা অসুবিধে দেখা দেয়।সবাই যাতে একই সময়ে উপস্থিত হতে পারেন।তা নিয়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবিদের সাথে পরামর্শ সভায় বসলেন।তখন সেই পরামর্শ বৈঠকে কেউ আগুন জ্বালানোর মাধ্যমে লোকদিগকে আহŸানের কথা বলবেন। আবার কেউ বললেন শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়ার জন্য। কেউ কেউ আবার বললো ঘন্টা বাজানোর কথা। কিন্তু আগুন জ্বালানো তো অগ্নিপূজকদের রীতি।শিঙ্গায় ফুঁকানো ইহুদিদের নীতি।ঘন্টা বাজানো খৃস্টানদের প্রন্থা।
ফলে নিমিষেই সেসব প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায় এবং ঐদিন কোনো সমাধান ছাড়াই সবাই সবার ঘরে ফিরে যায়।
সে রাতে একজন সাহাবি স্বপ্নে দেখেন এক ব্যক্তি তার সম্মুখ দিয়ে অতিক্রম করছে। তাকে উদ্দেশ্য করে বলা হলো এই শিঙ্গাটি আমার কাছে বিক্রি করবে? তিনি বললেন আপনি এটা দিয়ে কি করবেন! আমি বললাম মানুষকে নামাজের জন্য ডাকবো।তিনি বললেন তার চেয়ে ভালো হবে আমি আপনাকে কিছু চমকপ্রদ বাক্য শিখিয়ে দেই।ফলে তিনি সেই সাহাবিকে আজানের বাক্যগুলো শিখিয়ে দেন।
যিনি স্বপ্নে এমনটি দেখে ছিলেন তার নাম হচ্ছে আব্দুল্লাহ বিন যায়েদ বিন আব্দে রাব্বি। সেখান থেকেই রীতিমতো আজানের প্রচলন ঘটে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
Md.Rezaul Karim ১ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১১:৩৬ এএম says : 0
আমরা যারা মুসলমান আমাদের উচিত আজান শোনা ও তার জবাব এবং নামাজ পড়া
Total Reply(0)
Ibrahim khalill ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৭:৪৭ পিএম says : 0
আমাদের প্রত‍্যোকের উচিৎ আযান থেকে শিক্ষা নেওয়া
Total Reply(0)
মোঃ গোলাম ছরোয়ার ১ অক্টোবর, ২০২১, ৭:৫১ পিএম says : 0
নামাজ বেহেশতের চাবি,না পড়লে জাহান্নাম। আল্লাহ্ সানিধ‍্য পেতে হলে সব মুসলিমদের নামাজ পড়া ফরজ।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন