বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

দল গুছিয়ে নির্বাচনী প্রস্তুতি নেবে আ.লীগ

কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে দিক নির্দেশনা দেবেন শেখ হাসিনা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০৫ এএম

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে টার্গেট করে দল গোছানোর কাজ শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় বেশ কয়েক মাস দল গোছানোর কাজ বন্ধ রেখে ছিল ক্ষমতাসীনরা। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় এ মাসের শেষ দিকে সাংগঠনিক সফর শুরু করবে দল গোছানোর কাজে গঠন করা আটটি টিম। এ নিয়ে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দলের কার্যনির্বাহি সংসদের সভায় দিক-নির্দেশনা দেবেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। নির্বাচনের বেশ আগেই দলকে মজবুত ভীতের উপর দাড় করানোই উদ্দেশ্য। কারণ আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত করার চেষ্টা করলে সে পরিস্থিতিতে দল গোছানোর কাজ সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব নাও হতে পারে মনে করছে আওয়ামী লীগের হাই-কমান্ড।

দলের নীতি-নির্ধারকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০২৩ সালের শেষ দিকে দ্বাদশ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ বছরের আর বাকি মাত্র চার মাস। ২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ সকল জেলা, উপজেলা, পৌর, ইউনিয়নের সম্মেলন করে কমিটি দেয়া হবে। দলের দায়িত্বপ্রাপ্তদের মতে, দলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলোর সম্মেলন করে শেষ করতে আগামী বছরের অর্ধেক চলে যেতে পারে। আর কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে ২০২২ সালের পুরোটাই লেগে যেতে পারে। আগামী জাতীয় নির্বাচনের বেশ আগেই দলকে মজবুত ভীতের উপর দাড় করাতে চাচ্ছেন দলীয় সভাপতি শেষ হাসিনা। এ নিয়ে প্রায় এক বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দলের কার্যনির্বাহি সংসদের সভা যাতে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা দলকে শক্তিশালী করার বিষয়ে নির্দেশনা দেবেন।

এছাড়াও আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পৌরসভা, ইউনিয়নের নির্বাচন, অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন, বিরোধী দল বিএনপিকে মাঠে না নামতে দেয়ার রাজনৈতিক কর্মসূচিসহ দলের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা হবে। বছরের বাকী সময় দলীয় কর্মসূচির বিষয়েও নির্দেশনা দেবেন শেখ হাসিনা

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের অধিবেশন যোগ দিতে দেশ ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগেই কুমিল্লা-৭ উপনির্বাচনের প্রার্থী ঠিক করতে তিনি মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক করবেন। একই সঙ্গে পৌরসভা ও ইউনিয়নের প্রার্থী বাছাইয়ের জন্যও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে গত বছর ৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সর্বশেষ বৈঠক সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠিত হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, আগামী কার্যনির্বাহি কমিটির বৈঠকে দলের সাংগঠনিক কাজের গতি বৃদ্ধি ও দলকে শক্তিশালী করার বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেথ হাসিনা। এছাড়া সমসাময়িক রাজতৈক বিষয়েও আলোচনা হবে। এর মধ্যে দলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি, সম্মেলনের পর কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হওয়া, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপিও মাঠে নামতে চায় এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ কর্মসূচি কী হবে এসব বিষয় আলোচনায় প্রাধান্য থাকবে।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, কার্যনির্বাহি বৈঠকের পর দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক দল গোছানোর কাজ শুরু করবো আমরা।

দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এবং বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আট বিভাগে আওয়ামী লীগের ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ৪৩টি এখনো মেয়াদোত্তীর্ণ। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১৫টি, চট্টগ্রামের সাতটি, ময়মনসিংহের পাঁচটি, রাজশাহীর চারটি, বরিশালের চারটি, রংপুরের তিনটি, খুলনার চারটি এবং সিলেট বিভাগের একটি সংগঠনিক জেলা মেয়াদোত্তীর্ণ। অন্যদিকে সারা দেশে আওয়ামী লীগের উপজেলা, থানা ও পৌর কমিটির সংখ্যা প্রায় ৬৫০ মতো। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৬০টি, চট্টগ্রামে ১২৯টি, রাজশাহীতে ৮৩টি, খুলনায় ৭৪টি, রংপুরে ৬৬টি, বরিশালে ৫৩টি, সিলেটে ৪৯টি এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৯টির মতো কমিটি রয়েছে। জাতীয় সম্মেলনের আগে ১৩৮টির মতো উপজেলা, থানা ও পৌরসভা কমিটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের পরও বেশ কিছু উপজেলা, থানা ও পৌরসভা কমিটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তবে সাড়ে ৬৫০ কমিটির মধ্যে এখনো ৩৫০ অধিক কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ। এছাড়া সম্মেলন হওয়া কমিটির অর্ধেকের বেশির পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি।

দলের একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগে সবগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা কমিটির সম্মেলন করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু তা করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া আগামী বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের শেষ দিকে আবারও সম্মেলন হতে পারে আওয়ামী লীগের। এদিকে সময় সুযোগ ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে অনেক সময় দল গোছানোর কাজ করা যায় না। আর নির্বাচনের আগ মূহূর্তে কেন্দ্রীয় নেতাসহ যারা এমপি পদপ্রার্থী থাকেন তারা নিজ নিজ এলাকা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, তখন দল গোছানোর কাজ করা মুশকিল হয়ে পড়ে। আর নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করাও কঠিন হয়ে যায়। তাই আগে ভাবেই দল গোছানোর কাজ শেষ করা হবে।

এদিকে বৈঠকে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি, করোনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের সাফল্য, করোনাকালীন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়গুলোও উঠে আসবে। পাশাপাশি চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে মূল দল আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের জন্য নতুন দিকনির্দেশনা আসতে পারে।

করোনাভাইরাসের কারণে আওয়ামী লীগের বিগত কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় ৩৩ জনকে ডাকা হয়েছিল। সেবার যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের প্রত্যেকের করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ ফল আসার পরই সভায় যোগদানের অনুমতি পেয়েছিলেন। যারা করোনা আক্রান্ত ছিলেন, যাদের পরিবারের সদস্যরা করোনা আক্রান্ত তাদের বৈঠকে ডাকা হয়নি। এবারও একই পদ্ধতিতে সভা হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে এবারের সভায় গতবার যারা আমন্ত্রণ পাননি তাদের প্রাধান্য দেওয়া হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (9)
মোহাম্মদ দলিলুর রহমান ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১:৫৭ এএম says : 0
যাই করবে করতে পারবে কিন্তু ক্ষমতা নিজের হাতে রেখে নির্বাচন হবে না,জনগণ তাহা হতে দেবে না,দল বল যদি থাকে যদি বুকে হিম্মত থাকে চুরির পথ ছেড়ে দিতে হবে,চুরি ডাকাতির দিন শেষ ,নির্বাচন দিবে ক্ষমতায় থেকে সেই আশা করে রশের গেললা খাওয়ার আশা করে লাভ নেই।অবশ্যই নিরপক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে,সেটা হবে মরদ ছেলেদের হিম্মত আর সেটা না করে জোর করে নিজের হাতে ক্ষমতা রেখে নির্বাচন দিলে সেটা মরদ ছেলে নয়।সেটা মরদের ক্ষেত্রে হিজলা হবে ,হিজলা সংসদ জনগণের দরকার নেই,জনগণ এক জন নিরপক্ষ সরকারের অধীনে যেই নির্বাচিত হবে তাকে মেনে নিবে,কিন্তু চুরি করে জোর করে অবৈধ সরকার গঠন হবে তাহা হবে না।
Total Reply(0)
Khala Gor ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৫:৪৭ এএম says : 0
তামাশার নির্বাচন না করে,মানুষ হ্যতা না করে, আজীবন বাকশাল কায়েম করে রাজতন্ত্র ঘোষণা করে দিলেই ভালো।
Total Reply(0)
Younus Prodhan ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৫:৫২ এএম says : 0
বাংলাদেশে একটি গ্রহনযোগ্য নির্বাচন দেখতে চাই, তাহলে দেখা যাবে জনগন কি রায় দেয়, জনগনের রায়ের প্রতি বাংলাদেশের সকল দলকে শ্রদ্বাশীল হতে হবে, আমরা ১৫৩ জন বিনা ভোটে আর জনগনের ভোট বিহীন সরকার চাই না, আমরা জনগনের ভোটের মাধ্যমে একটি বিশ্ব গ্রহন যোগ্য সরকার চাই,
Total Reply(0)
নতুন সূর্য ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৫:৫২ এএম says : 0
আগামী নির্বাচনে জনগনের ভোটের অধীকার ছিনিয়ে নিয়ে। আবার আওয়ামিলীগ সরকার গঠন করবে। বি,এন,পি শুধু মিডিআয়ই চাপাবাজি নিয়া ব্যাস্ত থাকবে। আর চেয়ে চেয়ে কাদবে।
Total Reply(0)
Belayet Hossain ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৫:৫৪ এএম says : 0
অযথা একটা নির্বাচন দিয়ে জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে লাভ কি?
Total Reply(0)
Ariful Islam Arif ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৫:৫৫ এএম says : 0
আঃলীগ পেছনের দড়জা দিয়ে পালিয়ে ভারত যেতে চাইবে কিন্ত বাংলাদেশের মানুষ তা হতে দিবেনা নিজ হাতে আঃলীগের বিচার করবে।
Total Reply(0)
Jewel Rana ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৫:৫৭ এএম says : 0
Give under caretaker government election. I am sure , they never will get 5 seat ( AMLEGE).
Total Reply(0)
Shahjahan Miah ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৫:৫৮ এএম says : 0
নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আমার মনে হয় ৮ টি সিট ও পাবে না এই জন্য নিরপেক্ষ নির্বাচন আওয়ামীলীগ চায় না, শুধু চুরি করার চিন্তা ভাবনা।
Total Reply(0)
habib ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৯:৩৫ এএম says : 0
Awamlegue jara kore eder abar vote lage na ki?
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন