শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

অপুষ্টির শিকার শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে নানা রোগে

প্রকাশের সময় : ৯ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

টি এম কামাল, কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে

অপুষ্টির শিকার উত্তরাঞ্চলের লক্ষাধিক শিশু রোগাক্রান্ত হয়ে বেড়ে উঠছে। অপুষ্টির শিকার নারীরা জন্ম দিচ্ছে হাবা-গোবা বিকলাঙ্গ শিশু। অপুষ্টিার শিকার এসব শিশু দৃষ্টিহীনতা, রাতকানা রোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। হাবা-গোবা বিকলাঙ্গ শিশু বাবা-মার দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অপুষ্টির শিকার অধিকাংশ পরিবারই দরিদ্র ও হতদরিদ্র ভূমিহীন। উত্তর জনপদের অভাবি এলাকা সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও পাবনা জেলার যমুনা, ব‏্রহ্মপুত্র, তিস্তা, নদীর দুর্গম চর ও দুর্গম চলনবিলের মানুষের অপুষ্টি সবচেয়ে বেশি। পুষ্টিকর খাদ্য তাদের ভাগ্যে জোটে না। পায় না চিকিৎসা-সুবিধা। অভাবের সংসারে সন্তানের মুখে তুলে দিতে পারে না পুষ্টিকর খাবার। চলনবিল ও নদ-নদীর দুর্গম চরাঞ্চলের মানুষ জানে না পুষ্টিকর খাদ্যের কথা। খাদ্য বলতে বোঝে ভাত। বছরের অধিকাংশ সময় দুবেলা ভাতও তাদের জোটে না। শ্রম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। শিশুদের ভিটামিন খাওয়ানোর কর্মসূচিতে দুর্গম এলাকায় সাফল্য আনতে পারেনি স্বাস্থ্য বিভাগ। অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশু সরকারি স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা পায় না দুর্গম চলনবিল ও চরাঞ্চলে। চরাঞ্চলের মানুষের অভিযোগ, স্বাস্থ্যসেবা থেকে তারা বঞ্চিত। বেসরকারি জরিপ থেকে জানা যায়, উত্তরাঞ্চলে ১৫ লাখেরও বেশি শিশু অপুষ্টির শিকার। শিশুমৃত্যুর হারও কমছে না। প্রতি হাজারে ২১ জন, বছরে ২৫ ভাগ মা মৃতশিশু জন্ম দেয়। শিশু জন্মকালীন মাতৃমৃত্যুর হার ২৮ ভাগ। বছরে ১ হাজারের ১৪% হাবা-গোবা বিকলাঙ্গ শিশু জন্মগ্রহণ করছে। ২০১৪ সালের সর্বশেষ জরিপ হয়েছে। ২ থেকে ১৫ বছর বয়সের অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশু ১০ লক্ষাধিক। ৫ লক্ষাধিক মহিলা অপুষ্টিতে আক্রান্ত। যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তাসহ বিভিন্ন নদী পাড়ের ৫’ গ্রামে ৩০ হাজারেরও বেশি শিশু হাবা-গোবা বিকলাঙ্গ। প্রতিবন্ধী হয়ে বেড়ে উঠছে এসব শিশু। বগুড়ার ধুনট, সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, সিরাজগঞ্জের কাজিপুর, চৌহালী, বেলকুচি, শাহজাদপুর, গাইবান্ধার সাঘাটা, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি উপজেলার যমুনা নদীর দুর্গম চরাঞ্চল ও নাটোর, নওগাঁ জেলার চলনবিলে ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। নদ-নদীর ভাঙনে প্রতি বছর ৩ হাজার পরিবার গৃহহারা হচ্ছে। নদীবক্ষে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি, ভিটেমাটি। গত ১৫ বছরে ২ লক্ষাধিক পরিবার হয়েছে গৃহহারা। এসব গৃহহারা পরিবারের আবাদযোগ্য এতটুকু জায়গা নেই যেখানে শাক-সবজি চাষ করে পুষ্টিকর খাদ্যের যোগান দিতে পারে। শ্রমনির্ভর এসব পরিবারের সদস্যরা নিজেদের আয় দিয়ে পুষ্টিকর খাদ্য ক্রয়ে অসামর্থ। তাদের পরিবারের শিশুসহ সকল সদস্যই অপুষ্টির শিকার।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন