বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসলাম বিদ্বেষ সত্ত্বেও উৎকর্ষ ঘটছে মুসলমানদের

দ্য ইকোনোমিস্ট | প্রকাশের সময় : ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৫ এএম, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১

বিপুলসংখ্যক রিপাবলিকানসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধেক আমেরিকান বলে থাকেন যে, ইসলাম সহিংসতাকে উৎসাহিত করে, যাদের সংখ্যা ২০০২ সাল থেকে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। তবে, টুইন টাওয়ার পতনের পর যুক্তরাষ্ট্রে ইসলাম বিদ্বেষ বাড়লেও এ পর্যন্ত মার্কিন মুসলিম সম্প্রদায়ের আকার বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি, যা প্রায় সাড়ে ৩ মিলিয়ন।

মুসলমানরা এখন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শিক্ষিত ধর্মীয় গোষ্ঠী। মিশিগানে ১৫ শতাংশেরও বেশি ডাক্তার মুসলমান, যদিও রাজ্যটির মুসলমান জনসংখ্যা ৩ শতাংশেরও কম। এবং মুসলমান শিল্পী, সাংবাদিক এবং রাজনীতিবিদরা ধীরে ধীরে নিজ নিজ ক্ষেত্রগুলোর শীর্ষ তালিকাতে স্থান করে নিচ্ছেন। মার্কিন মুসলমানদের মধ্যে শুধু উৎকর্ষই ঘটছে না, বিস্ময়করভাবে সহিংস মৌলবাদও কমছে। ২০০১ সাল থেকে মুসলমান মৌলবাদী হামলায় ১০৭ জন নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়, যা শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদীদের হামলার তুলনায় কম। সেই হতাহতের প্রায় অর্ধেক সঙ্ঘটিত হয়েছে একটি সমকামী ক্লাবে গণহত্যায়, যা ইসলাম দ্বারা অনুপ্রাণিত কি না, এখনও প্রমাণিত নয়।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে মুসলমানদের বিতাড়িত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রিপাবলিকানদের ৬০ শতাংশ সমর্থন অর্জন করেছিলেন। তার উদ্বৃতি দিয়ে মিশিগানের জরুরি পরিচর্যা চিকিৎসক আলী দাবাজা বলেন, ‘যদিও আমরা একীভূত হওয়ার চেষ্টা করি, কিন্তু এই পরিস্থিতির মধ্যেই আমরা বাস করি।’ যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেতাঙ্গবাদ এবং এই মানসিক বিকৃতির বিরুদ্ধে উদারতা এবং গতিশীলতার ক্ষেত্রে মুসলমানরা এখন সফল সংখ্যালঘু। দেশটিতে সংবিধানগত সুযোগ-সুবিধা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, নাগরিক সংস্কৃতি মুসলমান অভিবাসী এবং তাদের বংশধরদের শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় বেশি দেশপ্রেমিক এবং কথিত জিহাদে খুব কম আগ্রহী করে তুলেছে। এক্ষেত্রে ‘আমেরিকান ড্রিম’ সর্বদা ইসলামী উগ্রবাদের বিরুদ্ধে প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করেছে।

তারপরও ইসলামের প্রতি বিষোদগার ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে মূলত এই কারণে যে, যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তর শেতাঙ্গ অধ্যুষিত সংস্কৃতিতে অপ্রত্যাশিতভাবে মুসলিম নামধারী একজন কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট (বারাক ওবামা) নির্বাচিত হয়েছিলেন। মুসলমানদের ক্রমবর্ধমান উৎকর্ষ এবং বিস্তৃতির কারণে মার্কিন শেতাঙ্গবাদীরা তাদের ইউরোপীয় মিত্রদের তুলনায় কট্টর ইসলামী চর্চার থেকে বরং মুসলমান অভিবাসন সম্পর্কে বেশি উদ্বিগ্ন। ট্রাম্প যখন বারাক ওবামাকে ‘মুসলমান’ এবং ‘বিদেশি’ তকমা দিয়ে রাজনীতিতে আসেন, তখন তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন যে, শব্দ দু’টি সমার্থক। এরপর তিনি মুসলমান-বিষোদগারকে তার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণার মূল বিষয় করে তোলেন। পরবর্তী বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে, ইসলাম বিদ্বেষ তার ভোটারদের সবচেয়ে লক্ষ্যনীয় বৈশিষ্ট্য। এবং এটি শ্বেতাঙ্গবাদীদের অশে^তাঙ্গ বিরোধী ঘৃণাত্বত্ত্বের অন্যতম উপজীব্য। এই হ’ল, মুসলমান সম্প্রদায়সহ অশ্বেতাঙ্গ মার্কিন সংখ্যালঘুদের বাস্তবতা।
তবে, এর মধ্যেও মুসলমানদের উত্থান অব্যাহত রয়েছে। ঘটনাচক্রে, কোভিড-১৯ কট্টর ট্রাম্প ভোটার বা শ্বেতাঙ্গবাদীদের জন্য একটি ভিন্ন বাস্তবতা তৈরি করেছে। করোনা আক্রান্ত হয়ে যাদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি, তারা আমেরিকান-মুসলমান বিরোধী। কিন্তু তাদের চিকিৎসকদের মধ্যে অনেকে মুসলমান। আর প্রকৃতির প্রহসন হ’ল, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মৃত্যুর বাস্তবতা। যখন মানুষ বা তাদের প্রিয়জন মৃত্যুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ লিপ্ত হয়, তখন তাদের সমস্ত রাজনৈতিক দর্শন ম্লান হয়ে যায়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (11)
Sohel Rana ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৪০ এএম says : 0
মুসলমান শান্তি প্রিয় জাতি, কাফির, ইয়াহুদিরা ইসলাম ও মুসলমান দের উপর আঘাত করছে আর নাম দিচ্ছে মুসলিম জংগিরা করছে,আজ মুসলমানরা একাকি হয়ে গেছে কারন তারাও মুসলমানের হাত ছেড়ে দিয়ে কাফেরদের হাত শক্ত করছে এখনো সময় আছে মুসলমানরা এক হই আমরাই তো শ্রেষ্ঠ জাতি!!!
Total Reply(0)
Md Neamotullah ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৪১ এএম says : 0
মুসলিম জাতি এগিয়ে যাবে, কোনো ভীতি এদের রুখতে পারবেনা,
Total Reply(0)
Nakib Akbar ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৪১ এএম says : 0
মুসলমানদের উপর অত্যাচারের বিচার আল্লাহ পাক একদিন করবে।
Total Reply(0)
Collins Moore ক্ষমতার হম্বিতম্বি এই দুনিয়াতেই শেষ ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৪১ এএম says : 0
, পরবর্তি জীবনের জন্য তৈরি থাক প্রতিদান পাওয়ার জন্য।
Total Reply(0)
Arafat Hossain ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৪১ এএম says : 0
আমেরিকা শুধু ভদ্রতার চাঁদর পড়ে আছে। সত্যিকার অর্থে এরাই সবাচেয়ে বড় অমানুষ।
Total Reply(0)
Salim Rokon ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৪২ এএম says : 0
তাদের কাছে মুসলিমদের উপর অত্যাচার করার নামই মানবতা ও ধর্মনিরপেক্ষতা। সব সময়, সব জায়গায় মুসলিমরাই নির্যাতনের শিকার।তারপরেও শুনতে হয় মুসলিমরাই নাকি সন্ত্রাসী।
Total Reply(0)
মোঃ বেলাল হোসাইন ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৪২ এএম says : 0
এই ভাবে যদি মুসলিমদের এত নির্যাতন করা হয়।দেখবেন,মুসলিমরা যদি এক বার জেগে ওঠে, এই পৃথিবীতে মুসলিম ছাড়া আর কিছুই দেখা যাবে না।
Total Reply(0)
Nayem Siddiq ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৪২ এএম says : 0
এটাই অমুস‌লিম‌দের আসল চ‌রিত্র। মুস‌লিম‌দের‌কে এদের সহ্য হয়না। অন্যায় ক‌রে এরা আর দোষ চাপায় মুস‌লিম‌দের উপর।
Total Reply(0)
Harun Ar Rashid ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৪৩ এএম says : 0
আমেরিকান লিডারদের নিরব সাম্প্রদায়িক নীতিই নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের এমন হীন কাজ কে উস্কানি দিচ্ছে। আসলে ওরা বেশিরভাগই টাইম-সার্ভিং নীতিতে চলে। আর তাই অসম্প্রদায়িক নীতির কথা বলে লোক দেখানো ফেনা তুলে!!
Total Reply(0)
muhammadalam ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ২:০০ এএম says : 0
Thanks to all. However the educated Muslims of the USA should contribute to build Modern Islamic civilization, by helping Muslim countries to be self ruled.
Total Reply(0)
Abu Naem ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০১ পিএম says : 0
মুসলামনরাতো এমনই হয় যারা ধর্ম, বর্ণ ভেদে মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসে।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন