বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

দক্ষিণাঞ্চলে নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে সাধারন মানুষ খুব কষ্টে আছেন

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৪:১৩ পিএম

দক্ষিনাঞ্চল জুড়ে চাল-ডাল, ভোজ্য তেল ও চিনি সহ বেশীরভাগ নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে সাধারন মানুষ খুব কষ্টে আছেন। গত প্রায় দেড় বছরে করোনা মহামারী সংকটে সমাজের নিম্নবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের মত মধ্য বিত্তের আয় যথেষ্ঠ কমেছে। সাথে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি কষ্টের মাত্রা আরো বাড়িয়ে তুলেছে।
তবে এরমধ্যেও রাষ্ট্রীয় বানিজ্য সংস্থা, টিসিবি’র অতি সিমিত উদ্যোগ পণ্যমূল্য বৃদ্ধি রোধে কোন ভ’মিকা রাখতে পারছে না।
দেশী পেঁয়াজের দাম গত এক সপ্তাহে আরো ৩ টাকা বেড়ে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের বাজারে প্রতি কেজি বিক্রী হচ্ছে ৪৫-৪৮ টাকায় বিক্রী হচ্ছে। গ্রামে-গঞ্জের বাজারে বিক্রী হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি। স্থানীয় খুচরা ব্যাসায়ীদের দাবী আমাদানী করা কোন পেয়াঁজ বাজারে না আসায় প্রতি সপ্তাহেই দাম বাড়ছে। তবে দেশী রসুনের দাম কিছুটা সহনীয়, ৬৫ টাকায় বিক্রী হলেও আমাদানীকৃতের দাম প্রায় দ্বিগুন। ১২০টাকা কেজি। দেশী আদা বাজারে নেই। চীনা আদা বিক্রী হচ্ছে ১১০ টাকা কেজী দরে।
চিনি এতদিন ৭০-৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রী হলেও গত সপ্তাহ থেকে তা ৮০ টাকায় উঠেছে। গ্রামে-গঞ্জে তা ৮৫ টাকায়ও বিক্রী হচ্ছে। সয়াবিন ও পাম তেল সহ সব ধরনের ভোজ্য তেলের দামও উর্ধমুখি। গত সপ্তাহেই সয়াবিন ও পাম তেলের দাম লিটার প্রতি আরো ৫-১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে এখন যথাক্রমে ১৫৫ ও ১৩৫ টাকায় বিক্রী হচ্ছে। প্যাকেটজাত সয়াবিন বিক্রী হচ্ছে ১৬০ টাকা লিটারে। মুসুর ডালের দামও ৫ টাকা বেড়ে ৮৫ টাকায় উঠেছে। মুগডাল বিক্রী হচ্ছে ১৩০Ñ১৩৫ টাকা কেজি।
এদিকে চালের বাজার দফায় দফায় বেড়ে জুলাই ও আগষ্ট মাসে স্থিতিশীল থাকলেও গত কয়েকদিনে কেজি প্রতি ১ টাকা থেকে দুই টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এতদিন নি¤œÑমধ্যম মানের ‘বিআর-২৮ বা আঠাশ বালাম’ ৪৫Ñ৪৬ টাকা দরে বিক্রী হলেও তা আবার ৪৮ টাকায় উঠেছে। মধ্যম মানের মিনিকেট চালের কেজীও ৬০ টাকা থেকে ৬২ টাকায় উঠেছে। তবে ভাদ্র মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যে আউশ ধান কর্তন শেষ হবার পরে চালের দাম আরো একধাপ বৃদ্ধির প্রবনতা থাকে। আশি^নের শেষ ভাগ পর্যন্ত মাঠে কোন ফসল না থাকার পাশাপাশি দক্ষিণাঞ্চলের বিপুল সংখ্যক কৃষি শ্রমিক বেকার হয়ে পরে। সাথে চালের মূল্য বৃদ্ধিতে মানুষের কষ্ট যথেষ্ঠ বেড়ে যায়।
এবার আগে থেকেই চালের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠার সাথে ভোজ্যতেল,পেয়াঁজ ও চিনি সহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে মানুষের দূর্ভেগের মাত্রা আরো বেড়েছে। মাছ, মুরগী ও গরুÑখাশীর গোসতের মূল্যও গত একমাসে বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগীর কেজী এখন ১৬০-১৬৫ টাকা কেজি। গরুর গোসত ৬শ টাকা ছুতে চলেছে। খাশির গোসত ৮শ টাকা কেজি।
এদিক গত একমাসে রান্নার গ্যাসের দাম তিন দফায় বেড়ে এখন ১২ কেজির সিলিন্ডার বিক্রী হচ্ছে হাজার ৫০ থেকে ১,০৬৫ টাকায়।
তবে এ অস্বাভাবিক অবস্থার মধ্যেও টিসিবি বাজার নিয়ন্ত্রনে তেমন কোন যোড়াল ভ’মিকা রাখছে না। গত সপ্তাহ থেকে দক্ষিনাঞ্চলের ৬ জেলার মধ্যে পিরোজপুর বাদে অপর ৫টি জেলায় মাত্র ১০টি ট্রাকে ৩টি পণ্য বিক্রী কার্যক্রম শুরু করেছে সংস্থাটি। এরমধ্যে বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে মাত্র দুটি ট্রাকে পণ্য বিক্রী শুরু হওয়ায় প্রথম দিনেই ব্যপক কাড়াকারি শুরু হয়ে যায়। মাত্র ১ হাজার কেজি চিনি, ৬শ কেজি ডাল ও ৫শ কেজি সয়াবিন তেল দেয়া হচ্ছে ডিলারদের।
অন্য জেলাগুলোতেও সম পরিমান পণ্য নিয়ে জেলা প্রশাসনের তত্ববধানে ২টি করে ট্রাকে মুশুর ডাল, সয়াবিন তেল ও চিনি বিক্রীর জন্য দেয়া হচ্ছে। একজন গ্রাহক এসব পণ্য মাথাপিছু মাত্র দুই কেজি করে কিনতে ঘন্টার পর ঘন্টা কাঠফাটা রোদে দাড়িয়ে থাকছেন। জেলা প্রশাসন ঐসব ট্রাকের পণ্য জেলা সদর বা যেকোন উপজেলা সদরে বিক্রীর সিদ্ধান্ত গ্রহন করবেন বলে টিসিবির’র বরিশাল অফিস প্রধান জানিয়েছেন।
তবে মাত্র দুটি ট্রাকে সিমিত কিছু পণ্য বিক্রী করায় সাধারন মানুষকে চরম দূর্ভোগ সহ্য করেই তা কিনতে হচ্ছে। প্রথম থেকেই দুপুর ১২টর মধ্যেই টিসিবি’র ট্রাকের পণ্য বিক্রী শেষ হয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি ট্রাকের পেছনেই নারী পুরুষের লম্বা লাইন । যেখানে স্বাস্থ্য বিধি অনুসরন অবান্তর।
এব্যাপারে টিসিবি’র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বরিশাল মহানগরীতে আরো ১টি ট্রাকে পন্য বিক্রী শুরু হয়েছে। আর সরবারহ পেলে আগামী সপ্তাহে ৩০ টাকা কেজী দরে বিদেশী পেয়াজ বিক্রী করা হবে বলে জানান তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন