আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর নিব বাড়ী মাদারীপুরের শিবচরে আসার জন্য কোম্পানি থেকে ছুটিও নিয়েছিলেন। রবিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ছিল তার শেষ কর্মদিবস। শেষ কর্ম দিবসেই পৃথিবী থেকে শেষ বিদায় নিতে হলো শিবচরের মো. সোহেল শিকদারকে।
রোববার সকালে সৌদি আরবের আল-কাসিম এলাকায় একটি কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে কাজ করার সময় ব্রয়লার বিস্ফোরণ ঘটলে গুরুতর আহত হন তিনি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেলেই তার মৃত্যু হয়। রোববার রাতে তার মৃত্যুর খবর বাড়িতে পৌঁছালে শোকের ছায়া নেমে আসে পরিবারে। নিহত সোহেল শিকদার মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার পাঁচ্চর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর এলাকার আব্দুর রাজ্জাক শিকদারের ছেলে। সৌদি আরবের এ ঘটনায় আরো তিন জনের মৃত্যু হয় বলে জানা গেছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৮ বছর আগে সৌদি আরবে যান সোহেল শিকদার (২৮)। গত দেড় বছর আগে একবার বাড়ি এসেছিলেন। তার ৪ বছর বয়সী ছেলে ও ৭ মাস বয়সী এক মেয়ে রয়েছে। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর ছুটিতে দেশে আসার কথা ছিল তার। গত রোববার ছিল শেষ কর্মদিবস। সকালে কাজে যাওয়ার পর বাংলাদেশ সময় সকাল দশটার দিকে দুর্ঘটনা ঘটলে গুরুতর আহত হয় সোহেল। পরে স্থানীয় এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার বিকেলেই তার মৃত্যু হয়। ওই রাতেই সোহেলের মৃত্যুর খবর বাড়িতে পৌঁছালে শোকের মাতম নেমে আসে। এলাকা জুড়ে শোকের আবহ বিরাজ করছে। সোহেলের আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর ছুটিতে দেশে আসার কথা ছিল। মেয়ে জান্নাত হওয়ার পর তাকে দেখতে আসার কথা ছিল সোহেলের। কিন্তু সেটা আর হলো না। না ফেরার দেশে চলে যেতে হলো সোহেলকে।
নিহতের স্ত্রী রুবিনা আক্তার বলেন, ‘আগামী শনিবার বাড়ি আসার কথা ছিল। ছুটি নিয়ে সব গোছগাছ করেছিল। অথচ আর আসা হলো না তার। আমার ছেলে-মেয়ে এতিম হয়ে গেলো। বাবা বলে আর ডাকা হলো না।’
সোহেলের বড় ভাই আব্দুল গাফফার শিকদার জানান, ‘মেয়েটা যখন হয় তখন আমার ভাই সৌদি আরবে ছিল। মেয়েকে দেখার জন্যই ২৫ সেপ্টেম্বর দেশে আসার কথা ছিল। টিকিটও কাটা ছিল। হঠাৎ দুর্ঘটনায় মারা যায় সোহেল। আর তো মেয়ে দেখতে পারবে না। তাই আমরা ভাইয়ের লাশটি দ্রুত দেশে আনার দাবী জানাচ্ছি সরকারের কাছে।’
এব্যাপারে সৌদি আরব থেকে মুঠোফোনে সোহেলের বন্ধু শাহ আলম বলেন, ‘এই দুর্ঘটনায় সোহেল, লেবাননের মালিকসহ ২ জন ও মিশরের ১ জন মারা গেছেন। বর্তমানে সোহেলের লাশ সৌদি আরবের একটি হাসপাতালে হিমাগারে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন করলে দেশে মরদেহ নেয়া যাবে।’
এব্যাপারে শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি। যদি নিহতের পরিবার আমার কাছে লিখিত আবেদন করে, তাহলে যেখানে যে প্রত্যয়ন লাগে আমি করে দিবো। তাদের জন্যে আমার শতভাগ সহযোগিতা থাকবে। এছাড়া কোথাও বলা লাগলেও আমি সাহায্য করবো।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন