শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

স্বাস্থ্য

বার্ধক্যে মাছের তেল উপকারী

| প্রকাশের সময় : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০৫ এএম

মাছে ভাতে বাঙালি। কথাটা কিছুটা হারিয়ে গেলেও, মাছের পুষ্টি ও গুরুত্ব এখনো অনেক বেশি। সময়ের সাথে মানুষের জীবনযাত্রার অনেক পরিবর্তন হলেও এখনো বাংলাদেশের বেশির ভাগ বাড়িতে কম বেশি মাছ খাওয়া হয়। প্রোটিনের অনেক ভালো প্রাণীজ উৎস হিসেবে মাছের তুলনা হয় না। মাছ প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখতে পারলে তা শরীরের অনেক উপকারে আসে। প্রোটিনের পাশাপাশি মাছে রয়েছে আয়োডিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও অন্যান্য ভিটামিন ও মিনারেল। তৈলাক্ত মাছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড থাকে। প্রোটিনের চাহিদা পূরণে গোশতের তুলনায় মাছ শ্রেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের এক স্টাডিতে দেখা গেছে, নিয়মিত মাছ খেলে হার্টের রোগের ঝুঁকি ১৫ শতাংশ কমানো যায়। মাছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড থাকায়, তা হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। রক্তের ভালো কোলেস্টেরল বাড়িয়ে খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। তবে এক্ষেত্রে এই বেনিফিট পেতে হলে মাছ পরিমিত তেল দিয়ে কষিয়ে রান্না করে খেতে হয়। ডুবো তেলে কড়া ভাজা মাছ থেকে এই উপকার পাওয়া যাবে না তেমন। মাছ যেকোনো বয়সের জন্য উপকারী একটি খাবার। বয়স্কদের যাদের দাঁতে সমস্যা তারা তাদের প্রোটিন হিসেবে গোশতের চেয়ে মাছ খেলে ভালো। বয়ঃবৃদ্ধির সাথে সাথে মানুষের মাংসপেশি শিথিল হয়ে আসে। শক্তি কমে যায়। এই অবস্থাকে চিকিৎসকরা বলেন সারকোপেনিয়া। তাই শক্ত সবল থাকতে ব্যায়াম অত্যাবশ্যক। ব্যায়াম মাংশপেশিতে শক্তি আনে। মস্তিষ্ক ও হার্টে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, খাওয়া-দাওয়াও যথেষ্ট সহায়ক হয়। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা যায়, যথেষ্ট পরিমাণ উত্তম প্রোটিন মাংসপেশিতে শক্তি আনয়ন করে। যুক্তরাজ্যের এক গবেষণায় দেখা যায়, তৈলাক্ত বা চর্বিযুক্ত মাছ খেলে বয়স্ক ও প্রাপ্তবয়স্কদের দেহে প্রয়োজনীয় শক্তি আসে। এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে জার্নাল অব দ্য আমেরিকান জাবিয়াট্রিকস সোসাইটি ২০০৮ জানুয়ারিতে। ওই সমীক্ষায় দেখা যায়, গবেষকরা ৩ হাজার নরনারীর খাওয়া-দাওয়ার বা খাদ্য ও পুষ্টিগ্রহণের পরিমাপ জরিপ করেছেন। এদের বয়স ছিল ৫৯ থেকে ৭৩ বছর বয়সের মধ্যে। তাদের শক্তি-সামর্থ্য পরীক্ষা করে তারা এই অভিমত প্রকাশ করেছেন যে বার্ধক্যে চর্বিযুক্ত মাছ খেলে আকড়ে যাওয়া মাংসপেশি সবল ও সতেজ হয়। সেই সঙ্গে ব্যায়াম করলে খুব দ্রুত ফল পাওয়া যায়। এছাড়া চর্বিযুক্ত মাছের সাথে ফলমূল, শাকসবজি, সেরিয়াল যথেষ্ট সহায়ক। তবে চর্বিযুক্ত মাছ সর্বশ্রেষ্ট। মহিলাদের চর্বিযুক্ত মাছ তাদের মাংসপেশিতে দ্রুত শক্তি আনে। দৈনিক না হলেও সপ্তাহে যদি কমপক্ষে তিন দিন চর্বিযুক্ত মাছ খাওয়া যায়, তাহলে বৃদ্ধ নারী-পুরুষ উভয়ে উপকৃত হতে পারে। এর ফলে তাদের দেহে সামান্য ব্যথা- বেদনাও দূরীভূত হয়। টুনা, সারদিন, পাঙ্গাশ, সরপুঁটি, বোয়াল মাছ বেশ চর্বিযুক্ত। এগুলো সপ্তাহে দু-তিন দিন খাওয়া যেতে পারে। এতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। তাই পরিমিত ও নিয়মিত আহার, শারীরিক ব্যায়াম, বিশ্রাম, নিদ্রা ও পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতা সুস্বাস্থ্যের পূর্বশর্ত।

মাও: লোকমান হেকিম
চিকিৎসক-কলামিস্ট, মোবাইল: ০১৭১৬-২৭০১২০।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন