বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

আজ জাতির শোকের দিন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ আগস্ট, ২০২১, ১২:০২ এএম

আজ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোকের দিন। জাতির ইতিহাসের কলঙ্কেরও। যে মহান পুরুষ বাঙালি জাতিকে ‘স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ’ উপহার দিয়েছিলেন; ১৯৭৫ সালের এই দিন ভোরে তাকেই সপরিবারে হত্যা করেন একদল বিপথগামী সেনাসদস্য। সেদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে তারা শুধু বাঙালি জাতিকেই কলঙ্কিত করেননি, বাধাগ্রস্ত করেছিলেন সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নকে। বিশ্ব দরবারে জাতির মাথা ন্যূইয়ে দিয়েছিল সেই পৈচাশিক ঘটনা। অথচ বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির মহানায়ক স্বাধীনতা সংগ্রাম শেষে তখন ক্ষতবিক্ষত অবস্থা থেকে দেশ পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করতে ব্যস্ত ছিলেন। তখনই ঘটানো হয় ইতিহাসের নির্মম এ ঘটনা। দিবসটি উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন বাণী দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট তার বাণীতে বঙ্গবন্ধুর নীতি-আদর্শ ও জীবনী থেকে শিক্ষা নিয়ে করোনা সঙ্কটময় মুহূর্তে দেশবাসীর পাশে দাঁড়ানোই হবে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানানোর উত্তম প্রয়াস। প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, জাতির পিতার বিচারের রায় কার্যকর করেছি; জাতির পিতা হত্যার যড়যন্ত্রের পেছনে কারা ছিল সেটাও একদিন বের হয়ে আসবে।

১৫ আগস্টের সেই নির্মম পৈচাশিক রক্তাক্ত ঘটনার বর্ণনা কবি রফিক আজাদের কলমে উঠে এসেছে। কবি ‘এই সিঁড়ি’ কবিতায় লিখেছেন ‘সিঁড়ি ভেঙে রক্ত নেমে গেছে/ স্বপ্নের স্বদেশ ব্যেপে/ সবুজ শস্যের মাঠ বেয়ে/ অমল রক্তের ধারা/ বয়ে গেছে বঙ্গোপসাগরে।’

‘এবাবের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম/ এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ হুংকার দিয়ে একদিন যে মহানায়ক বাঙালি জাতিকে জাগিয়ে তুলেছিলেন; স্বাধীন বাংলাদেশে সেই মহানায়ককে চিরদিনের জন্য নিস্তেজ করে দেয় ঘাতকরা ধানমন্ডির ৩২ নম্বর ঐতিহাসিক সেই বাড়িতেই।

জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আজ বাংলাদেশের মানুষ মহান নেতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে দিবসটি পালন করবে। তবে, এবারও বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতপূর্বক স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি পালন করা হবে।

বাংলার অবিসংম্বাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান। ’৪৭ সালের দেশ ভাগ, ’৫২ ভাষা আন্দোলন, ’৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন, ’৬৯ গণঅভ্যুত্থান, ’৭১ পাকিস্তান বাহিনীর হাতে গ্রেফতারসহ বিভিন্ন সময়ে মৃত্যুর হাত থেকে বারবার ফিরে এসেছিলেন। যাকে কারাগারে রেখেও ’৭১-এ পাকিস্তানী হানাদার হত্যা করতে পারেনি, সেই কাজটি অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় ও পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে সম্পাদন করে দেশের কিছু ঘাতক। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোর রাতে সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপদগামী সদস্য ধানমন্ডির বাসভবনে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে জাতির ইতিহাসে কালো অধ্যায়ের জন্ম দেয়। সেদিন ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ হারিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল। পৃথিবীর এ জঘন্যতম হত্যাকান্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর অনুজ শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ ও মেয়ে বেবি, সুকান্তবাবু, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি এবং আবদুল নাঈম খান রিন্টুসহ পরিবারের ঘনিষ্ঠজন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় প্রাণে রক্ষা পান।

ক্যালেন্ডারের পরিক্রমায় প্রতি বছর ঘুরে ১৫ আগস্ট দিনটি আসে বাঙালির হৃদয়ে শোক আর কষ্টের দীর্ঘশ্বাস হয়ে। পুরো জাতি গভীর শোক ও শ্রদ্ধায় এই শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে। এ বছর করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতিতেও জাতীয় শোক দিবসকে যথার্থ সম্মান, মর্যাদা এবং ভাবগাম্ভীর্যে পালন করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ঐতিহাসিক ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন। টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দলের শ্রদ্ধা নিবেদন। এছাড়াও, দিবসটি উপলক্ষে দেশের সকল মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডায় বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। ১৬ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। জাতীয় দৈনিক ও সাময়িকীতে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদফতর ও সংস্থা জাতীয় শোক দিবসের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্ব স্ব কর্মসূচি প্রণয়ন করেছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে জাতীয় শোক দিবস পালনের জন্য সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতপূর্বক স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়েছে।

মূলত, ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডের পর থেকেই বাংলাদেশে এক বিপরীত ধারার যাত্রা শুরু করে। বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করে সামরিক শাসনের অনাচারি ইতিহাস রচিত হতে থাকে।
সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর গোটা বিশ্বে নেমে আসে তীব্র শোকের ছায়া এবং ছড়িয়ে পড়ে ঘৃণার বিষবাষ্প। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর নোবেল জয়ী পশ্চিম জার্মানীর নেতা উইলি ব্রানডিট বলেছিলেন, ‘মুজিবকে হত্যার পর বাঙালিদের আর বিশ্বাস করা যায় না। যে বাঙালি শেখ মুজিবকে হত্যা করতে পারে তারা যে কোনো জঘন্য কাজ করতে পারে।’ ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ও বিশিষ্ট সাহিত্যিক নীরদ সি চৌধুরী বাঙালিদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, ‘বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ মুজিবকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি বিশ্বের মানুষের কাছে নিজেদের আত্মঘাতী চরিত্রই তুলে ধরেছে।’

দ্য টাইমস অব লন্ডন এর ১৯৭৫ সালের ১৬ আগস্ট সংখ্যায় উল্লেখ করা হয় ‘সবকিছু সত্তে¡ও বঙ্গবন্ধুকে সব সময় স্মরণ করা হবে। কারণ, তাকে ছাড়া বাংলাদেশের বাস্তব কোনো অস্তিত্ব নেই। একই দিন লন্ডন থেকে প্রকাশিত ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের লাখ লাখ লোক শেখ মুজিবের জঘন্য হত্যাকান্ডকে অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে বিবেচনা করবে।’

শেখ মুজিবের সুচিন্তা থেকে আজকের বাঙালিরও শেখার আছে উল্লেখ করে ভারতীয় বাঙালি নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন সম্প্রতি বলেছেন, তাকে ‘বাংলাদেশের জনক’ বা বঙ্গবন্ধু বলাটা নিতান্তই কম বলা। তিনি এর চেয়ে বড় কোনও অভিধা এবং নাম কিনতে চাননি। মানুষ তাকে অন্তর থেকে ভালোবাসতেন।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সঘোষিত প্রেসিডেন্ট খন্দকার মোশতাক আহমেদ বিচারের হাত থেকে খুনিদের রক্ষা করতে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করেন। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্সকে আইন হিসেবে অনুমোদন করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সুদীর্ঘ একুশ বছর পর ক্ষমতায় আসলে ১৯৯৬ সালের ১৪ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তিন প্রধান আসামি বরখাস্ত লে. কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী তাহের উদ্দিন ঠাকুরকে গ্রেফতার করা হয়। একই বছরের ২ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর একান্ত সহকারী (পিএ) এএফএম মোহিতুল ইসলাম পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সংঘটিত নারকীয় হত্যাকান্ডের ঘটনায় থানায় একটি এফআইআর করেন।

১৯৯৬ সালের ১৪ নভেম্বর খুনিদের বিচারের আওতায় আনতে পার্লামেন্টে ইনডেমনিটি আইন বাতিল করা হয়। ১৯৯৭ সালের ১৫ জানুয়ারি সিআইডি এই মামলায় ২০ জনকে অভিযুক্ত করে মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে চার্জশিট দাখিল করে এবং একই বছরের ১২ মার্চ ৬ আসামির উপস্থিতিতে আদালতে বিচার শুরু হয়।

১৯৯৭ সালের ১৯ জুন পর্যন্ত বিচারক বিব্রত হওয়াসহ স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের নানা বাধার কারণে ৮ বার বিচার কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। এভাবে দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর মামলার রায়ে বিচারক কাজী গোলাম রসুল ১৫ জন সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন। অন্যদিকে, ২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট বেঞ্চ ২৪ দিনের শুনানি শেষে বিভক্ত রায় প্রদান করে। বিচারক এম রুহুল আমিন অভিযুক্ত ১৫ আসামির মধ্যে ১০ জনের মৃত্যুদন্ডাদেশ বজায় রাখেন। কিন্তু অপর বিচারক এবিএম খায়রুল হক অভিযুক্ত ১৫ জনকেই সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন।

পরবর্তীতে ২০০১ সালের অক্টোবরের সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এলে বিচার কাজ বন্ধ থাকে। দীর্ঘ ৬ বছর পর ২০০৭ সালের ২৩ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষের মুখ্য আইনজীবী সুুপ্রিম কোর্টে সংক্ষিপ্ত বিবৃতি প্রদান করেন এবং ২৩ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ ২৭ দিনের শুনানি শেষে ৫ আসামিকে নিয়মিত আপিল করার অনুমতি দানের লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন।

২০০৯ সালের ১২ নভেম্বর-২৯ দিনের শুনানির পর চূড়ান্ত আপিল শুনানি শেষ হয় এবং আদালত ১৯ নভেম্বর রায়ের তারিখ নির্ধারণ করেন। ওইদিন (১৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রেখে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ৫ আসামির দায়ের করা আপিল আবেদন খারিজ করা হয়। ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি আপিলের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের রিভিউ খারিজ হয়ে গেলে ২৮ জানুয়ারি ৫ আসামির ফাঁসির রায় কার্যকর করে জাতিকে দায়মুক্ত করা হয়।

২০১০ সালের পর গত বছরের (২০২০) ১২ এপ্রিল ভারতে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর আরো একজন খুনি আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যার ৪৫ বছর, নৃশংস ওই হত্যাকান্ডের মামলার ২৫ বছর এবং উচ্চ আদালতের রায়ে ৫ আসামির ফাঁসি কার্যকরের প্রায় ১০ বছর পর গ্রেফতার হয় খুনি মাজেদ।

প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী
প্রেসিডেন্ট তার বাণীতে বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা ও মহান স্বাধীনতার রূপকার। বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু ছিলেন আপসহীন। ফাঁসির মঞ্চেও তিনি বাংলা ও বাঙালির জয়গান গেয়েছেন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার উদ্দেশে বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’, যা ছিল মূলত স্বাধীনতারই ডাক। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। জাতির পিতার নাম এ দেশের লাখো কোটি বাঙালির অন্তরে চির অমলিন, অক্ষয় হয়ে থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যা করলেও তার স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি। স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং উন্নয়ন ও গণতন্ত্রবিরোধী চক্রের যে কোনো অপতৎপরতা-ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে।

জাতীয় শোক দিবসে প্রধানমন্ত্রী সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ এবং ১৫ আগস্টের সকল শহিদকে এবং মহান আল্লাহর দরবারে তাদের রূহের মাগফিরাত কামনা করে বলেন, জাতির পিতার দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাঙালি জাতি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ছিনিয়ে এনেছিল মহান স্বাধীনতা। সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু যখন সমগ্র জাতিকে নিয়ে সোনার বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে নিয়োজিত, তখনই স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী চক্র তাকে পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ হত্যা করে। এই হত্যার মধ্য দিয়ে তারা বাঙালির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করার অপপ্রয়াস চালায়। ঘাতকদের উদ্দেশ্যই ছিল অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামাকে ভেঙে আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে ভ‚লুণ্ঠিত করা। এই জঘন্য হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত স্বাধীনতাবিরোধী চক্র ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই হত্যা, ক‚্ ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে। তারা ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথকে বন্ধ করে দেয়। তিনি জাতির পিতা হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করার আহ্বান জানিয়ে আরো বলেন, তার আত্মত্যাগের মহিমা এবং দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনাদর্শ আমাদের কর্মের মাধ্যমে প্রতিফলিত করে সবাই মিলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি- জাতীয় শোক দিবসে এই হোক আমাদের সুদৃঢ় অঙ্গীকার।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (11)
Syed Zakir Hossain Qazi ১৫ আগস্ট, ২০২১, ১২:২৩ এএম says : 2
বাংলাদেশ নামক দেশটির সৃষ্টির মহানায়ক !! আমার বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছি ।
Total Reply(0)
Linkon Islam ১৫ আগস্ট, ২০২১, ১২:২৩ এএম says : 2
"ওরা ভেবেছিল তোমাকে হত্যা করলেই হয়ে যাবে সব শেষ, ওরা বুঝতে পারেনি বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ " জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ তার পরিবারের সকল শহীদদের কে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি সেই সাথে তাদের মাগফেরাত কামনা করছি আল্লাহ যেন তাদেরকে জান্নাতবাসী করুন।
Total Reply(0)
Sadruzzaman Sadi ১৫ আগস্ট, ২০২১, ১২:২৪ এএম says : 2
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শাহাদাত বরণকারী সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি।
Total Reply(0)
Mdbablu Mdbablu ১৫ আগস্ট, ২০২১, ১২:২৪ এএম says : 2
আজকে জাতীয় শোক দিবস আল্লাহ যেন সবাইকে বেস্ত নসিব করে আমিন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কে যারা মেরেছে তাদের যেন বিচার হয় আল্লাহর আদালতে ।
Total Reply(0)
Sheikh Hanif ১৫ আগস্ট, ২০২১, ১২:২৪ এএম says : 2
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ই আগষ্টে সকল শহিদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
Total Reply(0)
ম নাছিরউদ্দীন শাহ ১৫ আগস্ট, ২০২১, ১২:২৪ এএম says : 2
৭৫এর১৫ আগষ্ট ইতিহাসের বর্বরতম জঘন্যতম নিষ্ঠুর দিন।এই দিনে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান স্বাধীনতাকামী মানুষের মহান নেতা ও বঙ্গমাতা তার পরিবার শিশু রাসেল সহ আত্মীয় স্বজনেরা নিষ্ঠুর হায়েনার ভয়ংকর বর্বরতা স্বীকার হয়ে রক্তাক্ত শহীদ। সমগ্র দেশ জাতির গভীর শ্রদ্ধা শ্রদ্ধাঞ্জলি শ্রদ্ধাবোধ নিয়ে আজ জাতীয় শোকের দিন। মহান আল্লাহর দরবার প্রার্থনা ফরিয়াদ দোয়া বঙ্গবন্ধু বঙ্গমাতা তাহার সন্তান আত্মীয় স্বজন অবুঝ শিশু রাসেল সহ মর্মস্পর্শি হত‍্যাকান্ডের স্বীকার সবাই কে আল্লাহ্ যেন জান্নাতুল ফেরদৌসের পবিত্র স্থান দান করেন। আমিন আমিন আমিন চম্মা আমিন।
Total Reply(0)
MD Helal Ahamed ১৫ আগস্ট, ২০২১, ১২:২৪ এএম says : 2
“ঝরেনি সেদিন কৃষ্ণচূড়া, ঝরেছে জাতির জনক এর রক্ত, আগষ্ট শোকে সিক্ত আমি,শেখ মুজিবের ভক্ত” বিনম্র শ্রদ্ধা...
Total Reply(0)
সুমাইয়া আক্তার ১৫ আগস্ট, ২০২১, ১২:২৫ এএম says : 2
রক্তে ভেজা শিক্ত মাটি বিবর্ন এই ঘাস, বুকের মাঝে রাখা আছে পিতা মুজিবের লাশ �বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ্যে থেকে ১৫ই আগষ্ট জাতীয় শোক দিবসে সকল শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।
Total Reply(0)
Mohammad Raju Ahmed Ansari ১৫ আগস্ট, ২০২১, ১২:২৫ এএম says : 2
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শাহাদাত বরণকারী সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। বাংলাদেশ নামক দেশটির সৃষ্টির মহানায়ক !! আমার এদেশের কুটি মানুষের বুকে মুজিব নিয়েছে ঠাঁই
Total Reply(0)
G S Mosaraf Hossain ১৫ আগস্ট, ২০২১, ১২:২৫ এএম says : 2
"খুনীদের রক্তের স্রোতে যদি প্লাবিত হয় এইদেশ" তবুও পিতা, তোমার রক্তের ঋন শোধ হবে না শেষ" ১৯৭৫ইং এর ১৫ই আগষ্ট জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু সহ সকল শহীদের প্রতি- বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলী
Total Reply(0)
Shahin Hassan ১৫ আগস্ট, ২০২১, ১২:২৬ এএম says : 2
এটা গোটা জাতির জন্য এক কলঙ্কীত দিন, আমি একজন স্বাধারন নাগরিক হিসাবে জাতির জনকের রেখে যাওয়া পরিবারের অংস বিষেশ করে মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী ও তার বোন রেহানার প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি শ্রদ্ধাভরে, আর ওই কালদিনে হত্যজঙ্গের শিকার জাতির জনক সহ সবার মাগফেরাত কামনা করছি।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন