বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা দাখিলের নির্দেশ হাইকোর্টের

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০২ এএম

ঢাকার বিভিন্ন জোনে পানির দূষণ রোধে ওয়াসা বিগত দুই বছরে কী পদক্ষেপ নিয়েছে, কী করছে এবং কী করবে সে বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ২ নভেম্বর ওয়াসার আইনজীবীকে এই প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিচারপতি জেবিএম হাসান এবং বিচারপতি রাজিক আল জলিলের ভার্চুয়াল ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন। রিটেরপক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ। সরকারপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। ওয়াসার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ব্যারিস্টার এম এম মাসুম।

এর আগে ২০১৯ সালে ৭ জুলাই পানি পরীক্ষায় আদালতের নির্দেশে গঠিত চার সদস্যের কমিটির প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়। ওই প্রতিবেদনে ঢাকা ওয়াসার ১০টি বিতরণ জোনের পানিতেই ব্যকটেরিয়াজনিত দূষণ রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। সমন্বিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা ওয়াসার ১০টি বিতরণ জোনের পানিতেই ব্যাকটেরিয়াজনিত দূষণ পাওয়া গেছে। এছাড়া কমিটি ঢাকা ওয়াসার ১০টি বিতরণ জোনের বিভিন্ন এলাকা থেকে দৈবচয়ন ও দূষণের অভিযোগ রয়েছে এমন ৩৪টি স্থান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে। এর মধ্যে ৮টি নমুনাতে ব্যাকটেরিয়াজনিত দূষণ পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিতরণ জোন-১ এর পুরান ঢাকার পাতলাখান লেন, ৪-এর মিরপুরের কাজীপাড়া ও বিতরণ জোন-৭ এর শনির আখড়া, দনিয়া থেকে সংগ্রহ করা পানিতে কলিফর্ম পাওয়া গেছে। ১৬ মে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষে পানি পরীক্ষা বিষয়ক একটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে সরকারপক্ষ। প্রতিবেদনে ঢাকা ওয়াসার লিংকে (হটলাইন) গত ৩ মাসে ময়লা পানির অভিযোগের তালিকা বিশ্লেষণ করে ১০টি জোনের ৫৯ এলাকায় ময়লা পানির প্রবণতা বেশি বলে উল্লেখ করা হয়।
এতে আরও বলা হয়, গত ১৪ মে পানি পরীক্ষা কমিটির তৃতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং আইসিডিডিআর,বি এর ল্যাবে পানির বিভিন্ন প্যারামিটারের মূল্যহার একীভূত করে মোট বাজেট সংযুক্ত করা হলো। বাজেটে বলা হয়, এই ১০টি জোনের প্রত্যেক এলাকা থেকে ৩৫৫টি নমুনা সংগ্রহ করা হবে। ফলে মোট নমুনার সংখ্যা দাঁড়াবে ১ হাজার ৬৫টি। এই ১ হাজার ৬৫টি নমুনা করে তিনটি ল্যাবরেটরিতে রোগজীবাণু ও ভৌত রাসায়নিক সংক্রান্ত পরীক্ষা করতে খরচ হবে মোট ৭৫ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ টাকা।
এ প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপনের পর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে মতামত শুনতে ওই কমিটির সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের (মাইক্রোবায়োলজি ডিপার্টমেন্ট) চেয়ারম্যান ড. সাবিতা রেজওয়ানা রহমানকে আদালতে আসতে বলেন। এ আদেশ অনুসারে অধ্যাপক সাবিতা রিজওয়ানা রহমান ২০১৯ সালের ২১ মে হাইকোর্টে আসেন।
অধ্যাপক সাবিতা ওই আদালতে বলেন, যেসব পানিতে ময়লা দেখা যাচ্ছে বা ঘোলা সেটাতো পরীক্ষার দরকার নেই। সেটা রিজেক্টেড। যেটা সাধারণত স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এমন পরিষ্কার পানি পরীক্ষায় অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি, যা পান করে কোন এলাকার রোগ ছড়াবার তথ্য মেলে। ওয়াসা যে রিপোর্ট দিয়েছে ৫৯ এলাকা নিয়ে সেটাতো কয়েক মাস আগে। ওয়াসা পানির উৎস হলো ভূমিস্থ, ভূগর্ভস্থ, শীতলক্ষ্যা বা বুড়িগঙ্গা নদীর পানি। এসব উৎসের পানি সিজন টু সিজনে তারতম্য থাকতে পারে। পানি পরীক্ষার খরচের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রতি স্যাম্পলে ৫ হাজার টাকা খরচ হবে। সেক্ষেত্রে ৩৪ স্যাম্পলে মোট ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ হবে। এরপর আদালত আদেশে হাইকোর্ট ৩৪ পয়েন্টে নমুনা সংগ্রহ করে পানি পরীক্ষা করে আদালতে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন। ওই আদেশ অনুসারে ২৭ জুন অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে তা হস্তান্তর করেন।
এক রিট পিটিশনের শুনানি নিয়ে ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর হাইকোর্ট ঢাকা ওয়াসার পানি পরীক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠানের নামা উল্লেখ করে ৪ সদস্যের কমিটি গঠনের আদেশ দেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন