শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

খলীফা ও খিলাফতের তত্ত্বকথা-২

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুনশী | প্রকাশের সময় : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

গত আলোচনায় উল্লিখিত তিনটি আয়াতে হযরত নূহ (আ.)-এর পর খলীফা হিসেবে নির্বাচিতদের কথা এবং আদ জাতির পর খলীফা হিসেবে নির্বাচিতদের কথা এবং সামগ্রিকভাবে পূর্ববর্তীদের পরে খলীফা রূপে নির্বাচিতদের কথা বলা হয়েছে। তাদের কেউই ধ্বংসের হাত হতে রেহাই পায়নি। কারণ তারা ছিল আল্লাহ দ্রোহী। আর খলীফা শব্দের বহু বচন খালাইফা শব্দটি আল কোরআনে চারবার এসেছে। যথা :
(ক) তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে খলীফা করেছেন এবং এককে অন্যের ওপর মর্যাদা সমুন্নত করেছেন, যাতে তোমাদেরকে এ বিষয়ে পরীক্ষা করেন, যা তোমাদেরকে দিয়েছেন। আপনার প্রতিপালক দ্রুত-শাস্তিদাতা এবং তিনি অত্যান্ত ক্ষমাশীল দয়ালু। (সূরা আনয়াম : আয়াত-১৬৫)।

(খ) অতঃপর আমি তোমাদেরকে পৃথিবীতে তাদের পরে খলীফা বানিয়েছি, যাতে দেখতে পারি তোমরা কি কর? (সূরা ইউনুস : আয়াত-১৪)।
(গ) তারপর ও তারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করল; সুতরাং তাকেও তার সাথে নৌকায় যারা ছিল তাদেরকে বাঁচিয়ে দিয়েছি এবং যথাস্থানে আবাদ করেছি। আর তাদেরকে ডুবিয়ে দিয়েছি যারা আমার কথাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। সুতরাং লক্ষ্য কর, কেমন পরিণতি হয়েছিল তাদের যাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছিল। (সূরা ইউনুস : আয়াত-৭৩)।
(ঘ) এবং তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে স্বীয় খলীফা করেছেন। অতএব যে কুফরী করবে তার কুফরী তার উপরই বর্তাবে। কাফেরদের কুফর কেবল তাদের পালনকর্তার ক্রোধই বৃদ্ধি করে এবং কাফেরদের কুফর কেবল তাদের ক্ষতিই বৃদ্ধি করে। (সূরা ফাতির : আয়াত-৩৯)।

এই চারটি আয়াতে সুস্পষ্টভাবে বলেদেয়া হয়েছে যে বা যারা খলীফা বা প্রতিনিধি সুলভ দায়িত্ব প্রাপ্তির পর কুফরী করবে, তাদের নিস্তার নেই। আল্লাহ পাক তাদেরকে কঠিন শাস্তিতে নিমজ্জিত করবেন। এই শাস্তি হবে দুনিয়া জোড়া। দুনিয়ার সকল অংশেই তার বিস্তার ঘটবে। যেমনটি বর্তমান করোনাকালে আমরা দেখতে পাচ্ছি। এই করোনা একদিকে যেমন শাস্তি অন্যদিকে নাবুওয়াতের পদ্ধতি অনুযায়ী খেলাফত প্রতিষ্ঠার পূর্বাভাব।

কেননা, বিশ্ব নবী হযরত মোহাম্মাদ মুস্তাফা আহমাদ মুজতাবা (সা.) বলেছেন : ইয়াহুদীদের নেতৃত্ব দিতেন নবীগণ। একজন নবী মৃত্যু বরণ করলে অন্যজন তার স্থান পুরন করতেন। কিন্তু আমার পরে কোনো নবীর আগমন ঘটবে না। তবে খলীফা হবেন। তাদের সংখ্যা হবে একের অধিক অর্থাৎ অনেক। (সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম)। আমরা এমনই একজন খলীফার আগমনের প্রহর গুণে চলেছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
তারেক আজিজ ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ২:১৭ এএম says : 0
আনাস ইবন মালিক রা: বলেন, ‘নবী সা: একদা হজরত আবু বকর, হজরত ‘উমর ও হজরত ‘উসমান রা:-সহ উহুদ পাহাড়ে আরোহণ করলে পাহাড় তাঁদের নিয়ে (আনন্দে) দুলতে থাকে। তখন নবী সা: বললেন, ‘হে উহুদ! স্থির থাক। কেননা তোমার উপরে একজন নবী, একজন সিদ্দিক ও দু’জন শহীদ আছে।’ (সহিহ বুখারি)।
Total Reply(0)
সোয়েব আহমেদ ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ২:১৭ এএম says : 0
ইসলামের এই খিলাফত ব্যবস্থা সর্বজনীন। আল্লাহর এই প্রতিনিধিত্বের অধিকার বিশেষ কোনো ব্যক্তি, পরিবার কিংবা বিশেষ কোনো শ্রেণীর জন্য নির্দিষ্ট বা সংরক্ষিত নয়। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি বিশ্বাসী এবং তাঁদের বিধান ও আইন মান্যকারী সব মানুষই আল্লাহর দেয়া এই প্রতিনিধিত্বের সমান অধিকারী।
Total Reply(0)
তানিম আশরাফ ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ২:১৮ এএম says : 0
খিলাফত ও রাজতন্ত্রের যে স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন ধারণা সাহাবিরা পোষণ করতেন, হজরত আবু মূসা আল-আশ‘আরি রা: তা ব্যক্ত করেছেন এভাবে ‘খিলাফত হচ্ছে তাই, যা প্রতিষ্ঠা করতে পরামর্শ নেয়া হয়েছে। আর তরবারির জোরে যা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তা হচ্ছে বাদশাহী বা রাজতন্ত্র।’
Total Reply(0)
হাদী উজ্জামান ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ২:১৮ এএম says : 0
বংশানুক্রমিকভাবে বা বল প্রয়োগের দ্বারা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়া কিংবা নেতৃত্ব দেয়া তাদের মতে খিলাফত নয়, বরং তা রাজতন্ত্র।
Total Reply(0)
সততাই উৎকৃষ্ট পন্থা ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ২:১৮ এএম says : 0
খলিফার কাজ হলো, সর্বোচ্চ শাসক আল্লাহর আইনকে তাঁর প্রকৃত লক্ষ্য অনুযায়ী কার্যকর করা এবং তাঁর নির্দেশিত পথে রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করা।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন