ডলারের দাম বাড়ায় প্রবাসী আয়ের সুবিধাভোগী ও রফতানিকারকেরা খুশি হলেও আমদানিকারকদের ওপর চাপ বাড়ছে। তিন মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে প্রবাসীদের পাঠানো আয় বা রেমিট্যান্স কমছে। রফতানি আয়ও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম। আবার বাড়তে শুরু করেছে আমদানি ব্যয়ও। ফলে ডলারের চাহিদা বেড়ে গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও ডলার বিক্রি শুরু করেছে। এতে বাড়তে শুরু করেছে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক দীর্ঘদিন ধরে প্রতি ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় ধরে রেখেছে। তবে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় গত ৫ আগস্ট থেকে ডলারের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৮৫ টাকা ২০ পয়সা। ডলারের দাম বাড়ায় প্রবাসী আয়ের সুবিধাভোগী ও রফতানিকারকেরা খুশি হলেও আমদানিকারকদের ওপর চাপ বাড়ছে।
দেশে বৈদেশিক মুদ্রায় সবচেয়ে বেশি আয় আসে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে, ব্যাংকটি খরচও বেশি করে। ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা বলেন, বছরের এই সময়ে অনেক সার আমদানি হয়। এ ছাড়া অন্যান্য আমদানি খরচও বেড়েছে। আবার প্রবাসী আয় কমছে। এই কারণে ডলারের দাম বাড়তে শুরু করেছে। তবে এটা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
ব্যাংকাররা বলছেন, চাল, ডালসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী আমদানি বেড়ে গেছে। এ ছাড়া নতুন করে বিদেশে যাওয়া শুরু হয়েছে। এর ফলে ডলারের ওপর চাপ পড়েছে। এ ছাড়া ভারতসহ বিভিন্ন দেশে যাতায়াত চালু হয়েছে। ফলে ব্যাংক ও খোলা বাজারে দাম বেড়ে গেছে।
ব্যাংকগুলোতে ডলারের ঘাটতি থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক গত মাসে ডলার বিক্রি শুরু করেছে। আগস্ট থেকে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রায় ৫০ কোটি মার্কিন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মাধ্যমে ব্যাংকগুলো থেকে প্রায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চাহিদা সামলাতে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি অব্যাহত রাখবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে একসময় রিজার্ভে চাপ পড়ার শঙ্কাও রয়েছে। তবে ব্যাংকাররা বলছেন, ডলারের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি সাময়িক।
ডলারের চাহিদা বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শামস উল ইসলাম বলেন, হঠাৎ করে সুতা কারখানার জন্য নতুন যন্ত্রপাতি আমদানির চাহিদা বেড়েছে। এ ছাড়া তুলা, সুতাসহ সব ধরনের কাঁচামালের আমদানি ও দাম দুই-ই বেড়েছে। ফলে আমদানি খরচ বেড়ে গেছে। সে তুলনায় ডলার আসছে না। এই কারণে দাম বাড়ছে। যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানি বাড়ায় ভবিষ্যতে রফতানি আয় বাড়বে। করোনা চললেও অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে এসব সূচক। গত বছরের জুলাইয়ে আমদানি বাবদ ৪২২ কোটি ডলার খরচ হয়েছিল। গত জুলাইয়ে যা বেড়ে হয়েছে ৫১৪ কোটি ডলার। ফলে আমদানি খরচ বেড়েছে ২১ দশমিক ৬০ শতাংশ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন