শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

রাসেল-শামীমার বিরুদ্ধে এবার আদালতে মামলা

আজ আদালতে হাজির করা হবে রাসেলকে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে হলেও কার্যক্রম পরিচালনার দাবি গ্রাহকদের

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের (প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান) বিরুদ্ধে এবার আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারীর আদালতে মো. মুজাহিদুর রহমান নামে এক ব্যক্তি মামলাটির আবেদন করেন। পরে আদালত মামলাটি গ্রহণ করে ধানমন্ডি থানাকে এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করার আদেশ দেন।

সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান বলেন, মুজাহিদুর রহমান নামের এক ব্যক্তি আদালতে মামলাটির আবেদন করেন। এরপর আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে ধানমন্ডি থানাকে এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করার আদেশ দিয়েছেন। মামলায় অভিযোগ মুজাহিদুর রহমান উল্লেখ করেন, বাদী ৮৫ হাজার টাকা মূল্যের দুই টন এসি এবং ২৫ হাজার টাকা মূল্যের একটি কাঠের টি টেবিল অর্ডার করেন। গত বছর ১১ জুলাই এসি বাবদ ৮৫ হাজার এবং ২২ জুলাই টেবিলের দুই হাজার টাকা ছাড় বাবদ ২৩ হাজার টাকা পাঠান। পণ্য দুটি ৪৫ দিনের মধ্যে ডেলিভারি করবে বলে প্রতিষ্ঠানটির শর্ত ছিল। নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পর যোগাযোগ করলেও প্রতিষ্ঠানটি পণ্য দুটি ডেলিভারি করেনি। এজন্য বাদী রাসেল বরাবর লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। লিগ্যাল নোটিশ পাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি টেবিলের টাকা ফেরত দেয়। কিন্তু এসির বিষয়ে তারা কোনও সমাধান করেনি। এরপর বাদী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

এতে আরও বলা হয়, গত ২৫ মে ইভ্যালি বাদীর ৮৫ হাজার টাকা মূল্যের এসি সরবরাহে অস্বীকার করে। আসামিরা তার কাছ থেকে ৮৫ হাজার টাকা গ্রহণ করে পণ্য সরবরাহ না করে এবং পরে পাওনা টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করে অপরাধ করেছে।

এর আগে ১৬ সেপ্টেম্বর রাসেল ও শামীমার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় একটি মামলা হয়। আরিফ বাকের নামে ইভ্যালির এক গ্রাহক মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি হওয়ার পর বিকালেই রাসেলকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

এছাড়াও গত মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসিবুল হকের আদালত সিইও মোহাম্মদ রাসেলের ধানমন্ডি থানায় দায়ের করা আরেক মামলায় একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। একই মামলায় তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়। তবে ওই মামলায় গতকাল ধানমন্ডি থানায় তারা রিমান্ড শেষ হয়েছে। রিমান্ডে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এতে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

গতকাল সন্ধ্যায় ধানমন্ডি থানার ওসি ইকরাম আলী মিয়া ইনকিলাবকে বলেন, রাসেলের রিমান্ড শেষ হয়েছে। আজ তাকে আদালতে হাজির করা হবে। এছাড়াও গতকাল রাসেল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছ। ওই মামলা তদন্তের জন্য ধানমিন্ড থানা পুলিশকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে মামলার কপি গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় এসে পৌঁছায়নি বলে জানান ওসি।

এদিকে, রাসেলকে আদালত জামিন না দিলে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে হলেও ইভ্যালির কার্যক্রম পরিচালনা করার দাবি জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির মার্চেন্ট ও সেলাররা। গতকাল রাজধানীর প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি জানিয়েছেন তারা। এ সময় তারা রাসেল ও তার স্ত্রীর মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন সেøাগান দেন। বেলা ২টা ২০ মিনিটের দিকে পুলিশ তাদের চলে যেতে বললে তারা স্থান ত্যাগ করেন।
এ নিয়ে মার্চেন্ট ও সেলাররা তৃতীয় দিনের মতো মানববন্ধন করেছেন। এর আগে রাজধানীর শাহবাগ ও ঢাকার জেলা জজ আদালতের বাইরে তারা মানববন্ধন করেন।

সেলার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহমুদুল হক মাসুদ বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, তারা দায়িত্ব নেবে না। আগে থেকেই এত টাকার লেনদেন হচ্ছিল, সেখানে নীতিমালা ছিল না কেন? সরকারকে একটা পথ বের করতে হবে। সমস্যা হয়েছে মাথাটা কেটে ফেলবেন না। অনেক গ্রাহক সুবিধা পেয়েছেন, সরকার রাজস্ব আয় করেছে। ইভ্যালি মানে রাসেল নন, তিনি অন্যায় করলে তার বিচার হোক। তাকে জামিন না দিলে প্রয়োজনে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে হলেও ইভ্যালির কার্যক্রম পরিচালনা করা হোক। অনেক উদ্যোক্তা ধার করে বিনিয়োগ করেছেন, তারা পথে বসেছেন। উদ্যোক্তাদের বাঁচাতে হবে।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, নীতিমালা হওয়ার কারণে চাপের মুখে হলেও অন্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো মার্চেন্টদের টাকা দিতে পারছে। কারণ, তারা ব্যবসা পরিচালনা করছে। কিন্তু মো. রাসেল জেলে থাকায় টাকা দিতে পারছেন না।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী একজন মার্চেন্ট মাসুমা আক্তার ইভ্যালিতে সোয়া কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ইভ্যালি বন্ধ হলে ২৫ হাজার নতুন উদ্যোক্তা বেকার হয়ে যাবেন। আমাদের কর্মীরা বেকার হয়ে যাবেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন