বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বঙ্গবন্ধু একটি জাগ্রত ইতিহাস, বর্ণিল ঐশ্বর্য : অর্থমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ আগস্ট, ২০২১, ১২:০০ এএম

আগস্ট মাস বাঙালি জাতি তথা বাংলাদেশের জন্য শোকের মাস। হৃদয়ের রক্তক্ষরণের মাস; অনুভূতি, উপলব্ধি ও মননশীলতার পরতে পরতে অসহ্য ও তীক্ষ্ন যন্ত্রণা বয়ে যাওয়ার মাস। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোকের দিন। বাংলার আকাশ-বাতাস আর প্রকৃতিও অশ্রুসিক্ত হওয়ার দিন। পঁচাত্তরের এই দিনে আগস্ট আর শ্রাবণ মিলেমিশে একাকার হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর রক্ত আর আকাশের মর্মছেঁড়া অশ্রুর প্লাবনে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু একটি নাম নয়, বঙ্গবন্ধু হলেন একটি জাগ্রত ইতিহাস।

একটি স্বাধীন জাতিসত্তার অপরিমেয় অহংকার, বর্ণিল ঐশ্বর্য- অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গতকাল অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) আয়োজিত স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর ৪৬তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ইতিহাসের জগন্যতম সেই কালরাতে ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশু শেখ রাসেলসহ পুত্রবধ‚ সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল। পৃথিবীর এই ঘৃণ্যতম হত্যাকান্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর সহোদর শেখ নাসের, ভগ্নীপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, ভাগ্নে যুবনেতা ও সাংবাদিক শেখ ফজলুল হক মনি, তার অন্তঃসত্তা সহধর্মিণী আরজু মনি ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও আত্মীয়-স্বজন। সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপথগামী সদস্য সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্বে নেমে আসে তীব্র শোকের ছায়া, সারা বিশ্ব হতবাক হয়ে যায় এবং ছড়িয়ে পড়ে ঘৃণার বিষবাষ্প।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৭ থেকে ৭১-এই দীর্ঘ পথপরিক্রমণে একেকটি আন্দোলনের সোপান উত্তরণের মাঝে একেক গুচ্ছ তরুণ তাজা তপ্ত প্রাণ অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছেন। কিন্তু এ সব কিছুরই পরোক্ষ এবং প্রত্যক্ষ প্রতীক ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর পুরো জীবনের চেতনার সমস্ত অংশটুকু ছিল রাজনীতির সমুদ্রের অতলান্তে নিমজ্জিত, এমনকি ব্যক্তিগত জীবনের প্রেম-ভালোবাসা, চাওয়া-পাওয়া সব কিছুই ছিল রাজনৈতিক চেতনার গভীরে নিমগ্ন। তার কালজয়ী নেতৃত্বকে ঘিরেই আবর্তিত হয় প্রতিটি আন্দোলনের স্রোতধারা। জাতির শাণিত শিরায় অকুতোভয় সাহস ছড়িয়ে কোটি কোটি মানুষের ইচ্ছার অনিন্দ্য কুসুম ফুটিয়ে তুলেন তিনি।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের ভৌগলিক মুক্তির পাশাপাশি, অর্থনৈতিক মুক্তির স্বপ্নে সোনার বাংলা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেন। বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজ আজ আমাদের আধুনিক বাংলার রূপকার ও বর্তমান প্রজন্মের কিংবদন্তী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে এগিয়ে চলেছে। ঘাতকরা জানতো না যে, বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলা যায় না, কেননা বাংলাদেশ মানেই বঙ্গবন্ধু আর বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। ন্যায্য, সত্য, কল্যাণ এবং আত্মমুক্তির পক্ষে সোচ্চার উদার হৃদয় মহান মানুষ।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু টুঙ্গিপাড়ার হিজল তমালের সুশীতল ছায়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত থাকলেও বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের কাঠামোর সব স্তরে, জাতীয় পতাকায়, জাতীয় সংগীতে, শস্য ক্ষেতে দোল খাওয়া ফসলে, নদীর কলতানে, পাখির কুজনে তিনি আছেন এবং থাকবেন। বঙ্গবন্ধু আছেন, তিনি থাকবেন বাঙ্গালীর মননে, চেতনায়, ভালোবাসায় অমর অক্ষয় এবং অব্যয় হয়ে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন সভাপতির বক্তব্যে বলেন, ১৫ আগস্ট শোকের দিন, জাতির জন্য একটি কলঙ্কিত দিন একটি কালো অধ্যায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজীবুর রহমান যিনি আমাদেরকে স্বাধনতা এনে দিয়েছিলেন, সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন, আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দিতে চেয়েছিলেন- এই দিনে ঘাতকেরা হত্যা করে সেই সর্বকালের সর্ব শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালীকে। ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে দেশে প্রত্যাবর্তন করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শূন্য থেকে শুরু করেন দেশ বিণির্মাণের কঠিনতম কাজ। ১৯৭২ সালেই তিনি প্রনয়ন করেন বাংলাদেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা। তিনি বাংলাদেশের আর্থসামজিক উন্নয়নের সামগ্রিক পরিকল্পনা প্রনয়ন করেন যার ভিত্তি মূলে আমাদের আজকের বাস্তবতা রূপ লাভ করেছে। অনুষ্ঠানে ১৫ আগস্টের সকল শহীদানদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া পরিচালনা করা হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন