শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

নির্ধারিত সময়ের আগেই আদালতে হাজির পরীমনি

ফেরত চাইলেন ব্যবহৃত গাড়ি ল্যাপটপ মোবাইল

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:২১ পিএম | আপডেট : ২:২১ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী যখন আমার বাসায় অভিযান চালিয়েছে তখন আমার সব আসবাব তছনছ করে ফেলে। এমনকি প্রেসক্রিপশনসহ আমার ওষুধের বক্সটা পর্যন্ত তারা নিয়ে যায়। সবগুলো কক্ষ তন্ন তন্ন করে। আমার গাড়িসহ অন্যান্য জিনিসের কোন কাগজপত্র আমার কাছে নেই। বাসায় আমি ছাড়া আর আমার কোনো কিছুই নেই।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে এসে এসব কথা বলেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। আজ (বুধবার) দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সত্যব্রত সিকদারের আদালতে তিনি হাজিরা দেন। পরীমনির পক্ষে এডভোকেট নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী পরীমনির পক্ষে শুনানি করেন। তিনি পরীমনির সাদা রঙের গাড়ি, মোবাইল, ল্যাপটপসহ বাসায় চালানো অভিযানে জব্দ হওয়া জিনিসপত্র ফেরত চেয়ে আবেদন দেন।

শুনানিতে পরীমনির আইনজীবী বলেন, আমরা আদালতে দুইটি আবেদন করেছি। একটি পরীমনির ব্যবহৃত সাদা গাড়টি জিম্মায় নেয়ার এবং আরেকটি হচ্ছে তার মোবাইল ল্যাপটপসহ জব্দ করা অন্যান্য জিনিসপত্রের। এগুলো পরীমনির নিজের ব্যবহৃত জিনিস। অভিযানের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এগুলো জব্দ করে। সেজন্য আমাদের কাছে কোন ডকুমেন্ট নেই। যেহেতু তিনি একজন আলোচিত চিত্রনায়িকা। অন্ততপক্ষে গাড়িটি তার জিম্মায় দেয়া হোক।

সরকারপক্ষের আইনজীবীরা এ আবেদনে বিরোধিতা করে বলেন, যেহেতু এই ডকুমেন্টগুলো কোন কাগজপত্র নেই, তাই যাচাই-বাছাই করা সম্ভব নয়। তাদের আবেদন নামঞ্জুর করার দাবি জানাচ্ছি।

এরপর উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক তদন্ত কর্মকর্তাকে বিআরটিএ থেকে গাড়ির সঠিক মালিকানা যাচাই করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারায় মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয় ১০ অক্টোবর।

এর আগে আজ শুনানি শুরুর নির্ধারিত সময়ের আগেই আদালতে হাজির হন পরীমনি। বেলা ১১টার দিকে কালো রঙের একটি গাড়িতে তিনি ঢাকা চীফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে পৌঁছান। পরে ষষ্ঠ তলায় মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সত্যব্রতের আদালতে পরীমনি হাজির হন। কিন্তু পরীমনির আইনজীবী মামলার নথিতে হাজিরা জমা না দেয়ায় তখন তার হাজিরা হয়নি। আদালতের বারান্দায় কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর তিনি আবার নিচে নেমে যান।

বনানী থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখা জানায়, আজ দুপুর ১টায় পরীমনির হাজিরা শুনানি হওয়ার সময় নির্ধারিত রয়েছে। কিন্তু তিনি নির্দিষ্ট সময়ের আগে চলে আসায় কিছুটা জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।

এর আগে গত ৩১ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে এ মামলায় জামিন হয় পরীমনির। গত ২২ আগস্ট ওই আদালতে পরীমনির জামিনের আবেদন জানান এডভোকেট মজিবুর রহমান। তখন আদালত শুনানির জন্য ১৩ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছিলেন। এতদিন পরে শুনানির দিন ধার্য করায় পরীমনির আইনজীবীরা হাইকোর্টে যান। তারা দ্রুত সময়ে জামিনের আবেদন করেন। হাইকোর্টের নির্দেশে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ জামিন শুনানির দিন এগিয়ে ১৩ সেপ্টেম্বরের বদলে ৩১ আগস্ট ধার্য করেন।

প্রসঙ্গত: গত ৪ আগস্ট রাতে অন্তত ৪ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযানে বনানীর বাসা থেকে পরীমনি ও তার সহযোগী দীপুকে আটক করে র‌্যাব। এ সময় পরীমনির বাসায় বিভিন্ন ধরণের মাদক পাওয়া গেছে বলে জানায় র‌্যাব। পরদিন ৫ আগস্ট র‌্যাব-১ বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পরীমনি ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করে। পরে ৩ দফায় মোট ৭ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয় পরীমনিকে। প্রথম দফায় ৫ আগস্ট ৪ দিন, দ্বিতীয় দফায় ১০ আগস্ট ২ দিন এবং ৩য় দফায় ১৯ আগস্ট ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয় তার। এখন তিনি জামিনে রয়েছেন। তবে দফায় দফায় কেন পরীমনির রিমান্ড মঞ্জুর করলেন হাইকোর্ট সংশ্লিষ্ট দুই বিচারকের কাছে ব্যাখ্যা তলব করেন। এ প্রেক্ষিতে এরই মধ্যে দুই বিচারক দেবব্রত বিশ্বাস ও আতিকুল ইসলাম হাইকোর্টে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। তারা বলেছেন, বার বার পরীমনির রিমান্ড মঞ্জুর করা ছিলো তাদের অনিচ্ছাকৃত ভুল। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি জাহিদ সারোয়ার কাজলের ভার্চুয়াল ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ বিষয়ে আদেশ দেয়ার কথা রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন