বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্বিক চিত্র দেখে কষ্ট পেয়েছেন স্বাস্থ্য সচিব। হাসপাতাল চত্ত্বর বেশ অপরিচ্ছন্ন, যত্রতত্র ময়লা আবর্জনার স্তুপ। এছাড়া অবকাঠামোগত অবস্থা দেখেও সন্তুষ্ট হতে পারেননি তিনি। তবে তার মতে হতাশ হবার কারণ নেই। আগামী ৭ দিনের মধ্যে হাসপাতালের ৮০ ভাগ সমস্যার সমাধান হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া। এ জন্য সংশ্লিষ্ট দফতর ও কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
জনবলসহ অন্যান্য সমস্যাগুলো ধাপে ধাপে সমাধান করা হবে বলে জানিয়ে হাসপাতালে কোন ক্ষেত্রেই সমস্যা বা সঙ্কট থাকবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। গতকাল শনিবার বরিশাল সফরের দ্বিতীয় দিনে শিল্পকলা একাডেমি মঞ্চে সমন্বিত কোভিড ব্যবস্থাপনা ‘বরিশাল মডেল’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া।
সচিব বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যোগদান করার পর বাকি ৯ জন অতিরিক্ত সচিব করোনা আক্রান্ত হন। খুব দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। তারপরও হাল ছাড়িনি। সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, রাত ২টা পর্যন্তও অফিস করেছি। চীনের সাথে টিকা চুক্তির কারণে বাবার মৃত্যু পরবর্তী মিলাদ ও চল্লিশায় থাকা সম্ভব হয়নি। তখন ব্যক্তি ও পরিবারের কথা না ভেবে দেশের মানুষের কথা ভেবেছি। কিভাবে এই মহামারী থেকে দেশটাকে রক্ষা করা যায়। আল্লাহর অশেষ রহমত, প্রধানমন্ত্রীর নিরলস প্রচেষ্টা ও দক্ষ নেতৃত্বের কারণে সকলের সহযোগিতায় সফল হতে পেরেছি বলেও জানান সচিব।
তিনি বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে ৫০ ভাগ মানুষকে টিকা দেয়া সম্ভব হবে। এছাড়া বিশ্বের শক্তিশালী দেশের সাথে টিকা পাওয়ার বিষয়ে চুক্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে টিকার কোন অভাব থাকবে না। স্বাস্থ্য সচিব বলেন, দেশের সব হাসপাতালে ১০ বেডের আইসিইউ করা হবে। এ জন্য সকল কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে অনেক পুরানো হাসপাতাল ভবন রয়েছে তা ভেঙে নতুন ভবন করা এবং চিকিৎসকসহ সকল জনবল ও চিকিৎসা সামগ্রী প্রদান করা হবে।
তিনি চিকিৎসক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, হাসপাতাল তথা কর্মস্থলকে নিজ বাসভবন মনে করতে হবে। নিজের বেডরুম যেমন প্রতিদিন পরিস্কার করেন। তেমনি হাসপাতালটিকেও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আপনাদের আন্তরিকতা ও দায়িত্ববোধ দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার চিত্রপট পাল্টে দিতে পারে বলেও উল্লেখ করেন স্বাস্থ্য সচিব।
বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল হাসান বাদলের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বশির আহমেদ, ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান, বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের পরিচালক আব্দুস সালাম, ইউনিসেফের হেলথ সেকশনের চীফ সান জানা ভার্দওয়াজ প্রমুখ। এছাড়াও বরিশাল বিভাগের সব জেলা প্রশাসক, ইউএনও, হাসপাতাল প্রধান ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন