শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

আত্মরক্ষামূলক নয়, রাশিয়া এখন আক্রমণাত্মক নীতির অনুসারী

প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : সপ্তাহান্তে সিরিয়ার লাতাকিয়ায় নিজ বিমানঘাঁটিতে সম্পূর্ণ নতুন ও সর্বাধুনিক সামরিক বিমানবহর সু-৩৫ ফ্লাঙ্কারই পাঠিয়েছে রাশিয়া। এর আগে গত শুক্রবার সু-৩৪ ফুলব্যাক রুশ বোমারু বিমানের বিরুদ্ধে আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ করে তুরস্ক। রাশিয়ার বিরুদ্ধে এটি ছিল দেশটির নতুন দফা আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগের ঘটনা। তুর্কি আকাশসীমা লঙ্ঘনের সাম্প্রতিকতম ওই অভিযোগ ওঠার প্রেক্ষাপটে লাতাকিয়া বিমানঘাঁটিতে রাশিয়ার তরফে সর্বাধুনিক ওই সামরিক বিমান পাঠানোর ঘটনা ঘটল। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এসবের মাধ্যমেই তুরস্ক ও ন্যাটোর কাছে এ কড়া বার্তাই রাশিয়া পাঠাতে চায় যে, তারা এখন আত্মরক্ষামূলক নয় বরং আক্রমণাত্মক নীতির অনুসারী।
গত নভেম্বরে রুশ যুদ্ধবিমান সু-২৪-এর বিরুদ্ধে ২০ সেকেন্ড আকাশসীমা লঙ্ঘনের প্রথম অভিযোগ তুলে তা গুলি করে ভূপাতিত করেছিল তুরস্ক। সেই থেকে আঙ্কারার সঙ্গে মস্কোর সম্পর্কের বরফ জমাট বাঁধা শুরু। ওই বরফ এখনো গলেনি। যদিও ভিনদেশের যুদ্ধবিমানের আকাশসীমা লঙ্ঘন বা সতর্কতা উপেক্ষা করার ঘটনায় দোষী বিমান ভূপাতিত করার আইনসম্মত অধিকার তুরস্কের রয়েছে, তবু স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে রুশ বিমানকে গুলি করে আঙ্কারা খুবই আগ্রাসী অবস্থান নিয়েছে। এ পদক্ষেপ রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে দ্বিগুণ জোরালো জবাব দিতে দৃশ্যত উৎসাহিত করেছে। বহির্বিশ্বে নিজ শক্তিমত্তার বার্তা দেওয়ার চেয়েও যেটা প্রেসিডেন্ট পুতিনের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো রুশ জনগণকে নিজেদের নিরাপত্তার ব্যাপারে আশ্বস্ত করা। সেটি মাথায় রেখে সিরিয়া অভিযানে অংশগ্রহণকারী রুশ বিমানের নিরাপত্তায় সেখানে এরই মধ্যে অত্যাধুনিক এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপের উপযোগী ক্ষেপণাস্ত্র সজ্জিত যুদ্ধবিমানগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে তুর্কি সীমান্ত ঘেঁষে আত্মরক্ষামূলক মহড়া চালাতেও।
এদিকে বারবার তুরস্কের আকাশসীমায় বিমান ঢুকিয়ে রাশিয়া আঙ্কারাকে এ বার্তা পাঠাতে চায়, মস্কো কোনো কিছু পরোয়া করে না এবং সিরিয়া ও এর বাইরে ক্রমাগত নিজ আধিপত্য বৃদ্ধির ওপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে সে আগ্রহী। একদিকে আকাশসীমা লঙ্ঘন, অন্যদিকে ব্যাপক প্রাণঘাতী হামলায় সক্ষম যুদ্ধবিমান সিরিয়ায় পাঠিয়ে ওই বার্তাকেই আরও শান দিয়েছে রাশিয়া। ইঙ্গিত দিয়েছে, তুরস্ক যদি আবার বিমান ভূপাতিত করার সাহস দেখায় তবে এই বিমানগুলো দিয়ে তাকে সমুচিত জবাব দেওয়ার। লাতাকিয়ায় মোতায়েন সু-৩৫ রুশ সামরিক বিমানকে ইউরোপের হাল আমলের সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমান টাইফুন ও রাফায়েলের মতোই কর্মদক্ষ বলে ধরা হচ্ছে। সিরিয়া অভিযানে অংশগ্রহণ করছে এই উভয় বিমানই। তাই রাশিয়ার সু-৩৫-এর যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারে কেবল মার্কিন এফ-২২ মটর স্টিলথ জঙ্গিবিমান। এ অবস্থায় ন্যাটো ও তুরস্ককে ভয় দেখানোর মোক্ষম অস্ত্রও হতে পারে এই বিমান।
রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ দিক থেকে এমন পদক্ষেপের উদ্দেশ্য খুব সম্ভবত সম্ভাব্য তুর্কি আগ্রাসনের বিপরীতে প্রতিরক্ষামূলক শক্তির প্রদর্শন। তবে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে, এর মধ্য দিয়ে আকাশসীমায় তুরস্কের কাছ থেকে রাশিয়া ফের সমীহ আদায়ে বদ্ধপরিকর বলেই মনে হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উত্তর আটলান্টিকের সামরিক জোট ন্যাটো, বিশেষত উত্তর ইউরোপের দেশ ও তুরস্কের আকাশসীমা কিছুক্ষণের জন্য লঙ্ঘনের ঘটনা রাশিয়ার চাপ সৃষ্টির একটি কৌশলে পরিণত হয়েছে। জুয়ার মতো এমন ঝুঁকি নিয়মিত নিচ্ছে রাশিয়া। এর কারণ, দেশটি ভালোই জানে ন্যাটো দেশগুলো রুশ বিমান ভূপাতিত করে মারাত্মক উত্তেজনা সৃষ্টির ঝুঁকি নেবে না। নভেম্বরে রাশিয়ার যে বিমানটি তুরস্ক ভূপাতিত করেছিল, গত শুক্রবার তুর্কি আকাশসীমা লঙ্ঘনকারী বিমান সু-৩৪ সেটার চেয়েও আধুনিক। আবার এই আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনার পরপরই লাতাকিয়ায় চারটি সু-৩৫ সামরিক বিমান মোতায়েন করল রাশিয়া। আল-জাজিরা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Monsur Alam ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১১:৫০ এএম says : 0
দিন দিন হিংস্র রূপ ধারণ করছে রাশিয়া।
Total Reply(0)
Salman ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১১:৫০ এএম says : 0
Good and very good decetion
Total Reply(0)
kamal ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১১:৫৩ এএম says : 0
abar america bujbe
Total Reply(0)
Faysal ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১১:৫৫ এএম says : 0
Russia r uchit sara bisse santi protisthar jonno kaj kora
Total Reply(0)
Dider ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১১:৫৫ এএম says : 0
Go ahead Russia
Total Reply(0)
২২ অক্টোবর, ২০১৭, ২:০৮ পিএম says : 0
এখানে আপনি আপনার মন্তব্য করতে পারেন রাশিয়াকে আর শক্তির সাহস দেখাবেনা তুরস্ক
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন