চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার আমিরাবাদ ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া এলাকায় একটি ব্রিজের অভাবে অর্ধলক্ষাধিক মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কোনো মতে কাঠের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হচ্ছে গ্রামবাসী। তাদের চাঁদার অর্থে নির্মিত কাঠের সাঁকো বছরের পর বছর ধরে ভাঙ্গাগড়ার মধ্যে দিয়েই চলছে। নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা আশ্বাস দিলেও পরে ব্রিজ করতে এগিয়ে আসেনি কেউ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের উত্তর আমিরাবাদ ঘোনাপাড়া নামক স্থানে টংকাবতী খালের ওপর নির্মিত কাঠের সাঁকোটি দিয়ে খালের পশ্চিম পাশের ঘোনাপাড়া, রাহাত আলী চৌধুরীপাড়া, আমির খান চৌধুরীপাড়া, নাজির আলী মুন্সিপাড়া, মুহুরিপাড়া এবং খালের পূর্ব পাশে ব্রাহ্মণপাড়া, তালুকদারপাড়া, জলদাশপাড়া এলাকার প্রায় ১৫ হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে। সাঁকো থেকে পূর্ব দিকে রাস্তাটি মজুমদারপাড়া হয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের আবদুল খালেকের দোকান নামক স্থানে মিলিত হয়েছে। প্রতিদিন ওই এলাকার মানুষকে বিভিন্ন প্রয়োজনে কাঠের সাঁকো পার হয়ে পদুয়া বাজার, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও লোহাগাড়া সদরে যেতে হয়। এছাড়াও খালের পশ্চিম পাড়ের শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পার হয়ে উত্তর আমিরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর আমিরাবাদ এমবি উচ্চ বিদ্যালয় এবং বার আউলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে যেতে হয়। ফলে যাওয়া-আসার সময় অভিভাবকরা থাকেন উদ্বিগ্ন। প্রয়োজনের তাগিদে স্থানীয়রাই প্রতি বছর বাঁশ, কাঠ ও খুঁটি দিয়ে সাঁকোটি মেরামত করে কোনোরকম যাতায়াতের ব্যবস্থা করেন। বছরের পর বছর মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করলেও আজও সুনজর পড়েনি কর্তৃপক্ষের। ফলে খালের দুই পাড়ের মানুষের সেতুবন্ধন অধরাই রয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া টংকাবতী খালের ওপর একটি ব্রিজ খুবই প্রয়োজন। ব্রিজটি নির্মিত হলে এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি বাস্তবায়িত হবে। এতে করে আমিরাবাদ ইউনিয়নের ১০-১২ গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ সহজে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পদুয়া ইউনিয়ন এবং লোহাগাড়া উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে পারবে।
স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘প্রতি বছর নিজেদের খরচে কাঠ দিয়ে সাঁকোটি মেরামত করা হয়। বর্ষা মৌসুমে খালে পানি থৈথৈ করে। তখন নড়বড়ে সাঁকো পার হতে ভয় লাগে। ঝুঁকি নিয়েই পার হতে হয় সেতুটি। যেকোনো সময় সেতুটি ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। উক্ত স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণ হলে গ্রামের মানুষ উপকৃত হতো।’
আমিরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান এস এম ইউনুচ জানান, ‘সেতুটি নির্মাণ হলে এলাকার মানুষ সুফল ভোগ করবে। স্থানীয় এমপি ড. নদভী ইতোমধ্যে ওই স্থানে ব্রিজের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। আশা করি দ্রুত ব্রিজ নির্মাণ কাজ শুরু হবে।’
উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইফরাদ বিন মুনির জানান, ওই এলাকার মানুষের যাতায়াতের সুবিধা ও প্রয়োজনীয়তার কথা বিবেচনা করে সেখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন