বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মহামারিতে পেছাচ্ছে অনেক দেশ সাহসী রূপরেখা তৈরি করুন

এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কার পেলেন প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে টেকসই উন্নয়ন কনফারেন্সে শেখ হাসিনা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

কোভিড-১৯ মহামারিতে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের ক্ষেত্রে অনেক দেশের পিছিয়ে পড়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এসডিজি অর্জনে একটি সাহসী ও উচ্চাভিলাষী রূপরেখা তৈরি করতে হবে।

গতকাল সোমবার নিউইয়র্কে টেকসই উন্নয়ন বিষয়ে নবম বার্ষিক আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে (ভার্চুয়াল) তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির আগেই বহু দেশ এসডিজি অর্জনের পথ থেকে ছিটকে পড়ে। এই মহামারি তাদের আরও পিছনে ফেলে দিয়েছে। এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পিছিয়ে পড়া দেশগুলোকে ফিরিয়ে আনতে আমাদের একটি সাহসী এবং উচ্চাভিলাষী বৈশ্বিক রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে। যাতে কেউ পেছনে পড়ে না থাকে।

শেখ হাসিনা বলেন, কোনো দেশ একা এসডিজি অর্জন করতে পারে না। এই এজেন্ডাকে এগিয়ে নিতে আমাদের বৈশ্বিক সহযোগিতা এবং সংহতি প্রয়োজন। এসডিজি অর্জনের পথে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোকে সামনে আনতে শেখ হাসিনা পাঁচটি প্রস্তাব পেশ করেন। প্রথম প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এসডিজি অর্জনের সফলতা নির্ভর করছে মহামারি থেকে টেকসই উত্তরণ। এই সময়ে সত্যিকারের জরুরি বিষয় হলো সবার জন্য টিকা নিশ্চিত করা। দ্বিতীয় প্রস্তাবে ২০৩০ এজেন্ডা বাস্তবায়নে সম্পদের বিশাল ব্যবধান কমিয়ে আনার কথা বলেন তিনি। তৃতীয় প্রস্তাবে শেখ হাসিনা বলেন, চলমান বৈশ্বিক মহামারির আঘাতে ১৯৯৮ সালের পর এই প্রথম ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক দারিদ্র নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সামাজিক সুরক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। চতুর্থ প্রস্তাবনায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন পরিস্থিতি মোকাবিলায় পদক্ষেপগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কোভিড-১৯ থেকে পুনরুদ্ধারে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত যাতে ভবিষ্যতে যে কোন দুর্যোগ-দুর্বিপাকে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায়।

পঞ্চম প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী এসডিজি বাস্তবায়নে মনিটরিং এবং সহায়তা বাড়ানোর কথা বলেন। এসজিডি বাস্তবায়নে জাতিসংঘকে সমন্বয় বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি। ২০৩০ এজেন্ডাকে একটি বৈশ্বিক চুক্তি হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসডিজি টেকসই বৈশ্বিক উন্নয়নের একটি ব্লু-প্রিন্ট। কোনো দেশ একা এই এজেন্ডা অর্জন করতে পারবে না। এই এজেন্ডা অর্জনে আমাদের বৈশ্বিক সহযোগিতা ও সংহতি বাড়াতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সবুজ উন্নয়নের মাধ্যমে সমৃদ্ধি অর্জন, লবনাক্ততা সহিষ্ণুতা ও নবায়নযোগ্য জ্বালানীকে প্রাধান্য দিয়ে মুজিব ক্লাইমেট প্রোসপারিটি প্ল্যান গ্রহণ করেছি।

ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশিত সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট ২০২১ এর বরাত দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৫ সাল থেকে এসডিজি সূচকে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি লাভ করেছে। বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বে প্রথম পাঁচটি দ্রুততম অর্থনৈতিক অগ্রগতির দেশের মধ্যে অন্যতম এবং জিডিপিতে বাংলাদেশের অবস্থান ৪১তম বলে জানান শেখ হাসিনা। জাতিসংঘ এ বছর বাংলাদেশকে এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণের স্বীকৃতি দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উচ্চ-মধ্য-আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ-আয়ের দেশে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করছে সরকার। ডেলটা-প্ল্যান ২১০০ গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সমৃদ্ধ এবং জলবায়ু স্থিতিস্থাপক বদ্বীপ তৈরি করে যেতে চাই। বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু, ঢাকা মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মতো মেগা অবকাঠামো প্রকল্প চালু করছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাইজেশন ও সংযোগে বাংলাদেশের বিনিয়োগ ডিজিটাল অর্থনীতি, তরুণদের নেতৃত্বে উদ্ভাবন এবং রূপান্তরমূলক আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনকে উৎসাহিত করেছে। এটি এখন আমাদের কোভিড-১৯ মহামারিকে আরও ভালোভাবে মোকাবিলা করতে সহায়তা করছে।

তিনি বলেন, আমাদের তরুণদের সংখ্যা প্রচুর। ডিজিটাল অর্থনীতি এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের সর্বাধিক সুবিধা পেতে তাদের সহায়তা করার জন্য আমরা তাদের শিক্ষা এবং দক্ষতা বিকাশে প্রচুর বিনিয়োগ করেছি। বিগত বছরগুলোতে টেকসই উন্নয়নসহ বিভিন্ন সেক্টরে বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে ২০১৫ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত টেকসই উন্নয়নে বাংলাদেশের অর্জনের জন্য এসডিজি প্রোগ্রেস অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলুশান নেটওয়ার্ক (এসডিএসএন), গ্লোবাল মাস্টার্স অব ডেভেলপমেন্ট প্র্যাকটিস এবং যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ ইনিস্টিউট ও সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট যৌথভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ পুরস্কার প্রদান করে।

অনুষ্ঠানে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলুশন নেটওয়ার্কের (এসডিএসএন) প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক জেফরি ডি. স্যাক্স। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জুয়েল ইন দ্য ক্রাউন অব দ্য ডে’ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। জাতিসংঘের মহাসচিবের অধিনে ২০১২ সালে এসডিএসএন প্রতিষ্ঠা করা হয়। টেকসই উন্নয়নের জন্য বাস্তবভিত্তিক সমাধানে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করে থাকে এসডিএসএন।

এসডিজি অগ্রগতিতে পুরস্কার পেলেন প্রধানমন্ত্রী : ২০১৫ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত টেকসই উন্নয়নে বাংলাদেশের অর্জনের জন্য ‘এসডিজি প্রোগ্রেস অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলুশান নেটওয়ার্ক (এসডিএসএন), গ্লোবাল মাস্টার্স অব ডেভেলপমেন্ট প্র্যাকটিস এবং যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ ইনিস্টিউট ও সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট যৌথভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়।

পরে নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেন, ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্জনের জন্য এসডিএসএনসহ কয়েকটি সংস্থা প্রধানমন্ত্রীকে পুরস্কৃত করেছে। তারা বাংলাদেশের অবস্থা বিশ্লেষণ করেছে এবং মূল্যায়ন করে দেখেছে-বাংলাদেশ বিস্ময়কর সাফল্য অর্জন করছে। এ পুরস্কার বাংলাদেশের জনগণকে উৎসর্গ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

তিনি বলেন, এই পুরস্কার এসডিজি (টেকসই ডেভেলপমেন্ট গোল) অর্জনে আমাদের প্রচেষ্টার স্বীকৃতি। এসডিজি’র মূল বিষয় হচ্ছে কেউ পেছনে থাকবে না। আমরা আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব যাতে অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির যাত্রায় কেউ পেছনে না থাকে। অনুষ্ঠানে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলুশন নেটওয়ার্কের (এসডিএসএন) প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক জেফরি ডি. স্যাক্স।

অনুষ্ঠানের সঞ্চালক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘জুয়েল ইন দ্য ক্রাউন অব দ্য ডে’ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। জাতিসংঘের মহাসচিবের অধিনে ২০১২ সালে এসডিএসএন প্রতিষ্ঠা করা হয়। টেকসই উন্নয়নের জন্য বাস্তবভিত্তিক সমাধানে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করে থাকে এসডিএসএন। এসডিএসএন জাতিসংঘের সংস্থাগুলো, বুহুপাক্ষিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, প্রাইভেটের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে কাজ করে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে যোগ দিতে রোববার স্থানীয় সময় বিকেলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে নিউইর্য়ক গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিলেন প্রধানমন্ত্রী
জাতিসংঘের ৭৬ তম সাধারণ অধিবেশনের উদ্বোধনী পর্বে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে সাধারণ অধিবেশনের উদ্বোধনী পর্বে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে সাধারণ বিতর্কে বাংলাদেশের প্রধান ইস্যু হচ্ছে খাদ্য নিরাপত্তা। এছাড়াও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে সউদী আরব, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য, ইন্দোনেশিয়া, জাম্বিয়া, আসিয়ান, ওআইসি এবং বাংলাদেশের মতো অংশীদারদের অংশগ্রহণে জাতিসংঘে উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
নুরজাহান ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১:০২ এএম says : 0
আপনার যোগ্য নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাবে
Total Reply(0)
Md Aslam Sorker ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৮:৪৫ এএম says : 0
শ্রদ্ধা, ভালোবাসা সবসময়। ধন্যবাদ মানবতার মা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয়।
Total Reply(0)
Iqbal Ahmed Talukder Rezuan ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৮:৪৬ এএম says : 0
আমাদের নেত্রী, আমাদের অহংকার
Total Reply(0)
অভি ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৮:৪৬ এএম says : 0
যতদিন থাকবে শেখ হাসিনার হাতে দেশ, পথ হারাবে না বাংলাদেশ জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু জয় হোক শেখ হাসিনার।
Total Reply(0)
Shariful Islam Pinu ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৮:৪৭ এএম says : 0
We Are Proud Of Our Honorable Prime Minister Sheikh Hasina...জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
Total Reply(0)
Md Maniruzzaman ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৮:৪৯ এএম says : 0
This is visible going on continues process which are already been a role model for many many countries of this world . This is a longest history by patriotic , sincere , humanist , kind & quality rebuilding measures by hardest effort of H P M which are very rare for whole world now on this perspective of equality & justice for all . Which will be more distinguished super star in very near future by the blessing from kind ALLAH. We shall over come by the blessing from kind ALLAH .
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন