আজ বিশ্ব পর্যটন দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হবে। পর্যটনের ভূমিকা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক উপযোগিতাকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া এ দিবসের লক্ষ্য। জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থার (ইউএনডব্লিউটিও) উদ্যোগে ১৯৮০ সাল থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর দিবসটি পালন করা হয়।
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির জন্য পর্যটন’। প্রতিবছরের মতো এবারও বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডসহ বিভিন্ন পর্যটন সংস্থা দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। দিবসটি উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ এক বাণীতে স্থানীয় কৃষ্টি, ঐতিহ্য ও মূল্যবোধকে সমুন্নত রেখে পর্যটনের উন্নয়নের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে পর্যটন সংশ্লিষ্ট সবাইকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান।
প্রেসিডেন্ট বলেন, বাংলাদেশের বৈচিত্রময় পর্যটন আকর্ষণসমূহকে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নিকট তুলে ধরার প্রয়াসে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে যেতে হবে। বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশের সম্ভাবনা খুবই উজ্জ্বল। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের পাশাপাশি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতে হবে। একই সাথে বিশ্ব দরবারে দেশের পর্যটন শিল্পকে কার্যকরভাবে তুলে ধরতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, পর্যটন শিল্প বর্তমান বিশ্বে শ্রমঘন এবং সর্ববৃহৎ শিল্প হিসেবে স্বীকৃত। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে দারিদ্র্য দূরীকরণ ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়নসহ দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য পর্যটনের গুরুত্ব অবশ্যম্ভাবী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে পর্যটনের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থনৈতিক বিকাশের ক্ষেত্রে এই শিল্প একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। আবহমান গ্রাম বাংলার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রেখে যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দায়িত্বশীল পর্যটন কার্যক্রম পরিচালনা করতে এবং এর সুফল যাতে স্থানীয় জনগোষ্ঠী ভোগ করতে পারে সে লক্ষ্যে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
দিবসটি উপলক্ষে গতকাল বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় একটি প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে যেখানে প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলি পর্যটন দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রম পরিকল্পনার বিবরণ তুলে ধরেন।
প্রতিমন্ত্রী জানান, আজ বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পর্যটন ভবনে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের আয়োজনে আলোচনা অনুষ্ঠান ও বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের আয়োজনে কুকিং শো অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে একটি ঘোড়ার গাড়ির র্যালি পর্যটন ভবনের সামনে থেকে যাত্রা শুরু করে রাজধানীর বিভিন্ন পর্যটন স্পট পরিভ্রমণ করে পর্যটন বিষয়ক প্রচারণা পরিচালনার পাশাপাশি মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করতে তাদের মাঝে মাস্ক বিতরণ করবে।
এছাড়া, বাদ্যযন্ত্রসহ ২০টি সুসজ্জিত রিকশার একটি র্যালি রাজধানীর গুলশান-বারিধারা কূটনৈতিক এলাকায় বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে প্রচারণা চালাবে। দেশের প্রতিটি জেলায় জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পর্যটন অংশীজনদের নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে এবং শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন থাকবে। এছাড়াও দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে আরো নানা আয়োজনের পাশাপাশি আগামী ২ অক্টোবর নড়াইল জেলায় জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের আয়োজনে নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন