যুক্তরাষ্ট্রের নিউইর্য়ক পুলিশ বিভাগের (এনওয়াইপিডি) পেট্রোল কমান্ডের প্রথম বাংলাদেশি কমান্ডিং অফিসার (সি.ও) হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন প্রথম বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত পুলিশের ক্যাপ্টেন খন্দকার আব্দুল্লাহ।
গত ২০ শে সেপ্টেম্বর (সোমবার) ব্রুকলিনের এনওয়াইপিডির ৬৯ প্রিসিস্কটের (পুলিশ অফিস) শীর্ষস্থানীয় পদ কমান্ডিং অফিসার হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি এ দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে সিলেট জেলার বালাগঞ্জ থানার এই কৃতিসন্তান প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নিউইর্য়ক পুলিশের ক্যাপ্টেন হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে একই প্রিসিস্কটের নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন।
বাংলাদেশি আমেরিকান পুলিশ এসোসিয়েশন (বাপা’র) অন্যতম সদস্য এস,এম, হক ইনকিলাব পত্রিকাকে জানান, খন্দকার আব্দুল্লাহ ২০০৫ সালে এনওয়াইপিডিতে পুলিশ ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেন। এরপর পদোন্নতি পেয়ে ২০০৭ সালে পুলিশ অফিসার হিসেবে শপথ নেন। শুরুর দিকে পুলিশ অফিসার হিসেবে খন্দকার আব্দুল্লাহর দায়িত্ব পড়ে তখনকার সময়ের পূর্ব নিউইয়র্কের অপরাধবহুল এলাকা পরিচিত ব্রুকলিনের ৭৫ প্রিসিস্কটে।
খন্দকার আব্দুল্লাহ সার্জেন্ট পদে পদোন্নতি লাভ করেন ২০১৩ সালে । বিভিন্ন প্রিসিস্কটে অপরাধ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সাদাপোশাকের পুলিশের কমান্ডিং অফিসার হিসেবে সাফল্যের স্বাক্ষর রাখেন। ২০১৬ সালের আগস্টে খন্দকার আবদুল্লাহ লেফটেন্যান্ট পদে পদোন্নতি লাভ করার পর নিউইয়র্ক সিটির ২৮ প্রিসিস্কটের দায়িত্ব পান । এ সময় অপরাধ সংশ্লিষ্ট সমস্যা চিহ্নিতকরণ, অপরাধের তথ্য বিশ্লেষণ , কার্যকর কর্মকৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এবং পরিকল্পনা ও গৃহীত কৌশলের সাফল্য নিয়ে দক্ষতা ও নৈপুণ্যতার সাথে কাজ করে সবার নজর কাড়েন তিনি। নিউইয়র্ক সিটির হার্লেম এলাকায় তাকে স্পেশাল অপারেশনের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
৩৫ বছর বয়সী খন্দকার আবদুল্লাহ তার প্রয়াত বাবা খন্দকার মদব্বির আলী ও মা মুহিবুন্নেসা চৌধুরীর সঙ্গে অভিবাসী হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন ১৯৯৩ সালে। তিনি নিউইর্য়ক সিটির জন জে কলেজ থেকে ক্রিমিনাল জাস্টিসে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। তিন সন্তানের জনক খন্দকার আব্দুল্লাহ সহধর্মিনী নিয়ে লং আইল্যান্ডে বসবাস করেন।
খন্দকার আব্দুল্লাহ তার এই সাফল্যের পিছনে বাবা-মা, সহধর্মিনী ও ভাই-বোনদের অবদানের পাশাপাশি বন্ধুবান্ধদের অনুপ্রেরণার কথা জানান। এদিকে এনওয়াইপিডিতে তার এই অনন্য কৃতিত্বের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন বাংলাদেশী আমেরিকান পুলিশ এসোসিয়েশন (বাপা), এনওয়াইপিডি মুসলিম অফিসার সোসাইটি সহ কুম্যনিটির সর্বস্তরের লোকজন।
বাংলাদেশি আমেরিকান পুলিশ এসোসিয়েশন (বাপার) এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট সার্জেন্ট এরশাদ সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, কমান্ডিং অফিসারের মত পুলিশ বিভাগের শীর্ষপদগুলোর নেতৃত্বে বাংলাদেশিরা আসতে পারলে প্রবাসী বাংলাদেশি কম্যুনিটির লোকজন লাভবান হবেন। কমান্ডিং অফিসারের পরের পদগুলো নির্ধারিত হয় রাজনৈতিক বিবেচনায়। এনওয়াইপিডির বিভিন্ন ইউনিটে বাংলাদেশিদের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে এবং অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশিরা পুলিশ বিভাগের উচ্চপদগুলোর নেতৃত্বের আসনে আসীন হবে বলে তিনি এ আশা ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, বর্তমানে এনওয়াইপিডিতে নিয়মিত বাহিনীর সদস্য ছাড়াও বিভাগের অধীনে প্রায় সাত শতাধিক ট্রাফিক পুলিশ, অক্সিলারি পুলিশ, স্কুল সেফটি এজেন্ট, পুলিশ কমিউনিকেশন টেকনেশিয়ান, স্কুল ক্রসিং গার্ডসহ মোট হাজারের বেশি বাংলাদেশি অত্যন্ত সুনাম ও দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন