বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

কৃত্রিম প্রজনন ফিরছে আরও তিন প্রজাতির দেশি মাছ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

দেশে মিঠা পানির ৬৪ প্রজাতির দেশী মাছ ছিল বিলুপ্তপ্রায়। কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যম বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) বিলুপ্তপ্রায় এসব মাছ আবার ফিরিয়ে আনছে। ইতোমধ্যে বিএফআরআই ৩১ প্রজাতির মাছের সফল প্রজনন সম্পন্ন করেছে। আরও তিন প্রজাতির ছোট দেশি মাছ কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে এবার উৎপাদন করা হচ্ছে। এ তিন প্রজাতির মাছগুলো হচ্ছে, কুর্শা, লইট্যা ট্যাংরা ও বটিয়া পুইয়া।

গতকাল বিএফআরআই’র গবেষকদের সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। সূত্র মতে, নতুন করে কাজুলি, হিরালু, দেশি শোল, বাছা মাছ নিয়ে চলছে গবেষণা। আগামী বছরের জুন-জুলাইয়ে এসব মাছের চাষ পদ্ধতি উদ্ভাবন সম্ভব হবে বলে বিএফআরআই’র আশা। পাবদা, গুলশা টেংরা, গুজি আইড়, চিতল, ফলি, মহাশোল, বৈরালী, বালাচাটা, গুতুম, কুচিয়া, ভাগনা, খলিশা, গজার, রানি, বাতাসি, পিয়ালিসহ ৩১ প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় মাছ চাষের পদ্ধতি উদ্ভাবন করে মৎস্যচাষিদের হাতে তুলে দিয়েছেন বিএফআরআই’র গবেষকরা।

উদ্ভাবিত এসব মাছে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, লৌহ ও আয়োডিনের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ। এসব উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করে তোলে। পাশাপাশি রক্তশ‚ন্যতা, গলগÐ, অন্ধত্ব প্রভৃতি রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জলাশয় সংকোচন, অতি আহরণসহ নানাবিধ কারণে মাছের প্রজনন ও বিচরণক্ষেত্র বিনষ্ট হওয়ায় প্রাকৃতিক জলাশয়ে ছোট মাছের প্রাপ্যতা ক্রমে কমছে।

বিএফআরআই সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০০৯ সালে পুকুরে দেশি ছোট মাছের মোট উৎপাদন ছিল ৬৭ হাজার ৩৪০ মেট্রিক টন যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আড়াই লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়। অর্থাৎ গত ১০ বছরে দেশীয় ছোট মাছের উৎপাদন বেড়েছে ৪ গুণ। মৎস্য উৎপাদনে দেশি ছোট মাছের অবদান ৩০-৩৫ শতাংশ। চাষাবাদ বাড়ায় বর্তমানে হ্যাচারিতে দেশি মাছের পোনা ব্যাপকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে। পোনা প্রাপ্তি সহজতর হওয়ায় মাঠ পর্যায়ে পাবদা, গুলশা, শিং, টেংরা, মাগুর ও কৈ মাছ চাষ হচ্ছে ব্যাপক পরিসরে।
এ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, বিলুপ্তপ্রায় দেশি প্রজাতির মাছের চাষপ্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণে সরকার কাজ করছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে ৩১ প্রজাতির দেশি বিলুপ্তপ্রায় মাছের প্রজনন কৌশল ও চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন। আরও বেশ কিছু প্রজাতির দেশি মাছের প্রজনন কৌশল উদ্ভাবন নিয়ে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা চলমান।

তিনি বলেন, দেশি মাছ সংরক্ষণে প্রথমবারের মতো ময়মনসিংহে ‘লাইভ জিন’ ব্যাংক স্থাপন করা হয়েছে। ময়মনসিংহে অবস্থিত এই জিন ব্যাংকে ইতোমধ্যে ৮৮ প্রজাতির মাছের জিন সংরক্ষণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশি সব মাছ এ ব্যাংকে সংরক্ষণ করা হবে। সরকারের উদ্যোগের ফলে বাজারে এখন বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ পাওয়া যাচ্ছে। আবার বাঙালির পাতে ফিরে আসছে নানা স্বাদের দেশি মাছ।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
MD Ibrahim MD Ibrahim ১ অক্টোবর, ২০২১, ৬:১৭ এএম says : 0
বাংলাদেশের নদী গুলো বাঁচান প্রজজন এমনি ভারবে দেশে।
Total Reply(0)
Sheikh Shohel ১ অক্টোবর, ২০২১, ৬:১৭ এএম says : 0
দেশি মাছের স্বাদই অন্য রকম
Total Reply(0)
Kamal Pasha Jafree ১ অক্টোবর, ২০২১, ৬:১৮ এএম says : 0
কলকারখানার বর্জ্য, কীটনাশক এবং অবৈধভাবে খাল ভরাটের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে ছোট প্রজাতির দেশীয় মাছ।
Total Reply(0)
Abdus Salam ১ অক্টোবর, ২০২১, ৬:২০ এএম says : 0
এলাকা ভিত্তিক খাস পুকুর গুলোর মধ্যে যদি দুই একটি পুকুর সারা বছর মাছ নিধন বদ্ধ. রাখা যায় তাহলে বিলুপ্ত জাতের মাছ গুলো আবার ফিরে আসবে
Total Reply(0)
Romjhan Ali Ripon ১ অক্টোবর, ২০২১, ৬:২০ এএম says : 0
এই মাছ খেতে অনেক মজা ।
Total Reply(0)
Kawsar Khairul Alam ১ অক্টোবর, ২০২১, ৬:২১ এএম says : 0
১৯৬৯-৭০ সালের কথা। বর্ষা কালে মাঠ থেকে পুকুরে ঢুকার সময় ধরা পড়তো অনেক, এর স্বাদ ও গন্ধ ভুলবার নয়।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন