কয়েক বছরের কূটনৈতিক টানাপোড়েন শেষে অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন প্রতারণার অভিযোগে কানাডায় আটক থাকা চীনের প্রযুক্তি কোম্পানি হুয়াওয়ের কর্মকর্তা মেং ওয়ানঝু। যুক্তরাষ্ট্রের কৌসুঁলিদের সঙ্গে একটি সমঝোতার পর তিনি নিজের দেশ চীনে ফিরে গেছেন।
মিজ মেং হচ্ছেন হুয়াওয়ের প্রতিষ্ঠাতা রেন জেনফেং-এর মেয়ে, যিনি ১৯৮৭ সালে হুয়াওয়ে প্রতিষ্ঠা করেন। কোম্পানিটি এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় টেলিকম প্রযুক্তি উৎপাদক প্রতিষ্ঠান।
একই সঙ্গে চীনে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আটক থাকা দুইজন কানাডিয়ান নাগরিককে মুক্তি দেয়া হয়েছে। তারাও এখন কানাডার পথে রয়েছেন।
এএফপি নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, মুক্তির পরপরই মেং ওয়ানঝু চীনের শেনজেনগামী এয়ার চায়নার একটি বিমানে করে কানাডা ছেড়ে যান। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের কূটনৈতিকদের ব্যাপক আলোচনার পর মেং ওয়ানঝু ছাড়া পেলেন।
তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ ছিল- তিনি ইরানের ওপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে ফাঁকি দিয়ে হুয়াওয়ের ব্যবসা সম্পর্কে আমেরিকান ব্যাংকগুলোকে মিথ্যা বলেছিলেন। তবে মিজ মেং এবং হুয়াওয়ে উভয়েই ওই অভিযোগ অস্বীকার করেন।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ জানিয়েছে, তারা মামলা স্থগিতের একটি চুক্তিতে পৌঁছেছেন। গত তিন বছর ধরে তিনি ভ্যাঙ্কুভারে তার পিতার মালিকানাধীন একটি বাড়িতে গৃহবন্দী অবস্থায় ছিলেন।
চুক্তির অংশ হিসাবে মিজ মেং স্বীকার করে নিতে রাজি হয়েছেন যে, এইচএসবিসি ব্যাংকের কাছে মিথ্যা তথ্য দেয়ার বিষয়টি তিনি জানতেন।
কানাডার দুই নাগরিকের মুক্তি
মেং ওয়ানঝুর মুক্তির পরপরই চীনে আটকাবস্থা থেকে মুক্তি পেয়েছেন দুইজন কানাডিয়ান নাগরিক। মিজ মেংকে কানাডা গ্রেপ্তার করার পরপরই ২০১৮ সালে মাইকেল স্পাভোর এবং মাইকেল কোভরিগকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে চীন গ্রেপ্তার করেছিল।
একটি সংবাদ সম্মেলনে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, এই দুইজন ''অবিশ্বাস্য রকম কঠিন অবস্থার ভেতর দিয়ে গেছেন।''
চীনে কানাডার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে একটি বিমানে করে শনিবার সকালে (কানাডার সময়) তারা দেশটিতে পৌঁছবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
সাবেক কূটনৈতিক মি. কোভরিগ ব্রাসেলসভিত্তিক থিংক ট্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের একজন কর্মকর্তা।
মি. স্পাভোর একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা যারা উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আন্তর্জাতিক ব্যবসা এবং সাংস্কৃতিক যোগাযোগের কাজ করে থাকে।
গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে এ বছরের মার্চে মি. স্পাভোরকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল চীনের একটি আদালত। মি. কোভরিগকেও তখন আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তবে তার সাজা এখনো ঘোষণা করা হয়নি। সূত্র : বিবিসি
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন