শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

দামে সেঞ্চুরি পার

রাজধানীতে ঘরে ঘরে ডেঙ্গু রোগী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

রাজধানীর যাত্রাবাড়ি মোড়ে ফুটপাতের ওপর ভ্যানে করে ডাব বিক্রি করছেন এক ভ্রাম্যমাণ দোকানি। ক্রেতার বেশ ভিড় রয়েছে সেখানে। কেউ দুটি, কেউ একটি, কেউবা আরও বেশি ডাব কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এর মাঝে দুই-একজন সেখানেই ডাবের পানি পান করছেন।

এমন সময় ক্লান্ত এক পথচারী ঘর্মাক্ত অবস্থায় এসে সেই ডাব বিক্রেতাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ডাব কত করে ভাই’? উত্তরে বিক্রেতা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ‘এক ডাব ১২০ টাকা। ডাবের কেনা দাম অনেক বেশি, তাই বিক্রিও বেশি দামে।’ ডাবের দাম শুনে তিনি বললেন, ‘১২০ টাকা দিয়ে একটা ডাব কিনে খেতে হবে? তাহলে তো আমাদের মতো সাধারণ মানুষরা আর ডাব কিনে খেতে পারবে না’। রাজধানীতে ডাবের বিক্রি বেড়ে গেছে। শহরের প্রতিটি মার্কেটের সামনে, মোড়ে এবং প্রতিটি মহল্লার মোড়ে মোড়ে ডাব বিক্রি হচ্ছে। ডাব বিক্রির এই চিত্র গত কয়েকদিনের। ১২০ থেকে ১০০ টাকার নিচে কোথাও মাঝারি আকারের ডাব পাওয়া যাচ্ছে না। দেখতে সুন্দর, আর একটু বড় হলেই সেই ডাব বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। আর তুলনামূলক ছোট ডাব বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। তবে ১২০ টাকা দামের ডাবের সংখ্যাই বাজারে বেশি। আর সেটিই বিক্রিও হচ্ছে বেশি।

রাজধানীর গুলশান রোডের বৈশাখী সরণিতে কথা হয় ভ্রাম্যমাণ ডাব বিক্রেতা শহিদুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি ডাবের দাম বেশি হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানান, ‘আসলে ডাবের সাপ্লাই কম। আগে যেখানে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকায় ১০০ ডাব কিনতে পেরেছি। এখন সেই ডাব কিনতে হচ্ছে ৯ হাজার টাকায়। তাও পাওয়া যায় না। এর সঙ্গে অন্যান্য খরচ মিলিয়ে ১২০ টাকার নিচে বিক্রি করলে লস হয়ে যায়।’

ডাব বারো মাস পাওয়া গেলেও গরমকালে এর চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এখন ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় ডাবের দাম বেড়ে গেছে। কারণ সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ ডাব ডেঙ্গু রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। সে সুযোগে ডাব দামে সেঞ্চুরি করেছে।

উত্তর মতিঝিল এলাকায় কথা হয় আরেক ডাব বিক্রেতা মো. শহিদুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, কারওয়ান বাজার, যাত্রাবাড়ি, আব্দুল্লাপুরসহ সব পাইকারি বাজারেই ডাবের দাম বেশি। আগের মতো দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বেশি ডাব আর আসে না। চাহিদার তুলনায় ডাবের আমদানি কম। এই সুযোগে পাইকারি ডাব বিক্রেতারা একদাম ৯ হাজার করে ডাক দেয়। সেই ডাবে হাত দেওয়া যায় না। পাইকার বেছে নেওয়ারও সুযোগ দেয় না। তাই যখন ডাবগুলো কিনে আনা হয় তখন ভেতরে কিছু ছোট, খারাপ ডাবও চলে আসে। তাই পাইকারি একটা ডাবের দাম ৯০ টাকা পড়লেও ঘাটতি পোষাতে বিক্রি করতে হচ্ছে ১২০ টাকায়।

এত বেশি দাম, তাহলে বিক্রি হচ্ছে তো ডাব? এমন প্রশ্নের জবাবে বায়তুল মোকাররম মসজিদ সংলগ্ন ভ্রাম্যমাণ ডাব বিক্রেতা মো. আব্দুর রহিম বলেন, দাম বেশি তবুও ডাব বিক্রির কমতি নেই। এই যে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, এছাড়া করোনা রোগী তো আছেই। বলতে গেলে ঘরে ঘরে এসব রোগী। আর সেসব রোগীর জন্যই যত দামই হোক প্রতিদিন ডাব কিনছেন তাদের স্বজনরা।

এছাড়া স্বাস্থ্য সচেতন লোকজন চলার পথে রাস্তায় ডাবের দোকান থেকে নিয়মিত ডাব কিনে খান। যারা ডাবের মর্ম বোঝেন তারা ডাবের দাম বাড়লেও কিনবেন। এ সময় এক জোড়া ডাব ২৪০ টাকায় কেনা ফরহাদ হোসেন বলেন, বাসায় রোগী আছে। ডাক্তার বলেছে নিয়মিত ডাব খাওয়াতে। বাধ্য হয়ে দাম বেশি হলেও ডাব কিনতে হচ্ছে। কয়েকদিন আগ পর্যন্ত ডাব কিনতাম প্রতিটি ১০০ টাকা করে। এখন আবার কিছুদিন ধরে ডাবের দাম বেড়েছে। কিনতে হচ্ছে ১২০ টাকায়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
হুমায়ূন কবির ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১০:৫৬ এএম says : 0
কিন্তু কৃষকরা এর সঠিক দাম কি পায় ?
Total Reply(0)
জসিম ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১১:০২ এএম says : 0
মানুষের অসুস্থতার সুযোগে দাম বাড়ানো একদমই ঠিক নয়
Total Reply(0)
বুলবুল আহমেদ ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১১:০৫ এএম says : 0
কিছুদিন ধরে ডাবের দাম বেড়েছে।
Total Reply(0)
চৌধুরী হারুন আর রশিদ ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১১:০৫ এএম says : 0
অতিরিক্ত দামে বিক্রি করা এক ধরনের অন্যায়
Total Reply(0)
তুষার আহমেদ ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১১:০৬ এএম says : 0
ডাবের দাম নির্ধারন করা দরকার
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন