শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশ ব্যাংককে সহযোগিতা প্রদানের অনুরোধ বিজিএমইএ’র

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১১:৪৮ পিএম

পোশাক শিল্প কোভিড-১৯ সৃষ্ট নজিরবিহীন সংকট এবং পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবেলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর সংগ্রামে লিপ্ত রয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পোশাক শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে বিজিএমইএ।

বিজিএমইএ এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এস এম মান্নান (কচি) এর নেতৃত্বে বিজিএমইএ এর একটি প্রতিনিধিদল আজ ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনে গভর্নর জনাব ফজলে কবির এর সাথে সাক্ষাৎ করেছেন।

বিজিএমইএ প্রতিনিধিদলে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সভাপতি মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, ১ম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মোঃ শহিদউল্লাহ আজিম, সহ-সভাপতি (অর্থ) খন্দকার রফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মোঃ নাসির উদ্দিন, সহ-সভাপতি জনাব রাকিবুল আলম চৌধুরী, পরিচালক জনাব আসিফ আশরাফ, পরিচালক মোঃ খসরু চৌধুরী, পরিচালক রাজিব চৌধুরী, পরিচালক মোঃ ইমরানুর রহমান ও পরিচালক মোহাম্মদ মেরাজ-ই-মোস্তফা (কায়সার)। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান, ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের ও উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাগনও উপস্থিত ছিলেন।

শুরুতেই বিজিএমইএ এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এস এম মান্নান (কচি) কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন পোশাক শিল্পকে বিভিন্ন নীতি সহায়তা দিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও ব্যাংকের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীগনকে সমগ্র পোশাক শিল্প পরিবারের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

আলোচনাকালে বিজিএমইএ প্রতিনিধিদল বলেন, করোনা মহামারিতে পোশাক শিল্প একটি ক্রান্তিলগ্ন অতিক্রম করছে। এ অবস্থায় পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তাগন অর্থনীতির চাকা সচল রাখা এবং প্রতিকূল পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। উদ্যোক্তারা মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এর পক্ষ থেকে পোশাক শিল্প সংক্রান্ত ইস্যুগুলো সহজীকরণের উদ্যোগ নেয়া হলে তা শিল্পকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করবে।

বিজিএমইএ প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে যে সহযোগিতাগুলো চেয়েছেন, সেগুলো হলো:-

কোন ব্যাক্তি, প্রতিষ্ঠান বা গ্রুপের যে কোন একটি প্রতিষ্ঠানের ঋণ খেলাপীর কারণে সহযোগী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের চলমান ঋণ বন্ধ না করে, খেলাপী ঋণ পুনঃতফসিলিকরণের সুযোগ দিয়ে ঋণ সুবিধা বহাল রাখার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা।

সকল প্রণোদনার জন্য ৩০% দেশীয় মূল্য সংযোজনের নিয়ম রেখে ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারীকৃত সার্কুলার সংশোধন করা। কারণ, এ শর্তটি আরোপ করার ফলে ওভেন শিল্প বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং নীট শিল্পও কিছু ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।

বর্তমান সংকটময় সময়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি শিল্পকে টিকিয়ে রাখার নিমিত্তে শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদানের জন্য প্রদত্ত ঋণ পরিশোধের কিস্তির সংখ্যা ১৮টি’র পরিবর্তে ৩৬টি করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা।

আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ এর বিআরপিডি সার্কুলার নং ০৮, তারিখঃ ১২/০৪/২০২০ সংশোধন করা। কারণ, এ সার্কুলারে বর্ণিত শর্তসমূহ পরিপালনে রপ্তানিকারকগণ বর্তমান প্রেক্ষপটে সক্ষম নাও হতে পারে।

করোনাভাইরাসের অতিমারী সময়ে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক খাতকে টিকিয়ে রাখতে ইডিএফ ফান্ডের সুদের হার ২% থেকে হ্রাস করে ১.৫% করা।

কোভিড-১৯ এর প্রভাবে রপ্তানীমুখী তৈরী পোশাক শিল্পের যে সকল উদ্যোক্তা ব্যাংক ঋণের কিস্তি সময়মত পরিশোধ করতে সক্ষম হয়নি তাদের জন্য আরোপিত-অনারোপিত সুদ ও কষ্ট অব ফান্ডসহ সকল প্রকার চার্জ মওকুফ করত: মওকুফ অবশিষ্ট ঋণকে জানুয়ারী, ২০২২ ভিত্তিক হিসাবকৃত স্থিতির উপর ২% হারে ডাউন পেমেন্ট গ্রহণ করে দুই বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ দশ বছর মেয়াদে ঋণ হিসাব পুনঃতফসিলীকরণের সুযোগ প্রদান এবং এককালীন এক্সিট নিতে আগ্রহী উদ্যোক্তাদের এক বছর মেয়াদে ঋণ হিসাব অবসায়নের নিমিত্তে সুযোগ দেয়া।

বিবি গভর্নর জনাব ফজলে কবির অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে বিজিএমইএ সভাপতির বক্তব্য শ্রবণ করেন। তিনি বলেন, পোশাক শিল্প জাতীয় অর্থনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এই শিল্পকে সম্ভাব্য সকল সহযোগিতা প্রদানে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রস্তুত রয়েছে। তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, বিজিএমইএ প্রতিনিধিদলের প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে যেগুলো যৌক্তিক, সেগুলো কেন্দ্রিয় ব্যাংক গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা করবে। আর যেগুলো বিষয়ে সহযোগিতা প্রদান করা সম্ভব হবে, সেসব বিষয়ে সহযোগিতা প্রদানের জন্য ব্যাংক উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন