শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

উচ্চ সুদের ঋণে রেল ইঞ্জিন নয়

অর্থ মন্ত্রণালয়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০১ এএম

৭০টি মিটারগেজ রেল ইঞ্জিন কেনার জন্য উচ্চ সুদের তিনটি অনমনীয় ঋণ চুক্তির খসড়া করা হয়েছে। এর বিপক্ষে মত দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ৭০টি ইঞ্জিন কেনা হবে, এই ঘোষণা ১০ বছর আগের। মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও প্রকল্পের অগ্রগতি ছিল শূন্য। ফলে ২০১৮ সালে মেয়াদ বাড়ানো হয় আরো ছয় বছর, অর্থাৎ ২০২৪ সাল পর্যন্ত। সেই সঙ্গে প্রকল্প ব্যয়ও বাড়ানো হয়।

এবারও তিন বছর প্রায় শেষ হতে চলছে, অগ্রগতি বলতে কেবল তিনটি ঋণ চুক্তির খসড়া হয়েছে। ঠিক এ রকম সময়ে এসে অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে ইঞ্জিনগুলো কেনা ঠিক হবে না। কিনতে হবে সহজ শর্তের নমনীয় ঋণের অর্থে। কোরিয়ান সরকারের নমনীয় উৎসের বা অন্য কোনো উৎসের নমনীয় ঋণ সংগ্রহ করা বাঞ্ছনীয় হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ গত মাসে এক চিঠিতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিনকে এ কথা জানিয়ে দিয়েছে।
পাঁচ বছর মেয়াদি ‘৭০টি মিটারগেজ ডিজেল ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ (রেল ইঞ্জিন) ক্রয় প্রকল্প’ হাতে নেয়া হয় ২০১১ সালে। এগুলো কিনতে কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক থেকে ১৪ বছর মেয়াদে ১২ কোটি ৬৪ লাখ মার্কিন ডলার ও সেখানকার ট্রেড ইনস্যুরেন্স করপোরেশন থেকে ১৪ বছর মেয়াদে প্রায় ১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার ঋণ নেয়ার পরিকল্পনা করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক থেকে ছয় বছর মেয়াদে বাড়তি ঋণ নেয়া হবে চার কোটি ডলার বা ৩৪০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ঋণের পরিমাণ ২৮ কোটি দুই লাখ ৩০ হাজার ডলার। প্রতি ডলার ৮৫ টাকা দরে বাংলাদেশি মুদ্রায় তা দাঁড়ায় দুই হাজার ৩৮২ কোটি টাকা। অথচ প্রকল্পের চুক্তিমূল্য হচ্ছে ২৩ কোটি ৯৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার বা দুই হাজার ৩৫ কোটি টাকা।
রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম বলেন, মূল সমস্যা হচ্ছে, সময় বেশি হয়ে যাওয়ার কারণে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে অনেক। তবে রেল ইঞ্জিন কেনা যাবে না, অর্থ বিভাগ এ কথা বলার কথা নয়।
সূত্রগুলো জানায়, পরিকল্পনা কমিশন তিন বছর আগেই এই উচ্চ সুদের ঋণ নেয়ার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। সেই সঙ্গে ঋণের পরিবর্তে সরকারি অর্থায়নেই ইঞ্জিন কেনার সুপারিশ করেছিল।
এদিকে ইআরডির পাঠানো চুক্তিগুলোর খসড়া পর্যালোচনা করে অর্থ বিভাগ বলছে, রক্ষণশীল হিসাবেও তিনটি ঋণের গড় সুদের হার ৩ দশমিক ৩৩। পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব করলে সব মিলিয়ে তা ৫ শতাংশের বেশি হবে। সাধারণত দক্ষিণ কোরিয়া থেকে বাংলাদেশ সব সময়ই নমনীয় ঋণ পেয়ে থাকে। ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত কোরিয়া থেকে ৭ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রকল্প বাস্তবায়নে কোরিয়ার নমনীয় উৎসের ঋণই সংগ্রহ করা উচিত ছিল। সেই চেষ্টা না করে কেন অতি উচ্চ হারের ঋণ প্রক্রিয়াকরণ করা হলো, প্রস্তাবের সঙ্গে তার কোনো ব্যাখ্যাও নেই ইআরডির। উচ্চ সুদের এই ঋণ নিলে পরবর্তী সময়ে কোরীয় সরকার থেকে নমনীয় ঋণ পেতে বরং বিঘ্ন সৃষ্টি হতে পারে বাংলাদেশের।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন