বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ঝিনাইদহ জেলায় সরকারী প্রাথমিকের ৯ শিক্ষকের খোঁজ নেই !

যশোর ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৫:৪৬ পিএম

ঝিনাইদহ জেলায় চাকরী পেয়ে বিভিন্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯ জন শিক্ষক এখন উধাও। মাসের পর মাস কর্মস্থলে তাদের কোন দেখা নেই। স্কুলে না আসায় বেতন বন্ধ থাকলেও চাকরীতে বহাল আছেন তারা। তবে বিভাগীয় মামলা রুজুর মাধ্যমে ৩ জনকে ইতিমধ্যে চাকরী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। চলতি মাসে আরো কয়েকজন চাকরীচ্যুত হবেন বলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান। আবার অনেক শিক্ষকের মাথার উপর বিভাগীয় মামলার খড়গ ঝুলে থাকলেও তারা কর্মস্থলে আসেন না। ঝিনাইদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত প্রাথমিকের এ সব শিক্ষকের তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটী সরকারী প্রথমিকের প্রধান শিক্ষক জান্নাতুল মাওয়া থাকেন আমেরিকায়। দীর্ঘদিন সেখানে তিনি স্বামীর সঙ্গে বসবাস করছেন। কিন্তু এখনো তিনি কাগজ কলমে চাকরী করছেন। ঝিনাইদহ পৌরসভা এলাকার খান-এ খোদা সরকারী প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক উম্মে সালমা দীর্ঘদিন বসবাস করছেন কানাডায়। এই দুই শিক্ষকের বেতন বন্ধ করে বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়েছে। এ ভাবে জেলার ৯ জন শিক্ষকের কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। তারা কোথায় আছেন তার সুনিদ্দিষ্ট কোন তথ্য নেই প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে। এসব শিক্ষকদের মধ্যে বেশির ভাগ দেশের বাইরে রয়েছেন বলে জানা গেছে। মহেশপুরের ঘুগরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নাসরিন আক্তার প্রায় ৭ মাস স্কুলে অনুপস্থিত। তিনি কোথায় আছেন তা বলতে পারেনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু আহসান। তিনি জানান, নাসরিন আক্তারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। দ্রæতই তাকে চাকরীচ্যুত করার পক্রিয়া চলছে। হরিণাকুন্ডু উপজেলার ভেড়াখালী গ্রামের জেহের আলী জোয়ারদারের ছেলে মতিয়ার রহমান চাকরী করেন তাহেরহুদা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তিনি এক বছর ধরে স্কুলে আসেন না। কর্মস্থলে যোগদান করার জন্য একাধিকবার চিঠিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার কোন হদিস নেই। তার মোবাইলটিও দীর্ঘদিন বন্ধ। একই উপজেলার দখলপুর গ্রামের মনোয়ার হোসেনের মেয়ে শ্রাবনী ইয়াসমিন চাকরী করেন সোনাতনপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তিনি দেশে থাকলেও কর্মস্থলে আসেন না। এই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলমান বলে জানান হরিণাকুন্ডু উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমান। শৈলকুপার ঝাউদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন ও কাতলাগাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পিএসসির সুপারিশকৃত নন ক্যাডারে যোগদান করেন। কিন্তু যোগদানের পর থেকেই উধাও। একদিনও স্কুলে আসেননি। এরমধ্যে প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম ২০১৮ সালের ২১ মার্চ থেকে ও আলমগীর হোসেন একই বছরের ১৮ জানুয়ারী থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। কোটচাঁদপুর উপজেলার এঁড়েনদা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সামছুন্নাহার শিমু এক বছর ধরে কর্মস্থলে নেই। কোটচাঁদপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার অসিত বরণ পালের ভাষ্যমতে সামছুন্নাহার শিমু ২০২০ সালের ফেব্রয়ারী মাস থেকে কোন যোগাযোগ রাখেন না। শিমু অন্য কোন চাকরী করতে পারেন বলে তিনি জানান। কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সেলিনা খাতুন জানান, তার উপজেলায় দামোদরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহিনুর রহমান দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। তাকে চাকরীচ্যুত করনা হয়েছে। জেলা ব্যাপী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯ জন শিক্ষকের কর্মস্থলে অনুপস্থিতের বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, ইতিমধ্যে আমরা বিভাগীয় মামলা দায়ের করে ৩জনকে চারকীচ্যুত করেছি। চলতি সেপ্টম্বর মাসে আরো কয়েকজন চুড়ান্ত ভাবে চাকরীচ্যুত হবেন। শৈলকুপায় দুইজন পিএসএসসির সুপারিশে নন ক্যাডারে প্রাথমিকে চাকরী পেয়েছিলেন। তাদের ব্যাপারে পিএসসির মতামত চাওয়া হয়েছে। মতামত আসলে তারা চাকরী হারাবেন। তিনি বলেন যারা বিদেশে বা অন্য কোথাও চাকরী করছেন তাদের বেতন বন্ধ করে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে। হয়তো ২/৩ মাসের মধ্যে তাদেরকেও চাকরীচ্যুত করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন