শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সার্চ কমিটি একটি ধোঁকা দেয়ার প্রক্রিয়া

নির্বাচন কমিশন নিয়োগে প্রস্তাবিত আইনের প্রাথমিক খসড়া উপস্থাপন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০১ এএম

নির্বাচন কমিশন গঠনে ‘সার্চ কমিটি’ একটি ধোঁকা দেওয়ার প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে অযোগ্যদের নির্বাচন কমিশনার হিসেবে খুঁজে বের করা হয়। যার ফলে গত দুটি নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি আইন প্রয়োজন। কিন্তু শুধু একটি ভালো নির্বাচন কমিশন হলেই সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। এ জন্য নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থায়ও পরিবর্তন প্রয়োজন।
গতকাল ‘নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেছেন। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ওই ভার্চুয়ালি গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে। তাতে সুজনের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশন নিয়োগে প্রস্তাবিত আইনের প্রাথমিক একটি খসড়া তুলে ধরা হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতামত নিয়ে একটি চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করা হবে। এরপর সেটি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কাছে উপস্থাপন করা হবে বলে সুজন জানিয়েছে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রবীণ আইনজীবী আমিরুল ইসলাম বলেন, সংবিধানের প্রতি সম্মান রেখেই কাজ করতে হবে। নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন করার ক্ষেত্রে সংবিধানের মধ্যে থেকে কী কী করা যায় সেটি ভাবতে হবে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, প্রয়োজনে সংবিধান সব সময় বদলানো যায়। নির্বাচনকালীন তিন মাসের জন্য আসা একটি সরকার তেমন কোনও পরিবর্তন আনতে পারবে না। এজন্য দরকার একটি জাতীয় সরকার।
সুজনের সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। কোনও নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না। দুটো সার্চ কমিটির পারফরম্যান্স মানুষ দেখেছে। সন্তুষ্ট হওয়ার মতো নয়। বর্তমান কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয় না। নির্বাচন কমিশন নিয়ে একটি আইন করার জন্য জোরেশোরে আন্দোলন করা প্রয়োজন।
সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সংবিধান মানতে হলে নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি আইন করতে হবে। তবে এটিই যথেষ্ট নয়। আইনটাকে হতে হবে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে, জনগণের স্বার্থে। তিনি বলেন, যে প্রক্রিয়ায় সার্চ কমিটি হয় তা দল নিরপেক্ষ মানুষ দিয়ে হয় না। এটা একটা ধোঁকা, আইওয়াশ মাত্র।
আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, সার্চ কমিটি করার এখতিয়ার প্রেসিডেন্টের নেই। সরকারের ইচ্ছাতেই করা হচ্ছে। কারা সদস্য হবেন সেটাও সরকারের ইচ্ছায় নির্ধারিত। তাই এতে ভালো কিছু পাওয়া সম্ভব নয়।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, তারা যখন নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে ছিলেন তখন ২০১১ সালে নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইনের একটি খসড়া আইন মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে এটি নিয়ে আর কোনও আলোচনা হয়নি। বড় কোনও দলকে এই আইন প্রণয়ন নিয়ে আলোচনা করতেও দেখা যায় না। বর্তমান কমিশনের মেয়াদ আছে আর চার মাস। সময় খুব বেশি নেই অবশ্য আইন তৈরি করতে চাইলে এই সময়ের মধ্যে তা সম্ভব।
সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা দরকার। নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থায় ঝাঁকুনি দিতে না পারলে কোনো কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না। এককেন্দ্রিক সরকার যেভাবে চায় সেভাবে নির্বাচন হবে। নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা দরকার। না হলে অতীতে যেভাবে নির্বাচন হয়েছে, সামনেও সেটাই হবে। তিনি বলেন, অতীতের সার্চ কমিটিতে যারা ছিলেন, তারা যোগ্য ছিলেন। প্রকৃতপক্ষে সরকার যাদের চায়, সার্চ কমিটির সুপারিশে তাদের নামই আসে।
সাবেক বিচারপতি আবদুল মতিন বলেন সার্চ কমিটি বিতর্কিত হয়েছে। কমিটিতে যে নামগুলো আসে এর বাইরে যাওয়া যায় না।
অন্যদের মধ্যে বিশিষ্ট আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত, রুহিন হোসেন প্রিন্স, ব্রতীর নির্বাহী পরিচালক শারমিন মুরশিদ প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
মোহাম্মদ দলিলুর রহমান ৫ অক্টোবর, ২০২১, ৪:১২ এএম says : 0
রাষ্ট্রপতি একটি দলের রাষ্ট্র পতি দলীয় রাষ্ট্র পতি কি করে নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। রাষ্ট্রপতির সে ক্ষমতা নেই,এই অবৈধ সরকার কাউকে দাম দিতেছে না,জনগণ কে ও দাম দিতেছে না,গায়ের জোরে সব কিছু করতেছে,রাষ্ট্রপতি কে জনগণের অধিকার নিয়ে কথা বলার,সে একটি দলের রাষ্ট্র পতি দলীয় রাষ্ট্র পতি।
Total Reply(0)
Shaikh Muntasir ৫ অক্টোবর, ২০২১, ৮:৪৭ এএম says : 0
শেখ হাসিনার সরকার, বারবার দরকার!
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন