বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

অবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে না দিলে কঠোর আন্দোলন -পীর সাহেব চরমোনাই

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ আগস্ট, ২০২১, ৪:১১ পিএম

অবিলম্বে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে না দিলে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম। আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুমকি দেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এই মানববন্ধনের আয়োজন করে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, ষড়যন্ত্রের নীলনকশা বাস্তবায়নে সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে না। করোনার কারণে নয় বরং জাতির ভবিষ্যৎ ধ্বংসের জন্যই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, দেশের সবকিছু স্বাভাবিক ভাবে চললেও শুধুমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে জাতিকে মেধাহীন করার চক্রান্ত চলছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, হাটবাজার, কলকারখানা, গণপরিবহন ও বিনোদন কেন্দ্রসহ সবকিছু খোলা থাকলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ কেন? তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে ২ সেপ্টেম্বর সারাদেশে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী ও মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ। বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন ও অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান ও ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, ইশা ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছাত্রনেতা নূরুল করীম আকরাম, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, আলহাজ আব্দুল আউয়াল মজুমদার, ডা. শহিদুল ইসলাম ও মুফতী ফরিদুল ইসলাম।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, বিশ্বের যে সকল দেশে করোনা মহামারি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে সে দেশগুলোতেও ইতোমধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়েছে। এমনকি পার্শ¦বর্তী দেশ ভারতের অধিকাংশ জায়গায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়েছে। আমাদের দেশেও বিশেষজ্ঞগণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছে। কিন্তু সরকার সেদিকে কোন কর্ণপাত করছে না। তিনি বলেন, দেশের অভিভাবকগণও আমাদের কাছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে আসছে। আমরাও শান্তিপূর্ণভাবে সরকারের কাছে বার বার দাবি জানিয়ে আসছি। এখন দেশের ভবিষ্যৎ-এর কথা চিন্তা করে আমরা রাজপথে নেমে এসেছি। অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে না দিলে পর্যায়ক্রমে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে। সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, কোনো এক নীলনকশা, কালোনকশা বাস্তবায়ন করার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সরকারকে পরিষ্কারভাবে বলব, আমরা ভালোভাবে চিন্তা করে দেখেছি- শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করোনার কারণে নয়, অন্য কোনো উদ্দেশ্যে নীলনকশা, কালোনকশা অনুযায়ী বন্ধ রাখা হয়েছে। এই দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের সন্তানদের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য আমরা রাস্তায় নেমে এসেছি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না খোলা পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাব না। আমরা প্রয়োজনে রক্ত দেবো, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে ছাড়ব।’ পীর সাহেব বলেন, অবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিন। নইলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। তিনি বলেন, ‘তামাম পৃথিবীর মধ্যে সম্মান সহকারে, মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং পূর্ব শর্ত হলো আমাদের সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা। তারা তামাম পৃথিবীতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে এটাই আমাদের স্বপ্ন। কিন্তু সেই সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে দেয়ার জন্য ভিনদেশি কোনো শক্তি করোনার অজুহাতে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখার পরামর্শ দিচ্ছে। আর সরকার সেই পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করছে। এটা হতে দেয়া যাবে না।’ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে ‘ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান স্থাপনে সরকারের অনুমতি প্রয়োজন’ মর্মে উত্থাপিত প্রস্তাবে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে পীর সাহেব বলেন, এতে নতুন মসজিদ-মাদরাসা প্রতিষ্ঠার পথ চরমভাবে সঙ্কুচিত হবে। এটা ইসলামের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র। দেশকে ইসলামশূন্য করার অংশ হিসেবেই এধরণের আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তিনি সরকারকে হুশিয়ার করে বলেন, এদেশ নাস্তিকদের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়নি। দেশ পরিচালনার জন্য নাস্তিকদের লীজ দেয়া হয়নি। প্রিন্সিপাল মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেন, করোনায় যখন পুরো বিশ্ব বিপর্যস্ত তখন সরকার জোর করে দেশ চালানোর ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। সরকার জনগণের সরকার নয়, ভোট ডাকাতি ও রাতের আধারে ভোট চুরির সরকার। তিনি জাতিকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জানান। মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে মানবসম্পদ ধ্বংস করার চক্রান্তে মেতে উঠেছে সরকার। তিনি অবিলম্বে কওমি মাদরাসাসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া দাবি জানান।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
করিম ৩১ আগস্ট, ২০২১, ৬:১৯ পিএম says : 0
সহমত
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন