শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান না দিলে অর্থ ফেরত চান এরদোগান

রাশিয়ার সাথে সাবমেরিন ও ফাইটার জেট নিয়ে কাজ হবে, এরদোগানের সহায়তা চায় ইউক্রেন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০১ এএম

সম্প্রতি রাশিয়া সফর করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যিপ এরদোগান। সেখানে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন। রাশিয়া সফরে গিয়ে এরদোগান এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের জন্য পরিশোধকৃত টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানান। নিউজউইক জানায়, রাশিয়ার সোচি থেকে ফেরার পথে এরদোগান সিরিয়ায় কুর্দি মিলিশিয়াদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রতার জন্য হোয়াইট হাউসের মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকা বিষয়ক সমন্বয়ক ব্রেট ম্যাকগার্কের তীব্র সমালোচনা করেন। কুর্দি মিলিশিয়াদের তুরস্ক জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করে। এদিকে এরদোগান রাশিয়া থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এস-৪০০ কিনেছেন। ফলে তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। একই সঙ্গে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান প্রকল্প থেকে তুরস্ককে বাদ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এতে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের জন্য ১.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিশোধ করেছি। এর কি হবে? আমরা খুব সহজে এ অর্থ আয় করিনি। হয় তারা আমাদের যুদ্ধবিমান দেবে, না হয় অর্থ ফেরত দেবে। সিরিয়ায় কুর্দিদের যুক্তরাষ্ট্রের মদদ দেওয়া, রাশিয়া থেকে তুরস্কের এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ক্রয় ও এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান প্রকল্প থেকে তুরস্ককে বাদ দেওয়া নিয়ে দুই দেশের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর আগে খবরে বলা হয়, রাশিয়ার সাথে যৌথভাবে প্রতিরক্ষা শিল্পে কাজ করতে আগ্রহী তুরস্ক। দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোগান বলেছেন, বিশেষ করে আমরা সাবমেরিন ও ফাইটার জেট নিয়ে কাজ করতে চাই। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে বৈঠক শেষে তুরস্ক ফেরার পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। জানা গেছে, তুরস্কে আরো ২টি পারমানবিক বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণের জন্য রাশিয়াকে প্রস্তাব দিয়েছেন এরদোয়ান। এর প্রেক্ষিতে পুতিন উভয় দেশের যৌথ উদ্যোগে মহাকাশ প্রযুক্তিতে কাজ করার কথা জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র চাপ সত্তে¡ও রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দ্বিতীয় ব্যাচ কেনারও অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন এরদোগান। সাংবাদিকদের সাথে পৃথকভাবে আলাপকালে পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ-ও দুই দেশের মধ্যে আরও সহযোগিতার কথা বলেন। তিনি বলেন, দুই নেতা সামরিক-প্রযুক্তিগত সহযোগিতার সম্ভাব্য ধারাবাহিকতা এবং এস-৪০০ ও অন্যান্য বিষয়ে বিশদ আলোচনা করেছেন। এ প্রক্রিয়া থেকে পেছানোর প্রশ্নই উঠে না। রয়টার্স। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা বলেছেন, রাশিয়ার হাতে বন্দি ইউক্রেনের নাগরিকদের ছাড়াতে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যিপ এরদোগানের সহায়তা চেয়েছেন। বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। খবর ডেইলি সাবাহর। দিমিত্র কুলেবা বলেন, জাতিসংঘের অধিবেশনে অংশ নেওয়ার পর নিউইয়র্কে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগানের সাথে বৈঠক করেছেন। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বৈঠকে জেলেনস্কি এরদোগানের হাতে একটি তালিকা দেন। সেখানে ইউক্রেনের ৪৫০ জন বন্দির নাম রয়েছে। তালিকায় নাম রয়েছে ক্রিমিয়ান তাতার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির উপপ্রধান নরিম্যান ডিজেলিয়ালের। ক্রিমিয়ায় তাতারদের ওপর চালানো রাশিয়ার দমন অভিযানের বিষয়ে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত মাসে বলেছিলেন, রাশিয়ার বাহিনী কর্তৃক ক্রিমিয়ান তাতার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির উপপ্রধানকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিয়ে আঙ্কারা ‘উদ্বেগের’ সাথে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল করে নেয় রাশিয়া। এরপর থেকেই ইউক্রেনের সাথে রাশিয়ার সামরিক উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। এ ক্রিমিয়ার একটি জাতিগত সম্প্রদায় তাতার। তারা মুসলিম। তাতার সম্প্রদায়ের অধিকাংশ মানুষ রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখলকে বৈধতা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে। রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ তখন থেকে এ সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন শুরু করেছে। তাদের সমাবেশ ও টেলিভিশন চ্যানেল নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি বহু অধিকারকর্মীকে আটক করেছে। নিউজউইক, রয়টার্স, ডেইলি সাবাহ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন