বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

অপেক্ষা বাড়ল বাংলাদেশের!

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১০:২৮ পিএম | আপডেট : ১১:৩১ পিএম, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১

এলেন, দেখলেন, ফিরে গেলেন! এটিই ছিল গতকাল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয়টিতে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিংয়ের গল্প। ম্যাচে হঠাৎ করেই জ্বলে উঠলেন সফরকারী দলের দুই বাঁহাতি স্পিনার এজাজ প্যাটেল ও রাচিন রবীন্দ্র। তাদের সামলতেই হিমশিত খেতে হয়েছে টাইগার ব্যাটসম্যানদের। এজাজ-রাচিনের আগুনে পুড়ে ছারখার বাংলাদেশ। জেতাতে পারেননি স্রোতের বিপরীতে গিয়ে লড়াই করা মুশফিকুর রহিমও। ফলে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে ৫২ রানে হেরে সিরিজ জয়ের অপেক্ষা বাড়ল বাংলাদেশের।
মিরপুরের উইকেট চিরচেনা সাকিব আল হাসান, নাসুম আহমেদদের কাছে। অথচ সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে এ দুই স্পিনার একেবারেই যেন অচেনা। পুরো ম্যাচে সুবিধাই করতে পারেননি তারা। সাকিব, নাসুম, মুস্তাফিজদের সামনে আগে ব্যাট করে নিজেদের ঝুলিতে ১২৮ রান জমা করে নিউজিল্যান্ড। লক্ষ্য টপকাতে নেমে দুই বাঁহাতি স্পিনার এজাজ প্যাটেল আর রাচিন রাবীন্দ্রতেই পথ হারায় টাইগাররা। এজাজ ৪টি ও রাচিন শিকার করেন ১ উইকেট। এতে মাত্র ৭৬ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। যা এযাবত টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর!
ধীরগতির উইকেটে বোলারদের সাজিয়ে দেয়া মঞ্চে জয়োল্লাস করতে করতে কি ব্যাটসম্যানরা নিজেদের দায়িত্ব ও কর্তব্য ভুলে গেলেন? নাকি প্রতিপক্ষকে ১০০‘র আশপাশে অলআউট করে জেতার অভ্যাসে ১২৯ রানও পাহাড়সমান মনে হলো সাকিবদের কাছে? যদি তাই না হবে, তবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এমন মামুলি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৭৬ রানে অলআউট হওয়া কেন?
পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচটিসহ গত ৭ ম্যাচে টাইগারদের সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডটি ১২২ রানের। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই রান তাড়া করে ৫ উইকেটে জিতেছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা। খেলা শেষ হয়েছিল ৮ বল আগে।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চলতি সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল মাত্র ৬১ রান। সফরকারীদের মাত্র ৬০ রানে অলআউট করে শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটের জয় পেলেও ওই ম্যাচে শুরুটা ভালো ছিল না টাইগারদের। প্রথম ৩ উইকেট পড়েছিল মাত্র ৮ রানে। ৬১ রান করতেও খেলতে হয়েছিল ১৫ ওভার। আর কাল তার দ্বিগুণের সামান্য বেশি রান করতে গিয়েই মুখ থুবড়ে পড়তে হয়েছে টিম বাংলাদেশকে।
দেখে মনেই হয়নি লক্ষ্য ১২৯ ছিল। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের শারীরিক ভাষা, ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ, ব্যাট চালনা আর শট নির্বাচন দেখে মনে হলো টার্গেট ছিল দেড়শো কিংবা তারও বেশি! পুরো দেখে স্পষ্টই চোখে পড়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ ঠিক ছিল না। কিন্তু বাংলাদেশের হেড কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো তা মনে করছেন না। তাই তো ম্যাচ শেষে তাকে বলতে শোনা গেছে, ‘আমার মনে হয় না ব্যাটিং অ্যাপ্রোচে কোনো সমস্যা ছিল। আমরা চেষ্টা করেছি যাতে রানরেটে এগিয়ে থাকতে পারি। কারণ রানরেটে পিছিয়ে পড়লে তা ধরা কঠিন। আমরা তাই দারুণ ইতিবাচকভাবেই শুরু করতে চেয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারিয়ে ফেলি এক ঝটকায়। নতুন ব্যাটসম্যানের উইকেটে এসেই খেলা কঠিন ছিল। এটাই মনে হয় মূল কারণ। ভালো একটা শুরুর পর ৪-৫ ওভারের মধ্যে ৪-৫টি উইকেট হারিয়ে ফেলি আমরা। তাতেই বড় ধাক্কা খাই।’
টাইগার কোচ আরও বলেন, ‘এটা গড়পড়তা স্কোর ছিল। আমরা আশা করেছিলাম, আগের দিনের মতো রাতে বল স্কিড করবে। উইকেটের আচরণ কিছুটা ভালো হবে। সেটা হয়নি। বরং আরও খারাপ হয়েছে। দুই ওভারে ২০ তোলার পর আমাদের ১১০-এর মতো লাগতো। খেলাটা যেভাবে শেষ হয়েছে তাতে খুব হতাশ। দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাই আমরা।’
অথচ টম লাথাম যখন টস জিতে আগে ব্যাটিং নিলেন, তখন বেশ আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছিল তাকে। বাংলাদেশে এসে সফরকারী নিউজিল্যান্ড প্রথম অনুশীলনে নামে ২৭ আগস্ট। এতদিনে মিরপুরের উইকেট সম্পর্কে ভালো ধারণা পেয়ে গেছে দলটি। টস জিতে ব্যাটিং নেওয়ার পর সে কথাই জানিয়েছেন কিউই দলপতি। তাদের বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্তের ফল মিললো মাঠের লড়াইয়ে, এতে খেই হারানো বাংলাদেশের সিরিজ জিততে হলে চতুর্থ ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই।
ভিন্ন দুই সমীকরণ নিয়েই সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে কাল মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড। শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এই ম্যাচ জিতলে যেখানে সিরিজ জয় হতো টাইগারদের, সেখানে সিরিজ বাঁচাতে জিততেই হতো কিউইদের। নিজেদের ওই মিশনে স্বাগতিকদের হতাশ করে সফরে নিজেদের প্রথম জয় তুলে নিয়েছে ব্ল্যাকক্যাপসরা। আগামী ৮ ও ১০ সেপ্টেম্বর ম্যাচ দু’টি জিতলে সিরিজ পকেটে পুরতে পারবে তারাও। তাই এখন উজ্জীবিত হয়ে চতুর্থ ম্যাচে মাঠে নামার অপেক্ষায় নিউজিল্যান্ড।

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন