আশুলিয়া ও রাপা প্লাজায় ডাকাতি মামলা তদন্তে লুট করা স্বর্ণালঙ্কারের বিষয়ে চমকপ্রদ তথ্য পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সংঘবদ্ধ ডাকাতদলের সদস্যরা লুট করা স্বর্ণালঙ্কার গলিয়ে ‘পাত’ বানিয়ে বেচাকেনা করতো বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডি জানায়, লুট করা স্বর্ণালঙ্কার রাজধানীর তাঁতীবাজারে অবৈধভাবে বেচাকেনার সুস্পষ্ট তথ্য রয়েছে সিআইডির কাছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লুট করা স্বর্ণালঙ্কার গলিয়ে ‘পাত’ বানিয়ে তাঁতীবাজারে বিক্রি করতো একটি সিন্ডিকেট।
বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর।
এসএসপি মুক্তা ধর বলেন, গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে আশুলিয়ার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের নয়ারহাট বাজারে ১৯টি স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় ৩০ থেকে ৪০ জন সশস্ত্র ডাকাত স্বর্ণালঙ্কার এবং নগদ টাকাসহ মোট ১ কোটি ২ লাখ ৩২ হাজার টাকার লুট করে। এ ঘটনার পর ধারাবাহিক অভিযানে নামে সিআইডি। অভিযানে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
এরপর ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তে নেমে গত ১৫ সেপ্টেম্বর শাহানা আক্তার (২৪) নামে এক ডাকাতের স্ত্রীকে স্বর্ণ বিক্রির নগদ ২ লাখ ৪৪ হাজার ৮৪০ টাকা ও আনুমানিক ৩ থেকে ৪ ভরি স্বর্ণসহ গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে আল মিরাজ মিন্টু (৩৮) ও কামাল খান (৩৯), আনোয়ার হাওলাদার (৩৯), দেলোয়ার হোসেন খলিফা ( ৩৬), আ. রহিম (৫৫), আল মিরাজ ওরফে মিন্টু (৩৮), কামাল খা (৩৯), মো. সাগর (৪০) এবং ডাকাতির জিনিস কেনার দায়ে সবুজ রায় (৩২) ও রহিমকে (৩১) গ্রেফতার করা হয়।
তাদের মধ্যে শাহানা, আনোয়ার, দেলোয়ার, সবুজ রায়, আ. রহিম, আল মিরাজ ও কামাল খাঁ আশুলিয়ায় ডাকাতির সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে রাজধানীর নয়াবাজার এলাকার ডাকাত সদস্য রহিমের বাসা থেকে আশুলিয়ায় লুট হওয়া ২০ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়, যার বাজারমূল্য আনুমানিক ১৪ লাখ টাকা।
সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন, গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে ধানমন্ডির রাপা প্লাজার রাজলক্ষী জুয়েলার্সে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এসময় প্রায় ২০০ ভরি স্বর্ণ লুট করা হয়, যার বাজারমূল্য প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আশুলিয়ার ঘটনায় গ্রেফতার সবুজ রায় ও রহিমসহ আরও ৫ থেকে ৬ জন রাপা প্লাজায় ডাকাতির কথাও স্বীকার করেছেন। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে নয়াবাজার এলাকার সবুজের বাসা থেকে রাপা প্লাজায় লুট হওয়া ১২ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
তিনি বলেন, ডাকাতির স্বর্ণালঙ্কার তাঁতীবাজারে অবৈধভাবে বেচাকেনার সুস্পষ্ট তথ্য রয়েছে সিআইডির কাছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লুট করা স্বর্ণালঙ্কার গলিয়ে স্বর্ণের ‘পাত’ বানিয়ে তাঁতীবাজারে বিক্রি করতো একটি সিন্ডিকেট। যা সবুজ রায় ও রহিমের জবানবন্দিতে বেরিয়ে এসেছে।
আশুলিয়া ও রাপা প্লাজায় ডাকাতি মামলার তদন্তে তাঁতীবাজারের চক্র চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন