শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ধর্ম মন্ত্রণালয়ে তোলপাড়!

বয়স জালিয়াতি করে বায়তুল মোকাররমে ইমামতি ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০১ এএম

অভিযুক্তদের তদবিরে বার বার থেমে যায় তদন্ত। নতুন কমিটিতে অভিযুক্ত ইমামের আত্মীয়কে অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ উঠেছে। অর্ধযুগ ধরে ধর্ম মন্ত্রণালয় তদন্ত করতে ব্যর্থ হয়ে এখন মাত্র ৩ দিনের মধ্যে ঐ বিষয়ে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশ ইফা মহাপরিচালকের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়ার। আর ধর্ম সচিবের নির্দেশ তার কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়ার। এ নিয়ে খোঁদ ধর্ম মন্ত্রণালয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

বয়স জালিয়াতি করে বায়তুল মোকাররম মসজিদে ইমাম পদে চাকরির বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনে লেজেগোবরে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। অর্ধযুগ ধরে ধর্ম মন্ত্রণালয় যে বিষয়টি তদন্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে মাত্র ৩ দিনের মধ্যে ঐ বিষয়ে তদন্ত রিপোর্ট দিতে ৫ সদস্যের একটি নতুন তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। নতুন তদন্ত কমিটিতে অভিযুক্ত ইমামের একজন নিকট আত্মীয়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে, এনামুল হক নামে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রায় অর্ধযুগ ধরে বিষয়টি তদন্তের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ধর্ম মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ বিভন্নি স্থানে আবেদন করে আসছিলেন। প্রায় দেড় বছর পূর্বে ধর্ম মন্ত্রণালয় বিষয়টি তদন্তের জন্য ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করলেও অভিযুক্তদের তদবিরে তা ধামাচাপা পড়ে যায়। পরবর্তীতে আবেদনকারী ইসলামিক ফাউন্ডেশনে এ বিষয়ে নতুন একটি আবেদন করলে ৩০ মে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কিন্ত অভিযুক্তদের তদবিরে সে তদন্তও থেমে যায়। পরে মুক্তিযোদ্ধা এনামুল হক উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হন। আদালত ১৫ দিনের মধ্যে বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন মহাপরিচালককে নির্দেশনা প্রদান করেন।

এ দিকে আদালতে নির্দেশনার পর ধর্ম মন্ত্রণালয় পৃথক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এতে মন্ত্রণালয়ের নতুন ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। নতুন কমিটিতে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় তাদের পূর্বের ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি থেকে ২ জন এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি থেকে ২ জন নিয়ে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। সেখানে ইসলামিক ফাউন্ডেশন গঠিত পুরনো কমিটির সদস্য সচিবকে বাদ দিয়ে নতুন একজন সদস্য যোগ করা হয় যিনি কোনো কমিটিতে পূর্বে ছিলেন্ না। তার নাম সৈয়দ শাহ এমরান। তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক মহাপরিচালক মরহুম সামীম মো. আফজালের সম্পর্কে ভায়েরা হন। আর সামীম মো. আফজালের আপন ভাগিনা হলেন অভিযুক্ত ইমাম মাওলানা এহসানুল হক জিলানী। অর্থাৎ নতুন সদস্য সৈয়দ শাহ এমরান অভিযুক্ত মাওলানা এহসানৃুল হক-এর নিকটাত্মীয়। এমন আত্মীয়কে কমিটি থেকে বাদ দেয়ার জন্য পত্র দিয়েছেন আবেদনকারী মুক্তিযোদ্ধা এনামুল হক। পত্রে তিনি বলেন, অভিযুক্তের নিকটাত্মীয়কে কমিটিতে রেখে নিরপেক্ষ তদন্ত সম্ভব নয় । তাকে রহস্যজনকভাবে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সৈয়দ শাহ এমরানের নিজের নিয়োগ নিয়ে গুরুতর অডিট আপত্তি রয়েছে এবং ২০১৯ সালে সরকারের বিশেষ নিরীক্ষা ও অডিট অধিদফতরের এক নিরীক্ষা প্রতিবেদনে তার নিয়োগ বাতিলে জন্য বলা হয়।

এ দিকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নতুন ৫ সদস্যের কমিটিকে ধর্ম সচিবের কাছে ৩ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। অপরদিকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গঠিত ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটিকে সংস্থাটির মহাপরিচালকের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে আদালতের নির্দেশনা রয়েছে। তাই পুরো পরিস্থিতি নিয়ে ধর্মমন্ত্রণালয় এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনে লেজেগোবরে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন